( হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ, রাধে রাধে রাধে রাধে রাধে রাধে , ওম নমঃ শিবায় ওম নমঃ শিবায় ওম নমঃ শিবায়।)
7. 11.2025. শুক্রবার
সুপ্রভাত,
আজ আপনি কেমন আছেন?
এই প্রশ্নটা হয়তো প্রতিদিন কেউ করে না, কিন্তু আমি করতে চাই। কারণ আপনি নিজের যত্ন নিচ্ছেন কি না, সেটাই আজকের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
আমরা সবাই এখন এমন এক দৌড়ের মধ্যে আছি, যেখানে “সময় নেই” কথাটা জীবনের অংশ হয়ে গেছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নিরন্তর কাজ, দায়িত্ব, পরিবারের চিন্তা, ফোনের নোটিফিকেশন—সব মিলিয়ে আমরা যেন একটা অদৃশ্য দৌড়ে নাম লিখিয়েছি।
কিন্তু কখনো ভেবেছেন কি, আপনি আসলে কোথায় ছুটছেন?
ধীরে চলার মানে অলসতা নয়
অনেকেই ভাবে, ধীরে চলা মানে পিছিয়ে পড়া। অথচ আসল সত্যটা উল্টো। ধীরে চলা মানে সচেতনভাবে বাঁচা।
যখন আপনি একটু থেমে দেখবেন সূর্যাস্তটা, শুনবেন পাখির ডাক, নিজের মনের কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনবেন—তখন বুঝবেন আপনি বেঁচে আছেন।
জানালার ধারে বসে নিঃশব্দে ভাবা—এসব ছোট ছোট মুহূর্তই আসলে জীবনের গভীর অর্থ খুঁজে দেয়।
নিজেকে না ভালোবাসলে জীবনও ক্লান্ত হয়
দিন শেষে আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে ক্লান্ত। কিন্তু সেই ক্লান্তির মাঝে আপনি যদি একটু নিজের প্রতি কোমল হতে পারেন, একটু আদর করতে পারেন, তবে দেখবেন ক্লান্তিও ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।
নিজেকে ভালোবাসা মানে নিজেকে নিয়ে অহংকার নয়, বরং নিজের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
আপনি কতটা পরিশ্রম করেন, কতটা দায়িত্ব সামলান, কতটা নীরবে সহ্য করেন—এই সবকিছুর জন্য নিজেকে “ধন্যবাদ” বলা উচিত না?
ছোট ছোট অভ্যাস, বড় পরিবর্তন
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ফোন না দেখে একটু জানালার বাইরে তাকান।
এক গ্লাস গরম জল খান, একটু হাঁটুন, পাখির শব্দ শুনুন।
রাতে ঘুমানোর আগে একটা পজিটিভ চিন্তা লিখুন—আজ কী ভালো লাগল।
এভাবে নিজের সঙ্গে একটু করে সংযোগ তৈরি করলে আপনি বুঝবেন, জীবন আসলে কত সুন্দর।
সোশ্যাল মিডিয়া নয়, বাস্তব মুহূর্তে বাঁচুন
আমরা অনেক সময় ফোনে স্ক্রল করতে করতে নিজের সময়টাই হারিয়ে ফেলি।
একটু চেষ্টা করুন—প্রতিদিন অন্তত আধা ঘণ্টা “ফোনহীন সময়” কাটান।
সন্তানের মুখে হাসি দেখুন, পরিবারের সঙ্গে গল্প করুন, নিজের মনকে শুনুন।
এই সময়গুলোই আপনাকে মানসিকভাবে সমৃদ্ধ করবে।
কৃতজ্ঞতার অভ্যাস
প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে নিজের মনে তিনটি জিনিস লিখে ফেলুন, যেগুলোর জন্য আপনি কৃতজ্ঞ।
হয়তো সেটা এক কাপ চা, প্রিয়জনের ফোন, কিংবা আজকের ভালো ঘুম—ছোট কিছু হলেও লিখুন।
এই অভ্যাস আপনার জীবনকে ধীরে ধীরে ভেতর থেকে পরিবর্তন করবে।
ধীরে চলা মানে বর্তমানকে দেখা
আমরা অনেক সময় অতীতের ভারে বা ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তায় বর্তমানকে উপভোগ করতে ভুলে যাই।
কিন্তু জীবন তো এই মুহূর্তটাই—আপনি এখন যেভাবে শ্বাস নিচ্ছেন, হাসছেন, বাঁচছেন।
এই মুহূর্তের মধ্যেই আসলে সুখ লুকিয়ে আছে।
একটু নিজের জন্য রাখুন সময়
প্রতিদিনের ব্যস্ততার মাঝেও নিজের জন্য ৩০ মিনিট রাখুন।
চা খেতে খেতে বই পড়া, গাছপালার যত্ন নেওয়া, গান শোনা—যা আপনাকে শান্তি দেয়, তাই করুন।
এই ছোট ছোট আনন্দই জীবনকে অর্থবহ করে তোলে।
শেষ কথা
আপনি যদি আজ থেকে একটু ধীরে চলতে শুরু করেন—
তাহলে দেখবেন পৃথিবীও যেন একটু থেমে গেছে আপনার সঙ্গে।
আপনার মনে শান্তি আসবে, চিন্তায় স্পষ্টতা আসবে, আর জীবনের মানে নতুনভাবে ধরা দেবে।
তাই, আজ থেকে প্রতিদিন নিজের মনকে একটু জিজ্ঞাসা করুন—
“আমি কেমন আছি?”
এই প্রশ্নের উত্তরেই লুকিয়ে আছে জীবনের সত্যিকারের শান্তি।
উক্তি (শেষ ব্লগের লাইন হিসেবে):
“যে ধীরে চলে, সে-ই সত্যি জীবনকে দেখতে পায়—অন্যরা শুধু তাকে পেরিয়ে যায়।”
আজ ব্লগের লেখা এত টুকুই । আবার আসবো আগামী কাল। সকলে ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।


0 মন্তব্যসমূহ