কত রকম শাক আমরা দেখতে পাই? কোন শাকের কী উপকারিতা?

 how many types of creeper spinach cress and benefits kon shake ki pushti aache jene nin



কোন শাকে কি পুষ্টি (Nutrients) আছে জেনে নিন 

শাক বা পাতা সবজি হল এক ধরনের উদ্ভিদ যার পাতা সবজি (leaf vegetable) হিসাবে খাওয়া হয়। পাতা ছাড়াও মাঝেমধ্যে পাতাবৃন্ত ও কচি কাণ্ড এর অন্তভুর্ক্ত। যদিও বিভিন্ন প্রকারের উদ্ভিদ শাকের আওতায় আসে, অধিকাংশের পুষ্টিগুণ ও রান্নার পদ্ধতি অনুসারে শাকের সাথে ভাগ করা হয়। প্রায় এক হাজার প্রজাতির উদ্ভিদের পাতা খাওয়ার উপযোগী হিসাবে জানা যায়। শাক অধিকাংশ সময় লতাপাতা বা গুল্মজাতীয় ও ক্ষণস্থায়ী উদ্ভিদ হয়ে থাকে। সুস্থ থাকতে চাইলে নিয়মিত শাক খাওয়ার বিকল্প নেই। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোগ থেকে দূর করে শাক। জেনে নিন কোন শাকের কী উপকারিতা . 


ভাজা হোক কী ঘণ্ট...এককালে প্রথমপাতে শাক ছাড়া বাঙালির মুখে ভাত রুচত না! কিন্তু এখন সে পাট প্রায় চুকেছে! কোনওমতে একপদে খেয়ে অফিস ছুট! অধিকাংশই তো বেঁচে রয়েছেন পিৎজা, পাস্তায়! কিন্তু শাককে অবজ্ঞা করবেন না! সারাবছর নিয়ম করে শাক খেলে, কোনও রোগ ধারে কাছে ঘেঁষবে না!

আমাদের দেশে কত প্রকারের শাক আছে তা আমি নিজেও জানি না। তবে বহুল প্রচলিত কিছু শাকের ছবি ও উপকারিতা তুলে ধরছি। চলুন শুরু করি—

১) পালংশাক

Spinach benefits palong shak saag sag

ছোটকালে পপাই দেখেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। পপাই স্পিনাচ খাওয়া মাত্রই সুপার পাওয়ারে পরিণত হত। বাস্তবেও এই শাকটিতে কী নেই বলুন! পালং শাকে রয়েছে মিনারেল, ভিটামিন, ফাইটো নিউট্রিয়েন্টস থেকে শুরু করে পিগমেন্টস। তাই পালংশাককে একরকম 'সুপার ফুড' বলা যায়। ত্বকের সুরক্ষা বিভিন্ন ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট্স ও পিগমেন্টের উপস্থিতি ত্বককে ক্ষতিকর ইউভি রশ্মির হাত থেকে সুরক্ষা দেয় এবং ত্বকের ক্যানসারের প্রতিরোধ হিসেবেও কাজ করে। 

জাপানের গবেষকদের দাবি, পালংশাকের ফ্ল্যাভনয়েড নারীদের শরীরে ওষুধের কাজ করে। নিয়মিত পালংশাক খেলে গর্ভাশয়ে ক্যানসারের আশঙ্কা প্রায় ৪০ শতাংশ কমে যায়। এ ছাড়া পালংশাকে থাকা ক্যারটিনয়েড, নিওজ্যানথিন প্রস্টেট ক্যানসারের কোষকে মেরে ফেলতে সক্ষম।

পালংশাকে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, যা চোখের ভেতর ও বাইরের অংশে পুষ্টি জোগায়। এটি অকাল অন্ধত্ব থেকে চোখকে রক্ষা করে। এতে প্রচুর পরিমাণ আয়রনও আছে। এই শাক মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস থেকে শরীরকে রক্ষা করে। এমনকি গর্ভস্থ শিশুর মেধা বিকাশেও পালংশাকের গুরুত্ব অপরিসীম।

চলুন দেখে নেয়া যাক পালংশাক গুণাগুণ

দৃষ্টিশক্তি (Eye Sight)

পালংশাকে আছে বিটা ক্যারোটিন, লিউটেনিন ও জ্যানথিন। ভিটামিন এ এর ডেফিসিয়েন্সি কমায় পালংশাক। চোখের শুষ্কতা দূর করতে, চোখের আলসার সারাতে দারুণ কাজ করে পালংশাক। চোখের ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে।
 
ব্লাড প্রেশার (Blood Pressure)
ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা নেয় পালংশাক। উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম ও অত্যন্ত সামান্য পরিমাণ সোডিয়াম আছে পালংশাকে। এ ছাড়া উপস্থিত ফোলেট হাইপারটেনশন কমায় ও রক্ত জালিকাকে রিল্যাক্স করে। 

ক্যানসার প্রতিরোধী  (Prevent Cancer)
পালংশাকে আছে টোকোফেরল, ফোলেট ও ক্লোরোফাইলিন ক্যানসার প্রতিরোধে ও রোগীর চিকিৎসায় অত্যন্ত কার্যকরী। ব্লাডার, প্রস্টেট, লিভার ও ফুসফুসের ক্যানসারের প্রতিরোধে ও চিকিৎসায় পালং শাক-এর ভূমিকা প্রমাণিত।

ত্বকের সুরক্ষা (Skin Protection)
বিভিন্ন ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট্স ও পিগমেন্টের উপস্থিতি ত্বককে ক্ষতিকর অতি বেগুণি রশ্মির হাত থেকে সুরক্ষা দেয় এবং ত্বকের ক্যানসারের প্রতিরোধ হিসেবেও কাজ করে পালংশাক।

ডায়াবেটিস (Diabetes)

পালংশাক এ থাকা আলফা লিপোয়িক অ্যাসিড নামের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে ও শরীরে ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ায়।

অ্যাজমা প্রতিরোধ (Asthma Preventive)
পালংশাকে এমন কিছু পুষ্টিকর পদার্থ আছে যা অ্যাজমা প্রতিরোধে সাহায্য করে। তার মধ্যে একটি হলো বিটা ক্যারোটিন।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর (Constipation Preventive)
ফাইবার এবং প্রচুর পরিমাণে জল আছে পালংশাকে। ফলে পালংশাক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং ডাইজেস্টিভ ট্র্যাক-কে সুস্থ রাখে। (Spinach has fiber and plenty of water. As a result, spinach helps in relieving constipation and keeps the digestive tract healthy.)

হাড়ের গঠন (Stronger Bone)
পালংশাক-এ ভালো পরিমাণে ভিটামিন কে থাকে। মজবুত হাড়ের গঠনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান ভিটামিন কে। যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন কে আমাদের খাদ্য তালিকায় থাকলে তা ক্যালসিয়াম সংগ্রহে সাহায্য করে ও মূত্রের মাধ্যমে ক্যালসিয়ামের অতিরিক্ত বেরিয়ে যাওয়া আটকায়।

পালংশাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি১ (Vitamin B1), বি২ (Vitamin B2), বি৩ (Vitamin B3), ও বি৬ (Vitamin B6) রয়েছে। এগুলো চুল পড়া রোধ করার পাশাপাশি ত্বকের উজ্জ্বলতাও বৃদ্ধি করে।

ভুলে যাওয়া রোগে ভুগছেন? স্মৃতিশক্তি দুর্বল? পালংশাক খান, সব ঠিক হয়ে যাবে। ধারণা করা হয়, এটি প্রথম আবিষ্কৃত হয় চীনে। অনেকের ধারণা, ৬৪৭ খ্রিস্টাব্দে নেপাল থেকে এই শাক চীনে পাড়ি জমিয়েছে। আবার অনেকে বলেন, এর আদি নিবাস দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায়।

পালংশাকে থাকা ফ্ল্যাভনয়েড অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট (Antioxidants) হিসেবে কাজ করে। যা মস্তিষ্ককে সতেজ রাখে। এটি মস্তিষ্কের বয়স কমানোর পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে মস্তিষ্কের শক্তি অটুট রেখে অনেক বেশি বয়স পর্যন্ত স্নায়ুতন্ত্রকে নির্ভুলভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। এ শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘ই’  (Vitamin E)। দৈনিক গড়ে ৩০ গ্রাম পালংশাক খেলে অ্যালঝাইমার্স রোগ হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।

সতর্কতা (Caution)
পালংশাকে প্রচুর অক্সালেট থাকে। কিডনির পাথরে অক্সালেট পাওয়া গেছে এমন কেউ বেশি পরিমাণে পালংশাক খাবেন না। এতে অক্সালিক অ্যাসিডের পরিমাণও বেশি। বেশি অক্সালিক অ্যাসিড ক্যালসিয়ামের মতো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান শুষে নেয়। হালকা রান্না করলে এই অ্যাসিডের পরিমাণ কমে যায় বলে ধারণা করা হয়।

২) লালশাক-

red spinach lal shak lal note

প্রতি ১০০ গ্রাম লালশাকের পুষ্টিগুণ- ক্যালসিয়াম ৩৭৪ মিলিগ্রাম, শর্করা ৪.৯৬ মিলিগ্রাম, প্রোটিন ৫.৩৪ মিলিগ্রাম (Protine), স্নেহ ০.১৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১ ০.১০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২ ০.১৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৪২.৯০ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ১১.৯৪ মিলিগ্রাম (Carotene), অন্যান্য খনিজ ১.০৬ মিলিগ্রাম, খাদ্যশক্তি ৪৩ কিলোক্যালরি।

আসুন এবার লালশাকের উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণগুলো জেনে নেই :

দাঁত ও হাড় গঠনে সাহায্য করে (keep teeth and bones stronger)

দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে (increase eye sight)

হজম শক্তি বাড়ে  (healthy digestive system)

রক্তশূন্যতা দূর করে (Prevent Anemia)

ক্যান্সারকে দূরে রাখে (reduce cancer risk)

কিডনি সমস্যা দূর করে (Help to keep healthy Kidney)

চুল পড়া কমে (Reduce Hair Fall)

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় (reduce heart attack risk)

এটি রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ায় (Increase Hemoglobin)। ফলে অ্যানিমিক রোগিদের জন্য খুবই উপকারি।

৩) কলমি শাক-

kalmi shak Water spinach

ফোড়া হলে কলমি পাতা আর অল্প আদা বেটে ফোড়ার চারপাশে লাগালে ফোড়া নরম হয়ে, পুঁজ বেরিয়ে শুকিয়ে যায়। পিঁপড়ে, মৌমাছি কিংবা পোকামাকড় কামড়ালে ডগা সহ কলমি শাক বেটে, সেই রস ক্ষতস্থানে লাগালে যন্ত্রণা কমে যায়। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যায় কলমি শাকের সঙ্গে আখের গুড় মিশিয়ে শরবত বানিয়ে সকাল-বিকাল এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাওয়া যায়। আমাশয় হলেও এই শরবত খেতে পারেন। গর্ভাবস্থায় মহিলাদের শরীরে জলের পরিমাণ বেড়ে যায়। সেই সময়ে কলমি শাক বেশি করে রসুন দিয়ে ভেজে তিন সপ্তাহ খেলে জলের পরিমাণ কমে যায়। প্রসূতি মায়েদের শিশুরা যদি মায়ের দুধ কম পায় তাহলে কলমি শাক ছোট মাছ দিয়ে রান্না করে খেলে মায়ের দুধ বাড়ে।



৪) পুঁইশাক-

pui spinach pui shak Malabar spinach

পুষ্টিগুণ (Nutrition):- পুঁইশাকে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন 'বি`, 'সি` ও 'এ` (Vitamin  B, C, A) পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং আয়রণ আছে। নানা ধরনের ভিটামিন সমৃদ্ধ এই শাকটি একদিকে যেমন বহুবিধ রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে, অন্যদিকে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

আসুন এবার জেনে নিই পুঁই শাকের উপকারিতা সম্পর্কে....

১) প্রবাদে আছে-শাকের মধ্যে পুঁই, মাছের মধ্যে রুই। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এর রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ।

২) পুঁইশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, দেহের বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে বাইরে যেতে সাহায্য করে।

৩) পুঁইশাকে বিদ্যমান ভিটামিন এ এবং সি (vitamin A and C), যা ত্বকের রোগজীবাণু (skin pathogens) দূর করে, শারীরিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখে সেই সাথে চুলকেও মজবুত রাখে।

৪) নিয়মিত পুঁইশাক খেলে পাইলস (Piles), ফিস্টুলা (Fistula) ও হেমোরয়েড (haemorrhoids) হওয়ার সম্ভাবনা থাকে খুবই কম।

৫) পুঁইশাকে প্রচুর পরিমাণ আঁশ বা ফাইবার থাকে যা পাকস্থলী (Stomach) ও কোলন ক্যানসার (colorectal cancer) প্রতিরোধ করে।

৬) যারা ব্রণের  (Acne / pimple)সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য পুঁইশাক খুব ভালো।

৭) পুষ্টিগুণ বেশি থাকায় এই শাক রোগ প্রতিরোধে (immunity boosting) বেশ কাজ করে থাকে।

৮) পুঁইশাক দেহ থেকে সঠিক ভাবে বর্জ্য নিষ্কাশন করে বদহজম, গ্যাস, অ্যাসিডিটি সহ নানা সমস্যা দূর করে। (detoxify body - detox body - eliminates various problems including indigestion, gas, acidity)

৯) পুঁইশাকের আছে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণ। শরীরের কোনো অংশ আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ফুলে গেলে পুঁইশাকের শিকড় বেটে লাগালে দ্রুত উপশম হয়।

১০) শরীরে খোসপাঁচড়া কিংবা ফোড়ার মতো অনাবশ্যক সংক্রমণের বিরুদ্ধেও লড়তে পারদর্শী পুঁইশাক।

তাছাড়াও হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পুঁইশাক এর জুড়ি নেই। যাদের প্রায় প্রতিদিনই মাথাব্যথা থাকে, নিয়মিত পুঁইশাক খেলে তারা উপকার পাবেন খুব দ্রুত। তাই পরিবারের সবার স্বাস্থ্য সচেতনতায় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পুঁইশাক রাখুন।

পুর ভরা পুঁই পাতার বড়া রেসিপি - খুলুন  নুতন ট্যাব এ


৫) সর্ষে শাক -

sorisa shak mustard greens

সর্ষে তেলের মতোই, সরিষা শাক ভিটামিন ও মিনারেলের একটি সমৃদ্ধ উৎস। ভিটামিন এ (vitamin A), সি ও কে (vitamin C and K) সৃমদ্ধ পরিপূর্ণ সরিষা শাক শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এতে আছে শক্তিশালী এন্টি অক্সিডেন্ট যা নানা রকম ভাইরাল অসুখ থেকে আপনাকে সুরক্ষা দেয়। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে, ভিটামিন কে হাড়ের সুরক্ষা করে এবং মস্তিষ্ককে রাখে দারুণ সচল।

সরিষা শাকে আছে আয়রন (Iron), ম্যাঙ্গানিজ (Manganese), ক্যালসিয়াম (Calcium), জিঙ্ক (Zinc), পটাশিয়াম (Potassium), সেলেনিয়াম (Selenium), ম্যাগনেশিয়াম (Magnesium), প্রোটিন ও ফাইবার (Protein and Fiber)। যা আপনার হার্ট ভালো রাখে, রক্তের কোলস্টেরল কমায় এবং গর্ভবতী মায়েদের সুস্থ শিশু জন্মদানের সম্ভাবনা বাড়ায়।

এন্টিঅক্সিডেন্ট এর সব চেয়ে বড় গুণ হলো, এটি ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে বাধা দেয়। মাসসিক চাপ কমানো ও নানা ধরনের ক্যান্সার দূরে রাখতে সাহায্য করার পাশাপাশি এ শাক শরীরে জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। শারিরীক দুর্বলতা, রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে সরিষা শাক। এটি শরীরে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা কমিয়ে আনে, দেহের তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করে, এবং হজমশক্তি বাড়ায়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরিষা শাক হার্ট এটাক, আর্থ্রাইটিস ও ক্রনিক রোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনে। এতে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতেও কার্যকর সরিষা শাক। ত্বক, চুল, ওজন ও স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এই সাহায্য করে শাক।

মেথি শাক -

methi shak

শীতকাল আসতেই সবজি বাজারে টাটকা পালং শাক, রাই সরষে, ছোলা শাক ও মেথি শাকের মত নানা উপকারী সবুজ শাক সবজি দেখতে পাই। এই সমস্ত শাক সবজি আমাদের নানা রোগ ব্যধি থেকে দূরে রাখে আর সবুজ মেথি শাকের তো তুলনাই হয় না। আপনি মেথি শাক সবজি হিসেবে তো খেতেই পারেন আবার পরোটা বা মেথি শাকের লুচি বানিয়েও খাওয়া যায়। আসুন জেনে নিই মেথি শাকের নানা উপকারিতা - মেথি শাকে উপস্থিত পুষ্টিকর উপাদান - মেথি শাকে নানা পুষ্টিকর উপাদান প্রচুর পরিমাণে রয়েছে যেমন - ক্যালসিয়াম (Ca), আয়রন(Fe) , ম্যাগনেশিয়াম (Mg), ভিটামিন C ও ভিটামিন B6। রক্তে কোলেস্টেরলের (Bad cholesterol) মাত্রা কমিয়ে রক্তচাপ (BP Blood Pressure) কম করে - নিয়মিত মেথি শাক খেলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের (Bad Cholesterol LDLlow-density lipoproteins)  মাত্রা কমে ও  ভালো  কোলেস্টেরল মাত্রা বাড়ায়  (Good Cholesterol HDL high-density lipoproteins) । এর মধ্যে লিপোপ্রোটিন নামের যৌগ শরীরে কোলেস্টেরলে কম করতে সহায়তা করে। শরীরের ব্যাথা বেদনা কম করে - মেথি শাক শরীরের ব্যাথা বেদনা দূর করতে সহায়তা করে। নিয়মিত মেথি শাক খেলে বাতের ব্যাথা কম হয়। হজমশক্তি বাড়ায় - মেথি শাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার বেশী থাকায় এটি শরীরর থেকে দূষিত পদার্থের নির্গমনে ও পাচন তন্ত্রকে ভালো রাখতে সহায়তা করে (High in antioxidants and fiber, it helps in flushing out toxins from the body and keeping the digestive system healthy)।

হৃদয়কে সুস্থ্য রাখে। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ - মেথি শাক নিয়মিত খেলে শরীরে ইনসুলের মাত্রা বৃদ্ধি পায় ফলে ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে। মেথি শাক শরীরের গ্লুকোজ মেটাবলিজমকে নিয়ন্ত্রণে রাখ। তাই ভেষজ চিকিত্‍সায় একে "অ্যান্টি-ডায়াবেটিক এলিমেন্ট" (anti-diabetic elements) হিসেবে গণ্য করা হয়।


৭) সজনে পাতা / সজনে  শাক -

sajana shak pata data sojina sak Moringa oleifera

সজনে (বৈজ্ঞানিক নাম: Moringa oleifera) হচ্ছে Moringaceae পরিবারের Moringa গণের একটি বৃক্ষ জাতীয় গাছ। সজনের কাঁচা লম্বা ফল সবজি হিসেবে খাওয়া হয়, পাতা খাওয়া হয় শাক হিসেবে। খরা সহিষ্ণু ও গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের একটি উদ্ভিদ। ডাল ও বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার করলেও আমাদের দেশে সাধারণত ডালের মাধ্যমে বা অঙ্গজ জননের মাধ্যমে বংশবিস্তার করানো হয়। গ্রীষ্মকাল বিশেষত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি থেকে শেষ পর্যন্ত ডাল রোপণের উপযুক্ত সময়।  সজিনা গাছের পাতাকে বলা হয় অলৌকিক পাতা। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুষ্টিকর হার্ব। গবেষকরা সজিনা পাতাকে বলে থাকেন নিউট্রিশন্স সুপার ফুড এবং এই  গাছের  পাতা  ফুল  সজিনা ডাটা সবকিছুই পুষ্টিগুণ এ ভরপুর তাই  সজিনা গাছকে বলা হয় মিরাক্কেল ট্রি।

এটির শাক হিসেবে ব্যবহৃত পাতা ভিটামিন এ এর এক বিশাল উৎস। সজনের পাতা এবং ফল উভয়ের মধ্যেই বিপুল পরিমাণে পুষ্টি আছে। এতসব পুষ্টিগুণ একসাথে আছে বলেই এর মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং জীবন ধারনের পুষ্টি দুটোই পাওয়া যায়।

স্বাস্থ্য উপকারিতা (Health and Benefits)

০১। প্রতি গ্রাম সজনে পাতায় একটি কমলার চেয়ে সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি, দুধের চেয়ে চার গুণ বেশি ক্যালসিয়াম ও দুই গুণ বেশি প্রোটিন, গাজরের চেয়ে চার গুণ বেশি ভিটামিন এ এবং কলার চেয়ে তিন গুণ বেশি পটাশিয়াম বিদ্যমান। ফলে এটি অন্ধত্ব, রক্তস্বল্পতা সহ বিভিন্ন ভিটামিন ঘাটতি জনিত রোগের বিরুদ্ধে বিশেষ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে।

০২। এতে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে এবং পালংশাকের চেয়ে তিন গুণ বেশি আয়রণ বিদ্যমান, যা এ্যানেমিয়া দূরীকরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

০৩। সজনে শরীরে কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও (Control Cholesterol) অন্যতম অবদান রাখে।

০৪। মানুষের শরীরের প্রায় ২০% প্রোটিন যার গাঠনিক একক হলো এমাইনো এসিড। শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মেটাবোলিজম এবং অন্যান্য শারীরবৃত্ত্বীয় কার্যাবলী পরিপূর্ণরূপে সম্পাদনে এমাইনো এসিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মানুষের শরীরের যে ৯ টি এমাইনো এসিড খাদ্যের মাধ্যমে সরবরাহ করতে হয়, তার সবগুলোই এই মরিঙ্গার মধ্যে বিদ্যমান।  

০৫। এটি শরীরে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের মত কঠিন রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে (By reducing blood sugar level keep diabetes in control)।

০৬। নিয়মিত দৈনিক সেবন শরীরের ডিফেন্স মেকানিজমকে আরো শক্তিশালী করে এবং ‘ইমিউনিটি স্টিমুল্যান্ট’ হওয়ার দরুন এটি ‘এইডস’ আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

০৭। এটি শরীরের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে পুষ্টিবর্ধক হিসেবে কাজ করে। (Help to build stronger digestive system)

০৮। শরীরের ওজন কমাতেও ব্যায়ামের পাশাপাশি এটি বেশ কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে।

০৯। এটি মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই। পাতা থেকে তৈরি এক টেবিল চামচ পাউডারে ১৪% প্রোটিন, ৪০% ক্যালসিয়াম, ২৩% আয়রণ বিদ্যমান, যা ১ থেকে তিন বছরের শিশুর সুষ্ঠু বিকাশে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় এবং বুকের দুধ খাওয়ানোকালীন সময়ে ৬ টেবিল চামচ পাউডার একজন মায়ের প্রতিদিনের আয়রণ এবং ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে থাকে।

১০। এটির এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এটি যকৃত ও কিডনী সুস্থ্য রাখতে এবং রূপের সৌন্দর্য বর্ধক হিসেবেও কাজ করে থাকে (Keep Liver and Kidney Healthy) 

১১। সজনে-তে প্রায় ৯০টিরও বেশি এবং ৪৬ রকমের এন্টি-অক্সিডেন্ট (Anti-oxidant) বিদ্যমান।

১২। এতে ৩৬ টির মত এন্টি-ইনফ্ল্যামমেটরি বৈশিষ্ট্য আছে। এছাড়াও এটি অকাল বার্ধক্যজনিত সমস্যা দূর করে এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

প্রতিক্রিয়া: ডঃ লয়েল ফিউগিল এর মতে, দৈনিক এই পাতা গ্রহণে কোন ধরনের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া নেই।

অন্যান্য প্রাণীর খাদ্য হিসেবেঃ সজনে পাতা রুমিনেন্ট জাতীয় প্রাণীদের ক্ষেত্রে প্রোটিনের একটি অন্যতম উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হয় যার মাঝারি মানের রুচিকরতা বিদ্যমান। পোল্ট্রি, শূকর, খোরগোশ এবং মাছের জন্য খাদ্য হিসেবে এই পাতা ও বীজের ব্যবহার বেশ কার্যকর। 

সতর্কতা (Caution)

সজনে এর মূল অনেক সময় বিষাক্ত হতে পারে, যা স্নায়ুকে অবশ করে দিতে পারে। তাই খাওয়ার ক্ষেত্রে এটি বর্জন করাই শ্রেয়।এছাড়া এর বীজ মাছ এবং র‌্যাবিট এর জন্যেও বিষাক্ত হতে পারে। তাই সতর্কতা অবলম্বন আবশ্যক।


৮) গিমে শাক  ঢিমা শাক / গিমা শাক / জিমা শাক-

Gima, Jima, Bitter Cumin, Maita, Maitakaduri shak, Indian Chickweed, Kangkong

 (বৈজ্ঞানিক নাম: Glinus oppositifolius) Molluginaceae পরিবারের একটি উদ্ভিদ প্রজাতি। এটির ইংরেজি নামগুলো হচ্ছে Gima, Jima, Bitter Cumin, Maita, Maitakaduri shak, Indian Chickweed, Kangkong ইত্যাদি।

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সাধারনত লোকেরা গিমা শাক রান্না করে খায়। এর শুধু পাতা খাওয়া হয়ে থাকে যা তিতা স্বাদের। তবে  ওষুধ তৈরির কাজে এর কান্ড, পাতা, ফুল সবই লাগে। আফ্রিকায় গিমা শাক সালাদ এবং জুস হিসেবেও খায়

 জনডিস রোগে উপকারী, জ্বর (Fever), লিভারের অসুখ (liver disease), পিত্ত ও কফ রোগ উপশম করে। এই শাক স্বাদে একটু তেতো। খেলে মুখের অরুচি সারে। বেগুন আলু দিয়ে চচ্চড়ি, বেসন বা ডাল বাটা দিয়ে এই শাকের বড়া খেতে ভাল লাগে।

বর্তমানে অনেক আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার হলেও অতীতে স্থানীয় লোকজন তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেষজ গুনসম্পন্ন গিমা শাক ব্যবহার করতো। এই জংলী শাকটি ডায়াবেটিকে উপকারী। হারবাল চিকিৎসার ক্ষেত্রে মূলত রিউমেটিকের ব্যাথা ও সোরিয়াসিস হারবাল ওষুধ তৈরির কাজে এর কান্ড, পাতা, ফুল সবই কাজে লাগে। কোস্টকাঠিন্য, পাকস্থলি ও অন্ত্রের সমস্যা, রক্তপ্রবাহে সমস্যা, অ্যাজমা, ফুসফুস সংক্রান্ত রোগ, ভিটামিন সি এর অভাব জনিত স্কিন ডিজিজ যেমন স্কার্ভি, চুলকানি, মাংসপেশি ও হাড়ের ব্যথার জন্য গিমা শাক খুবই উপকারী। গিমা শাক খেলে অ্যাসিডিটি ও গ্যাসের প্রকোপ কমে। এছাড়া গিমা শাক ওজন কমাতেও খুবই কার্যকরী। দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে গিমা শাক দারুণ উপকারী। অনেক সময় চোখ উঠলে বা চোখ ব্যথা করলে গিমে পাতা দিয়ে সেক দেয়া হয়। আবার গিমা পাতার রস এবং আধা কাপ আমলকী ভেজানো পানি মিশিয়ে খেলে বমি বন্ধ হয়।

৯) ছোলার শাক -

cholar shak

রুচিকর, সহজে হজম হয় না, কফ ও বায়ু বৃদ্ধি করে, মল রোধ করে, পিত্ত ও দাঁতের রোগে উপকারী।

১০) পাট পাতা  / পাট শাক - 

jute spinach jute leaves pat shak

 কৃমি, কুষ্ঠ ও রক্তপিত্ত(নাক, মুখ থেকে রক্ত পড়া) নাশ করে। শুকনো পাতা যাতে নালিতা বা চলতি বাংলা নালতে বলা হয় বায়ু বৃদ্ধি করে কিন্তু জ্বর চর্মরোগ, কফ ও পিত্তের রোগ সারায়।

১১) মুলো শাক -

mulo shak muli shak mooli shak
মুলোর কচি পাতা বা কচি মুলোর শাক লঘুপাক অর্থাত্‍ সহজে হজম হয়। তেলে বা ঘিয়ে ভেজে মুলোর শাক খেলে শরীরের ত্রিদোষ অর্থাত্‍ বাত, পিত্ত ও কফের দোষ নাশ হয়। কিন্তু ভাল করে সেদ্ধ না করে খেলে কফ ও পিত্ত বাড়িয়ে দেবে।

১২) বর্মা শাক / সাঞ্চে শাক / মালঞ্চ শাক -

burmese senchi shanti shalinche shalinche icha malcha

বর্মা শাক । ভারত বাংলাদেশে রান্না করে খেয়ে থাকে বর্মা শাকের মূল মাটির অনেকটা গভীর পর্যন্ত থাকে এবং আলো বাতাস ছাড়ায় বেঁচে থাকতে পারে। জলের নিচে এবং শুকনো মাটি উভয় জায়গাতেই নিজেদের কে মানিয়ে নিতে পারে । স্থান বিশেষে এদের বিভিন্ন নামে ডাকা হয় যেমন -বর্মা শাক, মালঞ্চ শাক, সাঞ্চি শাক, সেঁচি শাক, শান্তি শাক, শালিঞ্চে শাক, চিড়া শাক, ইছা শাক বা মলচা শাক এক প্রকার সপুষ্পক উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Alternanthera philoxeroides যা Amaranthaceae পরিবারভুক্ত। ইংরেজিতে একে 'alligator weed' বলা হয়। এটি কাদা জলে জন্মে। এর আদি নিবাস দক্ষিণ আমেরিকা হলেও পৃথিবীর বিশাল অঞ্চল জুড়ে বিস্তার লাভ করেছে

কফ ও বাত কমিয়ে দেয়। অর্শ ও লিভারের রোগে উপকারী। এর স্বাদ মিষ্টি মিষ্টি। এই শাকের ভাজা ও তরকারি খুবই স্বাদযুক্ত। সাধারণত গ্রামাঞ্চলেই বেশি পাওয়া যায়।

নুতন ট্যাব এ বিস্তারিত পড়ুন

১৩) মটর শাক - 

matar shak saag sag moto shak

গুরুপাক, মলকারক(খেলে মল বেশি হয়) বায়ুর প্রকোপ বৃদ্ধি করে। কফ ও পিত্ত নাশ করে।

১৪) বেতো / বেতে / বেতো  শাক - 

beto shak

 সহজে হজম হয়, খিদে বাড়ায়, হালকা অর্থাত্‍ লঘু, শুক্র ও মল বৃদ্ধি করে, মল নিষ্কাশন করে, লিভারের অসুখ রক্তপিত্ত নাক মুখ থেকে রক্ত পড়া, কৃমি, অর্শ, বাত, পিত্ত ও কফ অর্থাত্‍ ত্রিদো্ষ নাশ করে। বেতো শাককে হিন্দিতে বলা হয় 'বাথুয়া'। টক দই বিট নুন, জিরে ভাজা, রাই, সর্ষের গুঁড়ো দিয়ে এই শাকের রায়তা খেতে অবাঙালিরা খুবই ভাল বাসেন।

 নুতন  ট্যাব  এ  বিস্তারিত পড়ুন 

১৫) হিঞ্চে শাক / হেলেঞ্চা শাক  -

hingcha shak helencha saag

হেলেঞ্চা, হিঞ্চা, হিঞ্চে, হিংচা, হাড়হাচ, হেলচী, হিমলোচিকা (সংস্কৃত ভাষায়), তিতির ডগা, তিতির শাক, তিতির ডাটা, তিতা ডাটা এক প্রকার সপুষ্পক উদ্ভিদ। কোথাও হারহস, কোথাও হিংজা আবার কোথাও এলিচি শাক বলা হয়।
এর আদি নিবাস ভারতবর্ষ, বাংলাদেশ, ব্রাজিল, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা ইত্যাদি
ভারতের পূর্বাঞ্চলে ও বাংলাদেশের পুকুর বা এই জাতীয় জলাশয়ের অগভীর জলে বা জলাশয়ের ধারে আর্দ্র ভূমিতে জন্মে। এই গাছগুলো পানিতে ভেসে থাকে। হেলেঞ্চা গাছ ৩০-৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এদের কান্ডে বহু শাখা থাকে। কান্ডের প্রতিটি গাঁট থেকে শিকড় বের হয়। এর পাতা ২.৫-৭.৫ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। পত্রফলক বল্লমাকৃতির। পাতার কিনারা সূক্ষ্ম খাঁজকাটা। এদের ফুলের রঙ সাদা। কাণ্ডের শীর্ষে গুচ্ছাকারে এর ফুল ফোটে। শীতকালে ফুল ও ফল হয়। বাংলাদেশে এই গাছের পাতা শাক হিসাবে খাওয়া হয়। এই কারণে বাংলাদেশ একে হিংচা শাক বা হেলেঞ্চা শাক বলে। হেলেঞ্চা বাংলাদেশের মানুষ সাধারণত আনাবাদি শাক হিশেবে খেয়ে থাকে। এটা তিতা-কষা স্বাদ যুক্ত।

হেলেঞ্চাতে ২.৯ শতাংশ আমিষ, ০.২ শতাংশ চর্বি, ৫.৫ শতাংশ শর্করা, এবং ২.২ শতাংশ লবণ আছে। এছাড়া এতে ৬৩% ভিটামিন এ, ৭১% ভিটামিন সি এবং ৪১মি.গ্রা. সোডিয়াম, ৩৩০ মি.গ্রা. পটাশিয়াম আছে।

পিত্ত নাশ করে। যাঁদের লিভারের দোষ আছে, যাঁদের হাত গা জ্বালা করে তারা প্রতিদিন সকালে এই শাক থেঁতো করে বা ছেঁচে রস করে খেলে উপকার পাবেন। হিঞ্চে শাকের রস শ্বেত চন্দনের ঘষে নিয়ে সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া বসন্ত রোগের প্রতিষেধক। এই শাকের স্বাদ তেতো। এই শাক শরীর ঠাণ্ডা রাখে, রক্ত পরিষ্কার করে। এই শাক সেদ্ধ করে সর্ষের তেল নুন দিয়ে মেখে ভাতে খেতে ভাল লাগে। হেলেঞ্চা শাকে যথেষ্ট এন্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় এর ক্যানসার প্রতিরোধী ভূমিকা রয়েছে। মাথার যন্ত্রণায় মাথায় এই শাক বেটে লাগালে যন্ত্রণা কমে। স্নায়ুরোগের ভেষজ চিকিৎসায় হেলেঞ্চা  ব্যবহৃত হয়। 

হেলেঞ্চা শাক নিয়মিত খেলে ব্লাড সুগার কমে। (Reduce blood sugar)

১৬) থানকুনি পাতা - 

thankuni a plant with medicinal properties ayurveda

একটি ভেষজ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। থানকুনি পাতাকে আয়ুর্বেদে রসায়ন বলা হয় কারণ এতে আছে শরীরের সপ্ত ধাতুর রস, রক্ত, মজ্জা্, মাংস, অস্থি ও বীর্যে পুষ্টির গুণ। শীতল লঘুপাক সহজে হজম হয়, সারক মল নিঃসারণ করে, নিয়মিত খেলে দীর্ঘজীবন লাভ করা যায়। কাশি, অর্শ, লিভারের অসুখ, প্রস্রাবের অসুখ, গোদ, গলগণ্ড, জনডিস, কৃমি ও যোনির রোগে উপকারী। এই পাতার প্রলেপ লাগালে কুষ্ঠ, যৌনব্যাধি, নালী ঘা ও চর্মরোগ সারে। পেটের অসুখে ও আমাশায় থানকুনি পাতার রস ও থানকুনি পাতার ঝোল খাওয়ার বিধান তো সকলেরই জানা আছে।

পেটের সমস্যা রোধ করে : যাদের আমাশয় সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিয়ম করে থানকুনি পাতা খেতে পারেন। নিয়মিত সাতদিন যদি খেতে পারেন তাহলেই ফল পাবেন। এই ধরনের সমস্যা কমাতে আরেকভাবেও থানকুনি পাতাকে কাজে লাগাতে পারেন। প্রথমে পরিমাণ মতো থানকুনি পাতা বেটে নিন। তারপর সেই রসের সঙ্গে অল্প করে চিনি মেশান। এই মিশ্রণটি দু'চামচ করে, দিনে দুইবার খেলেই দেখবেন কষ্ট কমে যাবে।

১৭) সুষনি শাক / শুষনি শাক -

susni shak susuni saag sag

সুষনি শাককেও আয়ুর্বেদে রসায়ন বলা হয়েছে। কারণ এই শাকেও আছে শরীরের সপ্তধাতুর পুষ্টির গুণ। এই শাককে আয়ুর্বেদে বলা হয়েছে নিদ্রাজনক, খেলে ভাল ঘুম হয়, অর্থাত্‍ অনিদ্রায় উপকার দেয়, অগ্নিদীপক অর্থাত্‍ খিদে বাড়ায়, মেধা বাড়ায় মেধাজনক। 'রসায়ন' তো আগেই বলা হয়েছে। এই শাক খেতে মিষ্টি। এই শাক ভাজা নিয়মিত খেলে মাথাও ঠাণ্ডা থাকে, রাতে ঘুম ও ভাল হয়। সুষনি শাকের আছে আর ও অনেক অসুখ সারা বার ক্ষমতা।

১৮) নটে শাক - 

note shak green amaranth

আমারানটাস ভাইরিডিস (Amaranthus viridis) হ'ল বোটানিকাল পরিবার অমরান্থেসেইয়ের ( Amaranthaceae) একটি মহাজাগতিক প্রজাতি এবং এটি সাধারণত সরু আম্রান্থ (slender amaranth) বা সবুজ আমরণ হিসাবে পরিচিত  (green amaranth)।

নটে  শাক  ভারত বাংলাদেশে ও বিশ্বের অনেক জায়গায় একটি সিদ্ধ সবুজ শাক হিসাবে রান্না করে  খাওয়া হয়।

খাড়া, হালকা সবুজ কান্ডযুক্ত  যা উচ্চতা প্রায় 60-80 সেমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। বেস থেকে অনেকগুলি শাখা উত্থিত হয় এবং পাতাগুলি ডিম্বাকার হয়, 3-6 সেন্টিমিটার লম্বা, 2-4 সেমি প্রশস্ত এবং লম্বা পেটিওলগুলি প্রায় 5 সেন্টিমিটার থাকে। উদ্ভিদটিতে কয়েকটি শাখা বিশিষ্ট টার্মিনাল প্যানিকেল এবং 3 টি স্টিমেন সহ ছোট সবুজ ফুল রয়েছে।

১৯) লাউ শাক - 

gourd spinach leaf cucurbit lau shak


বাঙ্গালীর অন্যতম জনপ্রিয় শাক হলো লাউ শাক। কেননা ঘরের কোণে, উঠানে বা খেতে-খামারে যে জায়গাতেই লাগান না কেন লাউ গাছ তরতরিয়ে বাড়তে থাকে। তাই হাত বাড়ালেই সংগ্রহ করতে পারেন লাউ শাক বা বাজার থেকে কিনলেও দাম পড়ে কম। লাউ শাক সারাবছরই পাওয়া যায়, তবে শীত মৌসুমে এর ফলন ফাল ভাল হয়। শুধু ফলনই বেশি হয় না,  স্বাদও বেড়ে যায় অনেকটা। লাউ শাক খেলে স্বাদ তো পাবেনই, এর সঙ্গে পাবেন স্বাস্থ্যের নানা উপকারিতা।

অনান্য সবুজ শাকের মত লাউ শাকও পুষ্টিগুণে ভরপুর। লাউশাক সিদ্ধ, ভাজি, ভর্তা, ঝোল করে রান্না করা যায়। এছাড়াও জুস, সুপ এবং সালাদ বানিয়ে খাওয়া যায়। তবে যেভাবেই খাওয়া হোক না কেন, শরীর সুস্থ-সবল রাখতে লাউশাকের গুরুত্ব অপরিসীম। এই লাউ শাকে রয়েছে ফলিক এসিড, আয়রন, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম এবং ভিটামিন-সি। আবার এই শাকে আছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ। যা শরীরস্বাস্থ্য সুস্থ ও সবল রাখতে দারুনভাবে কার্যকর। এবার লাউ শাকের উপকারিতা এবং পুষ্টি সম্পর্কে জেনে নিন...

০১। আয়রন থাকার কারণে লাউ শাক রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ এবং লোহিত রক্ত কনিকার সংখ্যা বাড়িয়ে রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে।

০২। লাউ শাকে রয়েছে উচ্চ মাত্রার ভিটামিন-সি। যা  বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ ও ঠাণ্ডা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

০৩। প্রচুর আঁশ থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে লাউ শাক। এছাড়া পাইলস প্রতিরোধেও সহায়ক।

০৪। বিটা-ক্যারোটিন, লুটেইন এবং জিয়েজ্যান্থিনে পরিপূর্ণ হলো লাউ শাক। বিটা-ক্যারোটিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং লুটেইন ও জিয়েজ্যান্থিন চোখের নানাবিধ রোগ প্রতিরোধ করে থাকে।

০৫। লাউ শাক দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তাই লাউ শাক খেলে মস্তিষ্ক থাকবে ঠাণ্ডা এবং ঘুমও হবে গভীর।

০৬। লাউ শাকে থাকা ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম হাড় শক্ত ও মজবুত করে। অস্টিওপোরেসিস এবং অন্যান্য ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত রোগের ঝুঁকি কমায় লাউ শাক।

০৭। লাউ শাক কোলেস্টেরল ও ফ্যাট মুক্ত। আবার ক্যালরি কম থাকায় ওজন কমানোর জন্য লাউ শাক হলো একটি আদর্শ খাবার। এই শাকে থাকা পটাশিয়াম হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে।

২০) কুমড়ো শাক - 

pumpkin spinach leaf kumro shak



কুমড়ো স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী এ কথা আমরা জানি। কুমড়োর মতো এর পাতাও স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এ শাকের আরও যেসব স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে

আয়রনের ঘাটতি কমায় (Reduces iron deficiency)
কুমড়ো পাতায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। আর এই উপাদানটি দেহে রক্তের অভাব হতে দেয় না। নারী ও শিশুদের মধ্যে আয়রনের ঘাটতি বেশি থাকে। তাদের খাদ্যতালিকায় এই পাতা রাখতে পারেন।
 
ভিটামিন-সি (Vitamin C)
কুমড়ো পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি রয়েছে, যা ক্ষত সারাতে বেশ কার্যকর। শারীরিক কোনো আঘাত বা অভ্যন্তরীণ সমস্যা রোধে এই শাক বেশ উপকারী।

দাঁত ও হাড় মজবুত করতে (To strengthen teeth and bones)
কুমড়ো শাক দাঁত ও হাড় মজবুত করতেও সহায়তা করে। দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সপ্তাহে দু-তিনবার কুমড়ো শাকের তরকারি, স্যুপ বা কুমড়ো পাতার রস খেতে পারেন। এতে চোখে কম দেখার সমস্যা দূর হয় এবং ছানির মতো সমস্যাও প্রতিরোধ করে কুমড়ো শাক।

ত্বক উজ্জ্বল করতে (To brighten the skin)
ভিটামিন-এ ও সি-সমৃদ্ধ কুমড়ো ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে। সেই সঙ্গে ভালো থাকে চুলও।

নতুন মায়েদের সুস্থতায় (In the mother's health)
শরীরের প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি সরবরাহ করে বলে যেসব মা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান, তাদের জন্যও কুমড়ো শাক খুব উপকারী।

রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে (Controlling blood cholesterol)
প্রোটিন-সমৃদ্ধ কুমড়োর শাক রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুব উপকারী। এ ছাড়া এই শাক খেলে রক্তের কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে থাকে।

২১) লেটুস শাক / লেটুস পাতা -


lettuce lactuca sativa


পাতালেটুস (Lactuca sativa) ডেজি (daisy) পরিবারের এস্টেরাসি গোত্রের একটি বার্ষিক উদ্ভিদ লেটুস গাছের পাতা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তরকারি হিসেবে জন্মানো হয়, তবে মাঝে মাঝে এর ডাটা এবং বীজও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। প্রাচীন মিশরীয়রা আগাছা থেকে সর্বপ্রথম লেটুস আবিষ্কার করে যার বীজ ব্যবহার করে তেল তৈরী করা হয় এবং এর সরস পাতাগুলো খাবার উদ্ভিজ্জে পরিণত হয়। তেলসমৃদ্ধ বীজের কারণে এই উদ্ভিজ্জ গ্রিক এবং রোমানদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। যারা পরবর্তীতে এর নামকরণ করেন ল্যাকটুকা, যার ইংরেজি আধুনিক নামকরণ 'লেটুস'। খ্রিষ্টাব্দ ৫০ এর দিকে লেটুসের বিভিন্ন প্রকারের বর্ণনা পাওয়া যায় এবং এই উদ্ভিদটি বনৌষধি সহ প্রায়ই মধ্যযুগীয় লেখায় উপস্থিত। ইউরোপে ১৬শ থেকে ১৮শ শতাব্দীতে এর বিভিন্ন প্রাজাতির ক্রম্ববিকাশ লক্ষণীয়। ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে যেসব প্রজাতি বর্ণিত হয়েছিল তা আজও বাগানে পাওয়া যাবে। মূলত ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকা লেটুসের বাজারে আধিপত্য বিস্তার করে তবে বিংশ শতাব্দীর শেষদিকে পাতা সবজি লেটুসের ব্যবহার বিশ্বব্যাপী বিস্তৃতি লাভ করে।

০১। লেটুসপাতা সোডিয়াম ভিটামিন-বি ওয়ান, বি টু থ্রি শরীরের যে কোনো অঙ্গে পানি জমে যাওয়া রোধ করে। এ পাতায় নিয়মিত খেলে বার্ধক্য আসে দেরিতে ত্বকের বলিরেখাও পড় না। ঠাণ্ডাজনিত অসুখ হাঁচি, কাশি, কফ, হাঁপানি ও ফুসফুসের ইনফেকশন দূর করতে সালাদে প্রতিদিন লেটুসপাতা খেতে পারেন।

০২। কাঁচা বা ভাজা লেটুসপাতার সালাদ রক্ত পরিষ্কার করে, হৃৎপিণ্ডের শিরা-উপশিরার দেয়ালে চর্বি জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। লেটুসপাতায় ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে। ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে লেটুসপাতার গুরুত্ব অনেক বেশি। এছাড়া ওজন কমাতে এ পাতা দারুন কাজ করে।

০৩। ত্বকের কোথাও কেটে বা ছিঁড় গেলে এ পাতা থেঁতলে ব্যথার স্থানে লাগালে ব্যথা কমে যায়। লেটুসপাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিতে সহায়তা করার কারণে অ্যামোনিয়া বা রক্তশূন্য রোগীদের জন্য লেটুসপাতা উত্তম খাবার।

০৪। এর ভিটামিন কে হাড়র মেটাবলিজম বাড়ায়। লেটুসপাতা দ্রুত হাড় ক্ষয় হওয়া থেকে শরীরকে রক্ষা করে।

০৫। লেটুসপাতার পুষ্টি উপাদান হাত-পা ফুলে যাওয়া, কিডনির পাথর, কিডনির কার্যহীনতা, মূত্রথলির ইনফেকশন ও কিডনির ব্যথায় লেটুসপাতা উপকারী।

০৬। লেটুসপাতা খুশকি কমাতে সাহায্য করে। শ্যাম্পুতে লেটুসপাতা গুঁড়া ব্যবহার করা হয়। রোদে পোড়াভাব দূর করতে লেটুপসাতা থেঁতলে ত্বকে দিলে ত্বকের উপকার হয়।

০৭। গর্ভবতী নারীরা কাঁচা লেটুসপাতা খেলে মা ও শিশু উভয়ের শরীরেই রক্তের মাত্রা বাড়ে। চোখের ইনফেকশনজনিত সমস্যা কমায় লেটুসপাতা।

তথ্যসূত্রঃ

পালং শাক - উইকিপিডিয়া

লাল শাক - উইকিপিডিয়া

কলমি শাক - উইকিপিডিয়া

পুঁই শাক - উইকিপিডিয়া

সজনে শাক - উইকিপিডিয়া

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

20 মন্তব্যসমূহ