একদিন আমার রান্নাঘরে – বাংলা লাইফস্টাইল ব্লগ

 




 



একদিন আমার রান্নাঘরে – বাংলা লাইফস্টাইল ব্লগ

(হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ, রাধে রাধে… ওম নমঃ শিবায়)

তারিখ: ২৬.১০.২০২৫, রবিবার
সময়: দুপুর ১:১৬


আবার আমি বসে পড়েছি আমার নিত্য দিনের দুঃখ–সুখের কাজের ডালি নিয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনারা কেমন আছেন, পাঠক বন্ধু? ভালো আছেন তো? আমি ভালো আছি।

জানেন তো, মেয়েদের, বিশেষ করে গৃহবধূদের জীবনের অনেকটা সময় রান্নাঘরে কাটে। হ্যা, এখন রান্না শুধু প্রয়োজন নয়, এটা একটা প্যাশন, একটা আর্ট। আজ রান্নাঘরের দিনটাই আমি আপনাদের কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো।

আমি গ্রামের বধূ। শশুর, শাশুড়ি, স্বামী, ছেলে নিয়ে সংসার। চাষ-বাস আছে, গোয়াল ভরা গরু, গোলা ভরা ধান। আমাদের মতো পরিবেশে রান্না হয় খুবই সাধারণ, কিন্তু ভালোবাসা দিয়ে।


🌿 আজকের রান্নাঘরের দিন

সকাল

সকালটা শুরু হলো একদম ঘরোয়া গন্ধে। পেঁপে কেটে বসেছিলাম, শশুর-শাশুড়ির জন্য বানালাম পেঁপের তরকারি। ওরা পেঁপে ভীষণ পছন্দ করেন, তাই ভালোবাসা দিয়ে একটু বাড়তি ঘি আর জিরা ফোঁড়ন দিয়েছিলাম।

শাশুড়ি এসে বললেন:

“খোকা ছোটবেলায় এই তরকারিটাই সবচেয়ে পছন্দ করত।”

মনে হলো, আমি শুধু রান্না করছি না—একটা মায়া, সম্পর্কও গড়ছি রান্নার সাথে সাথে।


ছোঁয়া ২ – স্মৃতির গন্ধ:
তরকারির গন্ধে মনে পড়ল ছোটবেলার দুপুরগুলো। মা তখন রান্না করত পেঁপে-চিংড়ি। আজ এত বছর পর সেই গন্ধটাই যেন ফিরে এলো ।


ছোঁয়া ৩ – জীবনের অনুভব:
জীবনের কত ঝামেলা, ক্লান্তি—সব যেন মিলিয়ে গেল এই এক কড়া তরকারির গন্ধে। রান্নাঘরের ধোঁয়ার ভেতরেও শান্তির রঙ খুঁজে পাওয়া যায়।


 ব্রেকফাস্ট

আজকের ব্রেকফাস্টে ছিল এগ রোল—কলকাতার রাস্তার সেই মজার স্বাদ! সবাই একসাথে খাওয়ার মধ্যে আলাদা আনন্দ আছে। এটা আমি স্বামী আর ছেলে খেলাম। শশুর শাশুড়ি মা এগ রোল খান না। ওনারা সিম্পল পেঁপের তরকারি দিয়ে মুড়ি খেয়েছিলেন।


লাঞ্চ

দুপুরে করলাম চিকেন আর জিরা রাইস। গরম ভাতের সঙ্গে মশলাদার চিকেন—একেবারে পরিপূর্ণ দুপুর। রান্নাঘরের গন্ধ পুরো ঘর ভরিয়ে দিল।

ছবি:


( চিকেন রান্নার প্রস্তুতি চলছে। তার ছবি। বড় করে কাটা পেঁয়াজ গুলো বাটব। রসুন ও বাটব। কুচনও পেঁয়াজ গুলো ভাজবো। টমেটো , ধনেপাতাও বেটে দিই। খেতে খুব ভালো হয়)



( মশলা বাটার প্রস্তুতি শেষ। রান্না চাপিয়েছি। পেঁয়াজ ভাজা চলছে সবে। ছবি শেয়ার করলাম।)




( চিকেন টা কসানোর সময় 1 কেজি চিকেন এ দুই চামচ মত ছাতু ড্রাই রোস্ট করে দিই। এতে চিকেন এর স্বাদ আরো ভালো হয়। কসানোর শেষের দিকে ছাতু দিয়ে আরো 5 মিন্ট মতো লো আঁচে চিকেন কসাই। এতে গ্রেভি টা খুব ভালো টেস্ট হয়। করে দেখতে পারেন। আশা করি ভালো লাগবে। )

( চিকেন টা ভালো করে ধুয়ে 1 ঘন্টা মত নুন, হলুদ, জিরে গুঁড়ো লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে মাখিয়ে রেখে দিয়েছিলাম।।শুধু গুঁড়ো মশলা দিয়ে রেখেছিলাম। )



মশলাদার চিকেন, রান্নার মাঝামাঝি।



( কষানো চলছে। আমরা গ্রামে থাকি। মডিউলার কিচেন আমাদের নেই। যেমন আছে তেমন ই ছবি দিলাম। ফোন টাও আমার খুব সাধারণ। যা ছবি ওঠে তাই দিয়েই ক্যাপচার করি )

( চিকেন এর ঝোল রেডি। ) এই ভাবেই করি। খুব ভালো লাগে খেতে। 


গরম ভাতের সঙ্গে চিকেন—লাঞ্চ সম্পূর্ণ।


🛕 ঠাকুর সেবা

মাঝে ঠাকুর সেবা করলাম—একটু ধূপ, ফুল, নামজপে মন ভরে গেল। শান্তি ছড়িয়ে আছে চারিদিকে।


ঠাকুর সেবার মুহূর্ত—মন শান্তি পেয়ে ভরে উঠল।


🥕 স্বাস্থ্যকর রস

আজ গাজর আর আমলকির রসও করেছিলাম। টক-মিষ্টি স্বাদে ফ্রেশ ভাব আসলো। শরীর ভালো রাখার জন্য এর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না।


ছবি না থাকলেও প্রতিটা মুহূর্ত মনে ফ্রেমবন্দি। আজকের দিনটা সাধারণ মনে হলেও, নিজের হাতে করা কাজের ঘ্রাণে পরিপূর্ণতার সুখ।



দিনটা যত সাধারণই হোক, নিজের হাতে করা কাজের ঘ্রাণে থাকে আনন্দ ও শান্তি। ছবি থাকলে অনুভূতি আরও জীবন্ত হয়, কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভালোবাসা ও পরিশ্রমের রঙ, যা প্রতিটা মুহূর্তকে স্মরণীয় করে।


আজকের ছোট ব্লগ টা কেমন লাগলো পাঠক বন্ধুরা জানাতে ভুলবেন না যেন। আচ্ছা আপনাদের আজ রবি বারের স্পেশাল কি মেনু ছিল ? কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। 


আজ তবে এইটুকুই। আবার ফিরবো আগামী কাল । ছোট ছোট জীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মুহূর্ত গুলোকে লেখনী বন্ধ করার জন্য। সকলে ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন।


( রাধে, রাধে)










( আমার ই একটা ছবি দিয়ে আজকের ব্লগ শুরু করলাম। দুর্গা পুজোয় তোলা ছবি। কেমন লাগছে আমায় জানাবেন কেমন?)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ