নিজেকেও কোনো কোনো সময় অবসর দেওয়া উচিত। প্রকৃতির মাঝে একলাই নিজেকে মেলে ধরুন।

 

12. 3.2025



হেরে যাওয়া মনে ব্যর্থতা নয়। হেরে যাওয়া মানে মুখ লুকিয়ে অন্ধের ঘরে নিজেকে বন্দি করে রাখা নয়। সব সময় যে আমাদের জিততেই হবে, এমন মাথার দিব্বি কে দিয়েছে? এবার একটু এই সব থেকে সরে আসুন। চেনা, পরিচিতর ভিড় থেকে সরে নিজেকে একটু আলাদা করে আবিষ্কার করুন। সবাই এর কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করে লক্ষ্য করুন চেনা মুখ গুলো আপনাকে খুঁজছে কিনা ... আপনাকে মিস করছে কিনা ? কারণ দূরে সরে গেলেই আপনি বুঝতে পারবেন আপন জন দের কাছে আপনি প্রিয়জন না কি প্রয়োজন। এত দিন তো সব করলে দুটো দিন না হোক ঘর থাক অগোছালো, না ই বা হোক ঘর দোর পরিষ্কার নাই বা এটেন করলেন দুটো দিন অফিস। নিজেকে নিয়ে একটু ভাবুন। এই দুটো দিন নিজেকে ভালোবাসুন। নীল রঙা সেই শাড়িটা পরে ফেলুন। হাত ভর্তি চুড়ি আর গলায় সেই সিলভার কালার এর ট্রেন্ডি নেকলেস টা। চোখে গাঢ় কাজল আঁকুন। ঠোঁটে দিন লিপস্টিক। চুল করে দিন উন্মুক্ত , খোলা আকাশে তাকে মেলতে দিন। এবার দেখুন তো নিজেকে আপনি সত্যিই চিনতে পারছেন কিনা? কি অবাক হচ্ছেন খুব তাই তো? হ্যাঁ, হ্যাঁ আপনি ঠিক এতটাই সুন্দরী। আয়না কখনো মিথ্যে বলে না। এবার বেরিয়ে পড়ুন প্রকৃতিকে ছুঁতে, দু হাত ভোরে প্রকৃতির রূপ , রস অনুভব করুন। প্রকৃতির গন্ধ গায়ে মাখুন। মাথা টা খুব রিফ্রেশ লাগবে। জীবনে নতুন করে বাঁচার ইচ্ছা জাগবে। আবার নতুন করে কাজে মন বসবে। হেরে যাওয়ার গ্লানি যাবে দূর হয়ে। প্রকৃতিকে ফেলে গন্তব্যে র উদ্যেশ্যে ফিরতে ফিরতে মনে হবে দূর... সফল কি সবাই একদিনেই হয়ে যায় না কি ... চেষ্টা করলাম কই... আবার পুরো উদ্যমে চেষ্টার অনুভূতি মনে জাগবে। মন হবে শান্ত। 

আসলে আমরা এত টাই নিজেদের চাপের মধ্যে রাখি একটু ব্যর্থ হলেই মুষড়ে যাই। প্রিয়জনদের সম্পর্কে এত ভাবে, এত কেয়ার করি তাদের কাছ থেকে সামান্য আঘাত পেলে আহত হই। আসলে আমাদের মন টাই তখন খুব অসুস্থ থাকে। তাই মাঝে মাঝে জীবনে চলার পথে এইরকম ব্রেক নেওয়ার প্রতিটা মানুষেরই প্রয়োজন। আমরা যুদ্ধ তো করছি সকলেই প্রতিনিয়ত। তাই মাঝে মাঝে সকলে এই ভাবে বিশ্রাম নেবেন। তবে  আবার নতুন করে পথ চলার এনার্জি পাবেন। 


সমাপ্ত 


মানুষ তার জীবনের ছোট বড় অনেক ঘটনাই ভুলে যেতে পারে। ছোটবেলায় ক্লাস মেটের সাথে পেন, পেন্সিল নিয়ে হাতাহাতি, কান্না কাটি, টিফিন টাইমে শেয়ার করে খাওয়ার খাওয়া এই  সবই সময়ের সাথে সাথে আমাদের স্মৃতি থেকে আলগা হয়ে যায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তর্ক , বিতর্কে আমরা নানা ভাবে নানা জায়গায় জড়িয়েছি। অপমানিত হয়েছি কোথাও কোথাও। কিন্তু সেসব এক সময় আমরা ভুলে গেছি। মনে রাখি নি। কিন্তু যাকে সবচেয়ে আমরা প্রিয়জন মনে করি তার করা অপমান, লাঞ্ছনা আমরা কখনো ভুলতে পারি না। তার বলা আঘাত করা কথা গুলো যেন সারা জীবন বুকের ভিতর বাজে। 


অপমান গুলো নিজেকে যেন আরো বেশি ছোট করে দেয়। মানতে পারা যায় না তার মুখ থেকে শেষ পর্যন্ত আমায় এই কথা গুলো শুনতে হলো? পারলো এভাবে আমায় বলতে? মুখে একটুও আটকালো না? মনে পড়লেই অজান্তে নোনা জলের ধারা গাল বেয়ে নেমে আসে। নিজেকে খুব অসহায় লাগে। গলার মধ্যে কিছু একটা মাছের কাটার মতো বেঁধে। স্বপ্নের মধ্যেও কেঁপে কেঁপে উঠি। সারা শরীর শিউরে ওঠে। গা কাঁটা দিয়ে ওঠে। একটা কঠিন জ্বরে র ঘরে মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে তুমি আমায় এই কথা গুলো বলতে পারলে? আমি কোনো দিন ও ভাবি নি তুমি এভাবে আমায়.....

তারপর রাত কাটে সকাল হয়। কিন্তু কষ্ট দায়ক কথা গুলো আমরা কোনোদিনও মুছে ফেলতে পারি না। আবার কোনো না কোনো মন খারাপের সুযোগে তারা আবার হানা দেয়। আমাদের কাঁদায়, কষ্ট দেয়, আঘাত দেয়। এ যন্ত্রনা ভোলার নয় । মানুষ ভালোবাসার মানুষ গুলোকে বুকে পাথর চেপেও ক্ষমা করে দিতে পারে। সরে যেতে পারে তার জীবন থেকে, তার সুখের জন্য। কিন্তু তার দেওয়া আঘাত গুলো কখনো ক্ষমা করতে পারে না। 


সমাপ্ত 


মেয়ে হওয়া অত সোজা নয় 

মেয়েদের জীবন অতীব কষ্টের। যারা ভাবেন নারীরা স্বাধীন তো হচ্ছে যত দিন যাচ্ছে তাহলে আবার নারী নিয়ে এখন ও লেখায় লেখায় এত প্রতিবাদ কেন। নারীরা লেখাপড়া শিখছে, অফিস, বিজনেস করছে ঠিক ই । রাস্তায় বেরোচ্ছে ঠিকই । কিন্তু আদেও কি তারা নিরাপদ এ আছে? একদম ই নয়। পরিবারে কন্যা সন্তান হলে আজকাল কার মা- বাবারা চায় সে যেন নিজের পায়ে দাঁড়ায়। প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু এই সবের দৌড়ে মা - বাবার পরিশ্রমে মেয়েটির অদম্য ইচ্ছায় সে প্রতিষ্ঠিত হলেও বাইরে বেরিয়েও অত্যাচারের স্বীকার হচ্ছে। ধর্ষণ করা হচ্ছে তাকে। খুন করে ফেলছে তাকে। কি ভাবে?? কি ভাবে মেয়েটির বাবা- মা সহ্য করবে এই যন্ত্রনা বলতে পারেন? যাকে তিল তিল করে কষ্ট করে লেখা পড়া শিখিয়ে বড় করেছে সমাজের উন্নতির জন্য পৃথিবীর উন্নতির জন্য যাতে তার মেয়ে একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থেকে যায় এটাই ছিল তার মা বাবার অভিলাষ। 


যাদের চোখে এত আশা, তারা কি করে মেনে নেবে সন্তান হারানোর শোক। যাকে দশ মাস দশ দিন কষ্ট সহ্য করেবড় করেছে চোখের সামনে মেয়ের এইরূপ বীভৎস মৃত্যু কি করে দেখবে তারা ? গা শিউরে ওঠে। লিখতে গেলে টপিক পরিবর্তন করতে মন চায়। 


মেয়ে হওয়া ওতো সোজা নয়...

জন্মাবার কিছু দিন পর ই তাকে সমাজের নিয়ম অনুসারে কান, নাক বেঁধানোর মতো কষ্ট সহ্য করতে হয়। মাসের ওইসব দিন গুলোতে পেটের যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়। 


বয়স কুড়ি পেরোনোর সাথে সাথেই বিয়ের প্রস্তাব আস্তে থাকে। পরিবারের শোচনীয় অবস্থা দেখে পড়াশোনার ইচ্ছা জলাঞ্জলি দিয়ে বিয়ে করতে হয় । একটা সম্পূর্ণ অন্য পরিবারকে আপন করে নিতে হয়। খুবই কষ্টের এটি। আমি তো একজন মেয়ে। খুব কষ্ট হয়ে মানিয়ে নিতে। 


সংসারের সব কাজ না পারলেও সময়ের সাথে সাথে সব কিছু শিখে নিতে হয়। নিদারুণ যন্ত্রনা সহ্য করে মা হতে হয়। একা হাতে বাচ্ছা মানুষ করা, পরিবারের সকলের পছন্দসই রান্না বান্না, জামা কাপর কাঁচা, টিফিন গুছানো, ঘর দর পরিষ্কার, ঠাকুর ঘর, সন্তান দের পড়াশোনা সামলানো আবার চাকরি বাকরি করলে সেটাও সামলাতে হয়। তারপর তো আসে সব কিছু করেও পরিবারের লোকেদের মুখ ব্যাকানি, চোখ রাঙানি, শাসন। সবটা মুখ বুজে সয়ে যেতে হয়। আর প্রতিবাদ করলেই তার জন্ম দাতা মা বাবা কে নিয়ে কথা শুনতে হয়। তাই শশুর বাড়ী তে মেয়েরা সব টা অপমান মাথা নত করে সয়ে নেয়। তারা না খেয়ে মরে যাবে তবু তারা মা বাবার কোনো অপমান শুনবে না। এই ভাবেই জীবনের শুরু থেকে শেষ অবধি কষ্ট সহ্য করেই তাদের কাটিয়ে দিতে হয়। 


সমাপ্ত 


একটা বয়সের পর আমাদের নিজেদের মনের ওপর নিজেদের যেন নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারি না। কখনো অকারণেই রাগ হয়, অভিমান হয়। কাজ করতে ইচ্ছা করে না, কিছুই ভালো লাগে না। কাউকেই যেন সহ্য হয় না। যেন মনে হয় বুকের ভিতর টা গভীর ক্ষততে রক্তাক্ত হয়ে গেছে। ইচ্ছে করে, ভীষণ ভীষণ কাঁদতে। কেঁদে কেঁদে নিজের মধ্যে থাকা অপূর্ণ আশা গুলো স্বপ্ন গুলোর , মায়া গুলোকে কান্নার জলের সাথে ধুয়ে বের করে দিই। কিন্তু পারি না। একটা সময়ের পর আর চোখ ফেটে জল আসে না। একাকিত্বের সময়ও আমরা কেমন যেন আড়ষ্ট হয়ে চুপ করে বসে থাকি। অনেক কিছুর হিসাব মেলানোর চেষ্টা করি। ছোট থেকে গান বাজনার শখ ছিল। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকার জন্য হয়ে ওঠে নি। অনেক অনেক জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার শখ ছিল। মা বলতেন এখন নয়। বিয়ের পর স্বামীর হাত ধরে সারা পৃথিবী ঘুরবি। তা আর হলো কই। স্বামী তো নিজের কর্ম জগৎ নিয়েই ব্যস্ত। আমার হিসাব মেলে না। আমি ভাবনার শহরের ভিড় ঠেলে বাস্তবে এসে দাঁড়াই। নিজেকে নিজে বোঝাই এই তো আমি বেশ আছি। সুখে ই আছি। মন দিয়ে সংসার করছি। খাচ্ছি, পরছি, বেঁচে আছি। আমার চেয়ে দুনিয়ায় সুখী আর ক জন আছে। দু বেলা দু মুঠো খাওয়ার জন্য যারা হাহাকার করে তার থেকে তো ভালো। আমার চেয়ে কত করুন পরিস্থিতির মধ্যে মানুষ বেঁচে আছে। বাঁচার জন্য লড়াই করছে। আমি তো তাদের থেকে ভালো আছি। আমি ভালো আছি আমার আমিত্ব টাকে মন থেকে গ্রহণ করতে পেরে।  তুমিভরা  জীবন ছাড়াও আমি বাঁচতে শিখে গেছি যে....

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ