নীরবে ভালোবাসি পর্ব ২০

 love silently part 20


আগের পর্ব পড়ুন 

নীরবে ভালোবাসি পর্ব ২০


বলছি শ্রেয়া,  তুই অভি দা কে চিনিস তো ? 

-কে অভি দা?

-আরে, শুভ্র দের সাথে মাঝে মাঝে থাকে একটা লম্বা করে ছেলে, হাতে গিটার থাকে। 

-ওর নাম অভি তা তো জানতাম না। শ্রেয়া অবাক হয়ে শ্রী কে জিজ্ঞাসা করে। তুই আবার কবে থেকে ওর নাম জানলি?

-ওরাই তো নিজেদের মধ্যে ওই নাম ধরে ডাকতো তাই জানি। 

- তো কি হয়েছে? 

- না, তাই বলছি। 

কি সব ভুলভাল কথা বলছিস বলতো? কে অভি দা তার প্রসঙ্গ নিয়ে খাপছাড়া কথাবার্তা আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। তাছাড়া অর্ধেকটা বলে এইভাবে চুপ করে মাথা নিচু করে থাকলে কি করে বুঝবো বলতো? কি হয়েছে ব্যাপারটা খুলে বলবি তো? 

শ্রী এর সাথে উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে বলতে শ্রেয়া উকি মেরে একবার শুভ্র কে দেখে নিলো। দুপুরের তপ্ত রোদে ওর গাল দুটো লাল হয়ে গেছে, চুল গুলো এলোপাতাড়ি ভাবে উড়ছে। শুভ রা টিফিন টাইমে ক্রিকেট খেলে। এইসময় টা শ্রেয়া দু চোখ ভোরে শুভ্র কে দেখার সময় পায়। কারণ এই সময় টা সায়ন, পিকাই , রক্তিম রাও ক্রিকেট খেলতে খুব ব্যস্ত থাকে। তাই শ্রেয়াকে তারা দেখতে পায় না। আর শ্রেয়াকে এইসময় টা প্রাণ ভরে দেখার সুযোগ করে দেয় শ্রী ই। শ্রী চারদিকে নজর রাখে যাতে ম্যাডাম রা, কিংবা আর কোনো বান্ধবীরা এটা না দেখতে পায়। শ্রী এর এই ব্যাপারটা মাঝে মাঝে রাগ ও ধরে । প্রায়ই ও শ্রেয়া কে বলে , আচ্ছা, তোদের যখন দুজন দুজনকে এতটাই পছন্দ তখন মুখে বলে দিলেই হয়। শ্রেয়া লজ্জা মাখা গলায় বলে, আমায় ওতোটাই নিলজ্য ভাবিস না , যে আমি গিয়ে প্রথম ভালোবাসার কথা জানাব। আমি ওর জন্য অপেক্ষা করব। দরকার হলে সারাজীবন । তবু ওকেই আগে বলতে হবে। 


তাহলে তো হয়েই গেল। শুভ্র তো যা ক্যাবলা , নোটস এর খাতা চাওয়া আর দরকারি একটা- দুটো কথা বলা ছাড়া মুখ দিয়ে আর কোনো বুলিই ফোটে না। 


- আবার, আবার তুই চাতক পাখির মতো শুভ্র র দিকে চেয়ে আছিস তো ? তুই অন্যমনস্ক হয়ে গেলে আমি কথা টা কি করে বলবো বল তো? 

আমতা আমতা করে শ্রেয়া বললো আমি দেখি নি।তোর দিকেই তাকিয়ে আছি ড্যাবড্যাব করে এবার বল।


শ্রী হাত দুটো কচলিয়ে লজ্জা লজ্জা করে বলতে শুরু করল,  সামনের সোম বার তো তুই স্কুল এলি না। 

  হ্যা, প্রতি বছরই আমি ঐ দিনটায় স্কুল আসি না। কারণ ওই দিন মায়ের জন্ম দিন। আমি আর মা এক সঙ্গে সময় কাটাই। এটা তো তুই জানিস ই। 

  - তা তো জানি। কিন্তু ব্যাপারটা হলো ওইদিন আমি একাই স্কুল আসছিলাম। ওই অভিদার সাথে রাস্তায় দেখা হয়। 

  - তারপর? 

  - ও আমার ফোন নম্বর চাইছিল জানিস তো। আমি দিই নি। 

  আমি নম্বরটা না দেওয়ায় ওর নম্বর টা আমায় বলতে চাইছিল। কিন্তু আমি ওকে মুখের ওপরই বলে দিয়েছি আমি শুনতে চাই না। 

  - তারপর? 

  - তারপর আবার কি আর কিছু না। 

  - কিন্তু তোর চোখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে ব্যাপারটা এখানেই শেষ নয়। পুরোটা বল। মনে হচ্ছে সামথিং সামথিং...

  শ্রী এর চোখ- মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেল। কানের পাশে অগোছালো চুল গুলো সরিয়ে মৃদু গলায় বলল তারপর আর একটা ছোট্ট কেস করে ফেলেছি। 

  - কি কেস? কৌতূহলি দৃষ্টি তে শ্রেয়া তাকিয়ে রইলো শ্রী এর দিকে। 

  অভি দা র নম্বর টা আমি নিতে রাজি ছিলাম না। কিন্তু ও মুখে বলে চলে গেল আর বলল পারলে একটা মিস কল দিও। 

  আমি কাল বিকালে ওই নম্বরটায় কল করেছিলাম। 

  -দাঁড়া, দাঁড়া .... তোকে আগে পায়ের নিচে থেকে মাথা অবধি আমায় ভালো ভাবে দেখতে দে। 

  হতবাক হয়ে শ্রী বললো কেন? 

  - আমি তোকে যতই দেখছি ততই অবাক হচ্ছি। 

  - কেন এতে অবাক হওয়ার কি আছে? 

  -আরে, অবাক হব না? যে মেয়ে অংকে এত কাঁচা তার দশ টা নম্বর মনের অনিচ্ছা সত্ত্বেও একবার বলা তেই মুখস্ত হয়ে গেল? জাস্ট ক্যান্ট বিলিভ দিস। 

  শ্রী কাচুমাচু করে বললো আমায় আর প্লিজ লজ্জা দিস না শ্রেয়া। তারপর এর কেস টা শোন।

  আমি শুধু ফোন করে ওর গলাটা শুনেছি । কোনো কথা বলি নি। কিন্তু তারপর থেকেই ও বার বার কল করছে। এমনকি কয়েকটা মেসেজ ও করেছে। ও ধরতে পেরে গেছে এই নম্বরটা আমারই।

  - শুনলাম। আমায় না জানিয়ে তো তাহলে একা একা ডুবে ডুবে ভালোই জল খাচ্ছ তাহলে? 

  - ধুর... ফোন করবো যে তার ও উপায় নেই। বাড়িতে সবসময় মা চোখ- কান খোলা রাখে। বলছি অভি দার সাথে কথা বলার আগে শুভ্রর সাথে আমার কিছু কথা বলার আছে। 

  - শুভ্র কে আবার কি বলবি ভ্রু কুচকিয়ে শ্রেয়া জিজ্ঞাসা করলো। 

  - অভি দা ছেলেটা কেমন, কি করে, ওর বাবা কি করেন, বাড়িতে কে কে আছে এইসব।

  - বাবা, তুই তো দেখছি  সব ঠিকুজি কুষ্ঠী জেনে তারপর প্রেম করবি। 

  রেলিংয়ে খোশমেজাজে হেলান দিয়ে শ্রী বললো, তা তুই ঠিক ই বলেছিস। প্রেম যখন করবো সব কিছু জেনে শুনেই করবো। পচা শামুক এ পা কাট তে আমি চাই না। আর তোদের মতো প্রেম টা কে ওই চোখে চোখে ঝুলিয়ে রাখতেও চাই না। 

  তুই শুভ্রকে একবার ডাকতে পারবি শ্রেয়া? নাকি আমি ডাকবো? 

  -তুই ই ডাক। আমি ডাকলে রক্তিম রা আবার রাগাবে।

  -তোদের যেন যত সব ঢং । রাগাবে তো ভারী বয়েই গেল।ভালোলাগে,  ভালোবাসিস, মিটে গেল। কে কি বললো না বললো তাতে কি আসে যায়। তুই ও যেমন মিনমিনে, শুভ্র টাও তেমন হাদা একটা। হ্যাবলার মতো কেমন আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। ভাবে আমি হয়তো মিডিল ম্যান হয়ে তোদের চার হাত এক করে দেব। সে গুড়ে বালি। যে যার কেস নিজে মেটাও। 

  আচ্ছা অনেক হয়েছে তোর জ্ঞান দেওয়া। টিফিন শেষ। ঘন্টা পরে গেছে। রুমে চল।

  -যা! শুভ্র র সাথে কথা বলাই যে হলো না।

  -কাল বলবি। এই বলে শ্রেয়া টানতে টানতে শ্রী কে ক্লাস রুমের দিকে নিয়ে চললো। ও শেষ বারের মতো শুভ্রর হাসি মাখা মুখ টা দেখে নিল।

চলবে...

পরের পর্ব পড়ুন

ছবি : সংগৃহিত

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

  1. Aside from conventional casino video games, KAL Hotel and Casino additionally supply different multi-line video slots, reel slots, and video poker machines. That’s an ambitious program that would entice both Korean and international guests for one thing apart from gaming. Being a three hour drive from the nearest international airport and major inhabitants center severely constrains Kangwon Land’s potential. Sponsorship of the Olympics and exposure through the video games 온라인 카지노 hasn’t provided a bump among international guests, comprising simply over 1% of total customers before and after the video games.

    উত্তরমুছুন