ব্যস্ত ময় জীবনে একটু বিরতি

 







 ( কেমন লাগছে আমায়?)

দৈনন্দিন জীবনের দৌড়ঝাঁপের মাঝে আমরা হারিয়ে ফেলি নিজেদের। এই ব্লগে আছে ক্লান্ত মনের বিশ্রাম, আত্মার কথা শোনা, আর ভালোবাসার শান্ত ছোঁয়া। পড়লে মন হালকা লাগবে।


ব্যস্ত ময় জীবনে একটু বিরতি

(হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ ..রাধে রাধে রাধে… ওম নমঃ শিবায়  ওম নমঃ শিবায় ওম নমঃ শিবায় 🙏)



ভোরবেলা জানলার ধারে বসে আছি, হাতে কফির কাপ। বাইরের হাওয়া কেমন জানো — মিষ্টি, হালকা ঠান্ডা আর একটু মন খারাপের মতো। জানালার পর্দা দুলছে, আর আমার মনটাও ঠিক তেমনই দুলছে ভাবনার হাওয়ায়।
আজ সারাদিনের ব্যস্ততার পর মনে হলো — “আমরা কবে শেষবার থেমেছিলাম?”


প্রতিদিন এক অদ্ভুত দৌড়। সকাল থেকে রাত অবধি ঘড়ির কাঁটায় বাঁধা জীবন।
বাচ্চার স্কুল, কাজের চাপ, সংসারের দায়িত্ব, হাসি-খুশির আড়ালে হাজার চিন্তা।
হয়তো বাইরে থেকে আমরা সবাই ঠিক আছি, কিন্তু ভিতরে ভিতরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।
এই ক্লান্তির নাম কেউ দেয় “রুটিন”, কেউ বলে “দায়িত্ব”, কিন্তু আমি বলি “নিজেকে হারানো”।

কখনো কখনো সত্যিই দরকার হয়, একটু থেমে শ্বাস নেওয়া।
একটু চুপ করে থাকা, নিজের মনের সঙ্গে কথা বলা।
জীবনের হট্টগোলে নয়, নিজের নীরবতার ভেতরেই আসল শান্তি লুকিয়ে থাকে।


 নিজেকে ভুলে যাওয়া আর খুঁজে পাওয়া

আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে হারিয়ে যাই — কারও হাসিতে, কারও অভিমানে, কারও ভালোবাসায়।
যে মেয়েটা একসময় কবিতা লিখত, এখন সে এক্সেল শিটে সংখ্যা গুনে দিন কাটায়।
যে ছেলেটা একসময় গিটার বাজাত, এখন সে শুধু অফিসে ক্লায়েন্টের কল রিসিভ করে।

কিন্তু এই হারিয়ে যাওয়া মানেই কি শেষ?
না, বরং হারিয়ে যাওয়াটাই তো খুঁজে পাওয়ার শুরু।
একদিন নিজের মনের গভীরে খুঁজে পাবেন,
আপনি এখনো বেঁচে আছেন এখনো অনুভব করতে পারেন, এখনো ভালোবাসেন।


( আমাদের পাড়ার মা জগদ্ধাত্রী পূজার ছবি। আজ নবমী তিথি। সকলকে জানাই ভালোবাসা, প্রণাম, ও আন্তরিক শুভেচ্ছা। মা সকলকে ভালো রাখুক)



ভালোবাসা মানে শুধু সম্পর্ক নয়

আমরা “ভালোবাসা” শব্দটা এতটাই সম্পর্কের সঙ্গে বেঁধে ফেলেছি যে, তার আসল মানেটা ভুলে গেছি।
ভালোবাসা মানে শুধু একজন মানুষ নয় —
ভালোবাসা মানে সেই মুহূর্তটা, যখন তুমি নিজের জন্য পাঁচ মিনিট সময় রাখো।
যখন বৃষ্টির ফোঁটা গায়ে পড়ে, আর তুমি ছাতা না খুলে ভিজে যাও।
যখন কারও চোখে নিজের মতো একটুখানি মায়া খুঁজে পাও।

ভালোবাসা মানে নিজের সঙ্গে একটা বন্ধুত্ব তৈরি করা।
যেখানে অভিযোগ নেই, শুধু গ্রহণ আছে।


শান্তি কোথায় খুঁজবো?

শান্তি বাইরে নেই, শান্তি আমাদের ভেতরে।
কিন্তু আমরা সেই শান্তির পথ ভুলে গেছি।
প্রতিদিন সোশ্যাল মিডিয়ার পর্দায়, অন্যের সুখ দেখে নিজের কষ্ট গুনছি।
তবু জানো, শান্তি আসে যখন আপনি নিজের জীবনকে তুলনা করা বন্ধ করেন।

একবার ভেবে দেখুন—
প্রতিদিন যদি মাত্র দশ মিনিট নিজের জন্য রাখেন,
মোবাইল বন্ধ করে, শুধু নিজেকে সময় দেন,
তাহলেই হয়তো আবার নিজের ভেতরের আলোটা জ্বলে উঠবে।


 ক্লান্ত হৃদয়ের আর্তি

রাতের নির্জনতায় অনেক সময় বুকের ভেতর এক অদ্ভুত ভার জমে।
যে কথা দিনে কাউকে বলা যায় না, সেটাই রাতে শব্দ হয়ে ভেসে ওঠে মনে।
আমরা যতো হাসি, যতো কাজ করি, ততই যেন মনের ভেতরের ফাঁকা জায়গাটা বড় হতে থাকে।

তবু, আমি বিশ্বাস করি —
যখন একদিন নিজের ভেতর সেই ফাঁকা জায়গায় একটু ভালোবাসা, একটু দয়া, একটু প্রার্থনা ঢেলে দেবে,
তখন সেই ফাঁকা জায়গাটাই ফুলে ভরে উঠবে।

( আজ ঘর থেকে তোলা আমাদের উঠোনের বৃষ্টির ছবি। বেলা তখন ১১:৩০)


 জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞতা

হয়তো আজ সব কিছু ইচ্ছে মতো চলছে না,
তবু একটু থেমে দেখুন— আপনার জীবনেও কত আলো আছে।
একটা শিশুর হাসি, সকালের সূর্য, এক কাপ চা, প্রিয়জনের মিষ্টি কথা,
এই ছোট ছোট সুখই তো জীবনের আসল সৌন্দর্য।

ভগবানের কৃপায় আমরা আজও বেঁচে আছি, লিখছি, ভালোবাসছি।
এই তো জীবনের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ।


শেষে একটি প্রার্থনা

(ওম নমঃ শিবায়, ওম নমঃ শিবায়, ওম নমঃ শিবায়  হরে কৃষ্ণ, হরে  কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ ...রাধে রাধে রাধে )

“হে প্রভু, আজ শুধু এইটুকু দাও —
যাতে প্রতিদিনের ব্যস্ততার মাঝেও
আমি একটু সময় পাই নিজের সঙ্গে কথা বলার,
ভালোবাসার, হাসার, বাঁচার।”

আজকের উপলব্ধি:

"ক্লান্তি নয়, মনে চাই শান্তি;
আর শান্তি শুধু থামার মধ্যেই লুকিয়ে।"


আজকের ব্লগ এইটুকুই আবার ফিরবো আগামী কাল নতুন ব্লগে। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। 




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ