মুসাফিরানা ভিউ পয়েন্ট থেকে তোলা ছবি
আগের দিনের মুকুটমণিপুর যাওয়ার দিনের ব্যস্ততা এই ব্লগ টায় আমি বলেছিলাম মুকুটমণিপুর যাওয়ার জন্য বাঁকুড়ার উদ্যেশে আমরা মেলে উঠেছিলাম রাত ১২.৪০ নাগাদ। মেল বাঁকুড়া ই থামলো তখন ভোর ৫: ১০। মেল যেহেতু লেট এ ছেড়েছিল তাই নির্ধারিত সময়ের এক ঘন্টা পর মেল বাঁকুড়ায় এসে পৌঁছায়। যায় হোক, মেল থেকে নেমেই আমরা খুব ই ঠান্ডা অনুভব করছিলাম। অত ক্ষণ মেল এর ভিতর চাদর মুরি দিয়ে সবাই গুটি সুটি মেরে ঘুমাচ্ছিলাম। হটাৎ মেল থেকে বাইরে আসলে শীত কালে ঠান্ডা লাগাটাই স্বাভাবিক। মেল থেকে নেমে ওভারব্রিজ থেকে নামতে নামতে ই হাজব্যান্ড বললো ড্রাইভার এসে অপেক্ষা করছে বাইরে। ওভার ব্রিজ থেকে নেমেই আমরা গাড়িতে উঠে পড়লাম মুকুটমণিপুর এর উদ্যেশে. আমরা যখন গাড়িতে উঠলাম তখন চারিদিক পুরো অন্ধকার। ভোরের আলো তখন ও ফোটে নি। বুলেরো গাড়ি বুকিং করা হয়েছিল। আমরা ছিলাম মোট পাঁচজন। আর আমার ছেলে আর বরের বন্ধুর একটা মেয়ে। বয়স আড়াই। ওদের নিয়ে মোট সাতজন। গাড়ি তে উঠে ছেলে আবার ঘুমিয়ে পড়েছিল। আমরা অন্ধকারের মধ্য দিয়েই বাঁকুড়া কে দেখতে দেখতে চললাম। চারদিকে কুয়াশা র জন্য গাড়ি ও একটু আস্তে চলছিল। রাস্তার চারপাশ সবুজ ঘাস, কখনো কখনো দু একটা বাড়ি চোখে পড়ছিল। কিন্তু সেগুলো মাটির। দেখতে দেখতে আমারও চোখ টা কখন লেগে গিয়েছিল বুঝতে পারি নি। আমাদের বাঁকুড়া থেকে মুকুটমণিপুর এ আমাদের হোটেলে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল এক ঘন্টা পনেরো মিনিট। হোটেল আগে থেকেই বুকিং করা ছিল। হোটেলের নাম অহলা লজ। আমাদের একদিনের ভাড়া লেগেছিল ১২০০ টাকা। আমরা একদিনের জন্যই বুকিং করেছিলাম। বাঁকুড়া থেকে মুকুটমণিপুর গাড়িতে যেতে ভাড়া লেগেছিল ১৮০০ টাকা ।
গাড়িতে যেতে যেতে ই ড্রাইভার দাদার সাথে কথা ঠিক হয়ে গিয়েছিল। উনি বললেন আধা ঘন্টার মধ্যেই ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে পড়লে আমাদের ঘোরার জায়গা গুলো ভালো ভাবে দেখা যাবে। মানে উনি একটা ট্যুর প্ল্যান দিয়েছিলেন। সেই কথা মতো আমরাও হোটেলে ব্যাগ পত্র রেখে একটু ফ্রেস হয়েই বেরিয়ে পড়লাম। অবশ্য সেই সময় হোটেলে একটি পনেরো ষোল বছরের ছেলে খেজুরের রস বিক্রি করতে এসেছিল। তাই একটু কিনে খেয়েছিলাম। গাড়িতে ওঠার আগে বাইরের দোকান থেকে লিকার চা, আর বিস্কুট কিনে খেলাম। তারপর গাড়িতে উঠে আমরা সুতান ফরেস্ট এর উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। ড্রাইভার দাদা বললেন , যাওয়ার পথে একটা ভালো দোকান আছে ওখানে ব্রেকফাস্ট করে নেবেন
। সেই কথা মতো গাড়ি এগিয়ে চললো। প্রথমেই দেখলাম আমরা অম্বিকা মায়ের মন্দির। তারপাশেই ছিল মহাদেব এর মন্দির। অনেক বছর আগে কার ই এই অম্বিকা মায়ের মন্দির। মা খুবই জাগ্রত। কিন্তু দুঃখের বিষয় ওতো সকাল বেলা মায়ের মন্দির খোলা ছিল না। তাই দর্শন হয় নি। তখন বাজে সকাল সাড়ে আট টা। আর মন্দির খোলে বললো সকাল ১০ টায়।
মন্দির থেকে একটু এগিয়েই ড্রাইভার দাদা গাড়ি দাঁড় করলেন। দেখলাম একটা ছোট মতোই স্হানীয় হোটেল। ওখানে কচুরি ঘুগনি খাওয়া হলো। ঘরোয়া খাবার কিন্তু খুব টেস্টি। সাথে চপ। যেটা সম্ভবত ওখানেই হয়। আমাদের এখানে ঐরকম চপ খাই নি। খুব ভালো খেতে। খেয়ে নিয়ে আবার গাড়ি তে চেপে বসলাম। উদ্দেশ্য সুতান ফরেস্ট। যেতে যেতে একসময় গাড়ি জঙ্গলের রাস্তা ধরলো। আমরা দেখতে থাকলামরাস্তার দু দিকে বড়ো বড়ো গাছের জঙ্গল। রাস্তা কখনো উঁচু হয়ে উপরে উঠে যাচ্ছে। আবার নিচু হয়ে যাচ্ছে। জঙ্গল থেকে শোনা যাচ্ছিল ময়ূর এর ডাক। ড্রাইভার দাদা বললেন এই জঙ্গলে প্রচুর ময়ূর আছে। আমরা কিন্তু একটা ও ময়ূর দেখতে পাই নি। তবে ময়ূর এর ডাক শুনতে পারছিলাম।ড্রাইভার দাদা বললেন গাড়ির আওয়াজ হলে ওরা সামনের দিকে আসে না। যেতে যেতে একটা ভিউ পয়েন্ট দেখতে পেলাম। ওখানে উঠে কয়েকটা ছবি তুললাম। সত্যি ই উপর থেকে চারদিকটা অপূর্ব সুন্দর লাগছিল। ছোট বড় গাছ পালা দিয়ে যেন মুকুটমনিপুর সাজানো। শাল, পিয়াল, সেগুন গাছের সমাহার। সকলে যেন মিলেমিশে এখনে সুখে শান্তি তে বিরাজ করছে। শহরের কোলাহল ছেড়ে একদিন এসে দেখো তোমরা সত্যিই মন ভালো করে দেবে। সুতান ফরেস্ট এর কিছু ছবি তোমাদের দিলাম।
তারপর ওখান থেকে আমরা চলে গেলাম তালবেরিয়া লেক। এটাও খুব সুন্দর জায়গা। নৌকা বাধা আছে পাড়ে। এখনকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কিছুটা উপভোগ করলাম। কয়েকটি ছবিও তুললাম। যেগুলো স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে আজীবন মনের মনি কঠোরে। আমাদের ব্যাস্ত তার জীবন যাপনে এই কয়েকটা দিন ই মন গুলোকে সতেজ করে তোলে, আবার এনার্জি এনে দেয় পুরো দমে কাজ করার জন্য। তাই তো আমরা হাজার কাজ করতে করতে যখন দম বন্ধ হয়ে আসে আমরা ছুটে যাই দিন কয়েক কের জন্য একটু প্রকৃতির কোলে ঘুরে আসতে। কি তাই না?
যাই হোক তালবেরিয়া লেক এর ও ছবি দিলাম। সেখান থেকে ঝিলিমিলি ঘুরে এসে ক্লান্ত শরীরে আবার হোটেলের রুমে ফিরে এলাম। সব মিলিয়ে প্রায় ৬০ কিলোমিটার আমাদের যেতে আসতে লেগেছিল। এই পুরো ট্যুর টা করতে ড্রাইভার দাদা ১২০০ টাকা নিয়েছিল। রুমে যখন এলাম প্রায় দুপুর একটা বাজে। ছেলে কে স্নান করিয়ে নিজেস্নানকরে ফ্রেস হয়ে হোটেলের রেস্টুরেন্টে গেলাম খেতে। খুবই সাদা মাটা খাবার পাওয়া যায় এখানে। চাইনিজ, কন্টিনেন্টাল এর এখন এ কোন বালাই নেই। শুদ্ধ বাঙালি খাবার।
শাল পাতার থালায় খেতে দিলো। খাবারের ছবি দিলাম। ভাত, বেগুনি, ডাল, আলু পোস্ত, বাঁধাকপির তরকারি, মাছ এর ঝাল, চিকেন কষা, চাটনি। আলু পোস্ত টা খুব সুন্দর খেতে । আমরা সবাই দু বার করে চেয়ে নিলাম। খেয়ে দিয়ে সেজে গুজে আবার বেরিয়ে পড়লাম। রাঢ় বঙ্গের রানী মুকুটমণিপুর কে চাক্ষুষ দর্শন করতে।
সূর্যাস্ত
আমার ডেইলি ব্লগ ভালো লাগলে আমায় সাবস্ক্রাইব করার অনুরোধ করছি সকলকে। সবাই ভালো থেকো। শুভ রাত্রি সকলকে।

.jpeg)





.jpeg)







2 মন্তব্যসমূহ
A6B4E79B4A
উত্তরমুছুনhacker arıyorum
hacker arıyorum
tütün dünyası
hacker bul
hacker kirala
416B5CAB18
উত্তরমুছুনTakipçi Satın Al
M3u Listesi
Coin Kazanma
3D Car Parking Para Kodu
Hay Day Elmas Kodu