( ছবি : গুগল)
বর্তমান সমাজে ভিউজ বাড়ানোর জন্য ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে অনেক কুরুচিপূর্ণ ভিডিও তে ভোরে গেছে। এর ফলে খুবই খারাপ প্রভাব পড়ছে যুবসমাজের ওপর। যারা সুন্দর সুন্দর রুচিশীল ভিডিও করেন, শিক্ষা মূলক লেখেন , উপদেশ দেন সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের ভিউ তুলনামূলক ভাবে অনেক কম। আর যারা ভিডিও, রিলস এ চূড়ান্ত নোংরামি করে বেড়াচ্ছে তারাই বেশি ভিউজ পাচ্ছে। এবং আয় ও করছে বেশি। আমার এই মন্তব্য দেখে এবার অনেকেই বলতে পারেন, আপনি ওই সব ধরণের নিচু মানসিকতা র রিলস দেখছেন বলেই আপ নার স্কিনে বার বার সেই সব ভিডিও দেখাচ্ছে। কিন্তু ব্যাপারটা তা নয়। আমি ব্লগে মানে অনলাইনে টুক টাক লিখি। সেই জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় অনন্য লেখা, ভিডিও ও দেখি। তাদের লেখা থেকে শিখি। মানে যে যেটা নিয়ে কাজ করে স্বাভাবিক ভাবেই সে সেটা নিয়ে গবেষণা করতে চাইবে। আর আমি যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়ায় এই গুলো দেখি এবং পড়ি তাই ওইসব ভিডিও লেখার পাশাপাশি ওই সব বাজে ভিডিও ও চলে আসে। আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই। এক একটা মেয়ে , মাঝ বয়সী বউ রা পর্যন্ত বাজে অঙ্গ ভঙ্গি দেখিয়ে রিলস ভিডিও বানাচ্ছে। মুখ চোখের সে কি ভঙ্গিমা। ঠিক এদের জন্যই কিছু কিছু পুরুষরা পেয়ে বসে। আর এই সব মহিলাদের জন্য গোটা সমাজ টা উছনে যাচ্ছে। আর এরা এইসব করে যতটা জনপ্রিয় হচ্চে একটা শিক্ষামূলক পোস্ট করে , রুচিশীল ভিডিও করে সে সেই জনপ্রিয় তা টা পাচ্ছে না। স্বাভাবিক ভাবেই যারা কষ্ট করে মানসম্মত লেখে, ভিডিও করে তাদের মন ভেঙে যাচ্ছে, উৎসাহ কমে যাচ্ছে। যারা ওই ভাবে বিকৃত ভিডিও করে টাকা ইনকাম করছে তারা এটা স্পস্ট কথায় নোংরা মি করছে। এই গুলো অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে ফেসবুকে অনেক লেখা পড়েছি খুব সুন্দর লেখা কিন্তু ভিউ কম। কিন্তু এত সুন্দর ভাবে মনের অভিব্যক্তি ফুটিয়ে তুলেছে যা আর ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। কিন্তু এই সব লেখা গুলো আড়াল পরে যায় বিকৃত কিছু রিলস ভিডিও ওর আড়ালে। এই সব ভিডিও দেখে মানুষের আরো যৌন লালসা বাড়ে। যে সব মেয়েরা ইঙ্গিত পূর্ণ কুরুচিপূর্ণ ভিডিও করে তারা ভগবানের আশীর্বাদে ভালো থাকে। তাদের ইনকাম ও বাড়ে। অশালীন ভিডিও দেখিয়ে বিনা পরিশ্রমে ই অনেক অনেক টাকা রোজগার করে। তাই তাদের পরিশ্রম করতে হয় না। আর যে সকল মেয়েরা স্বাবলম্বি হওয়ার জন্য বাইরে বেরোচ্ছে চাকরি, ব্যবসার জন্য তারাই যৌন নির্যাতন এর শিকার হচ্ছে। তাদের ই ধর্ষিত হতে হচ্ছে। অথচ যারা উস্কানি মূলক ভিডিও করছে, লিখছে তারা সেভ আছে। আমি বলছি না শুধু মাত্র ওই সব উত্তেজনা পূর্ণ ভিডিও দেখেই রেপ করছে। পৃথিবীতে খারাপ মানুষ তো আছেই কিন্তু এই সব ভিডিও, অডিও, লেখনী আরো বেশি মানুষকে খারাপ করে দিচ্ছে। এখনকার কার্টুন ভিডিও গুলোতেও খারাপ খারাপ কন্টেন্ট তৈরি করা হচ্ছে। আমি আমার ছেলেকে একটু কার্টুন দেখতে দিই। কিন্তু আমি দেখলাম কার্টুন দিয়েও সেইসব ভিডিও দেওয়া শুরু হয়েছে। সমাজ টা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আসল জিনিসের কদর নেই। উত্তেজনা ভিডিও তে লক্ষ লক্ষ লাইক, কমেন্ট, শেয়ার। আর শিক্ষা মূলক, উপদেশ মূলক ভিডিও, লেখনীতে শয়ে লাইক, কমেন্ট। তাছাড়া সোশ্যাল ।মিডিয়া টাকে মানুষ যেমন ইচ্ছা ব্যবহার করছে। কেও বা ভগবানের ছবি দিয়ে বলছে এই ছবি শেয়ার না করলে আপনার জীবনে বিপত্তি আসবে, বিপদ আসবে। আরে, বাবা ভগবান কে সবাই
মানে, সবাই ভক্তি করে। ভগবান এর বাস সকলের অন্তরে। তাকে ডাকার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখিয়ে দেখিয়ে শেয়ার করে নিজের ভক্তি লোক কে দেখালে তবে সেটা ভগবানের প্রতি সে বিশ্বাসী তা প্রমাণিত হয়। নাহলে নয়? আপনারাই বলুন? ফেসবুক খুললেই এই রকম শেয়ার করার ভিডিও আসে কি না? কি সব হচ্ছে যুগ টায় কি জানি। ভালোর কদর এরা কেউ দিতে জানে না। বর্তমান সমাজ একটা ভয়ংকর খেলায় মেতেছে। বিজ্ঞানের উন্নতি টাকে সৎ কাজে না লাগিয়ে তার অপব্যবহার করছে।
অথচ যারা প্রকৃত জ্ঞানী, পরিশ্রমী তারা কেবল সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে ই জীবনে কত উন্নতি করেছে।
অনেক অভাবী ঘরের ছেলে মেয়েরা ইউটিউব থেকে পড়াশোনা করে জয়েন্ট এ সফল হয়েছে। মেডিক্যাল এ চান্স পেয়েছে। সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিয়ে পাশ করেছে। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমি চাই ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক এ এই সব চর্চা হোক। গান, বাজনা, নাটক, নাচ, শিল্পকলা, রন্ধন , আরো অনেক কিছু একটিভিটি যে গুলো মানুষকে আনন্দ দেয়, যা থেকে শেখা যায় সে গুলো হোক। মোট কথা হাফ উলঙ্গ ড্রেস পরে নাচা নাচি, অসভ্য কন্টেন্ট বন্ধ হোক। আরো এক ধরণের ভিডিও আছে সে গুলোতে আবার আট দশ বছরের ছেলে মেয়ে দের দিয়ে বাজে বাজে কন্টেন্ট তৈরি করানো হয়। তাদের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যাও বেশি। এদের কন্টেন্ট দেখতে বাচ্ছারা বায়না করে। আর আমাদের মতো ভদ্র পরিবারের লোক জন রা তা করতে দিই না। এই নিয়ে অশান্তি হয়। ভবিষৎ প্রজন্ম টাকে একদম উচ্ছনে নিয়ে যাচ্ছে যারা এই সব কন্টেন্ট বানাচ্ছে।
ইউটিউব, ফেসবুক মানুষকে সত্যি ই অনেক বেশি উপকার করেছে। অনেক ইউটিউব চ্যানেল থেকে আমি রান্না শিখেছি। তার জন্য আমি ইউটিউব এর কাছে অনেক কৃতজ্ঞ। আমার যখন বিয়ে হয় আমি রান্নার প্রায় কিছুই জানতাম না। কিন্তু শাশুড়ি মা কেও ভয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করতে পারতাম না। তখন আমি ইউটিউব এর সাহায্যে সব রান্না শিখেছি। শশুর বাড়ির কেউ জানতেও পারে নি আমি রান্না একদমই জানতাম না। ইউটিউব দেখে এত সুন্দর রান্না করে দিতাম। এখন নিজে নিজেই পারি। তবু নতুনত্ব রান্না আমি এখনো ইউটিউব, ফেসবুক থেকে দেখি শিখি। রান্নার বিভিন্ন টিপস গুগল সার্চ করে পড়ি। আমার ছেলের কিছু পড়াশোনা বিষয়ক কিছু জানতে গেলেও ইউটিউব এর সাহায্য নিই। এই সমস্ত কাজে আমায় সোশ্যাল মিডিয়া থেকে খুব হেল্প পাই। কিন্তু আমি দেখেছি এই সব ভিডিও গুলোর ভিউ তুলনামূলক ভাবে কম। আর অশালীন ভিডিও গুলোয় লাখ লাখ ভিউ। এই গুলো আমার ভীষণ খারাপ লাগে। মানে শিক্ষা র কোনো দাম নেই। গালি গালাজ দেওয়া ভিডিও র এত দাম। তাহলে মানুষ শিক্ষিত হওয়ার চেষ্টাই করতে চাইবে না। মানুষ তো বিনা পরিশ্রমেই এবার ইনকাম করতে চাইবে। শরীর দেখিয়ে, বিকৃতি ভিডিও করে যদি বেশি রোজগার করা যায় মানুষ তো ভাব বেই তাহলে আর বেশি শিখে, পড়ে কি হবে? এই ভাবেই ইনকাম করবো। এই ভাবেই একটা গোটা প্রজন্ম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই সেইসকল ভিডিও, অডিও, লেখনী অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। সমাজের উন্নতির জন্য। আগামী জন্মের জন্য। আপনারা কি বলেন ? আপনারাও কি আমার সাথে একমত? তাহলে কমেন্ট এ জানাতে ভুলবেন না।
আমি ও তো অন লাইন এ অনেক দিন ধরেই লেখালিখি করি। আমি কিন্তু একটাও বাজে কন্টেন্ট লিখি নি। আমি নিজের অনুভূতি গুলো আজ লিখলাম। আমি অনলাইন থেকে যে সমস্ত জিনিস শিখেছি জেনেছি এবং নিজের জীবনে যা কাজে লাগিয়েছি তা হলো -- রান্না শিখেছি, স্পোকেন ইংলিশ শিখছি, রূপচর্চা, পড়াশুনা বিষয়ক পোস্ট, বিভিন্ন আর্ট এন্ড ক্রাফট শিখেছি। যখনই কিছু জানতে চেয়েছি হেল্প পেয়েছি। অনেক সাহিত্য মূলক , প্রতিবাদী লেখা পড়েছি। মোট কথা আমি সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে অনেক বেশি মোটিভেটেড হয়েছি।
আমার ছেলেও ইউটিউব , ইনস্টাগ্রাম থেকে অনেক আঁকা দেখে দেখে করে শেখে। আপনারা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে উপকৃত হয়েছেন কি? আমায় কমেন্ট বক্সে লিখে জানাতে পারেন। আমি আপনাদের কাছ থেকে একটা কমেন্ট এর অপেক্ষায় থাকি। আপনারা পাশে থাকলে আমি উৎসাহ পাই। আমি তাই চাইছি যারা প্রকৃত যোগ্য এই সোশ্যাল মিডিয়ায় কাজ করে তাদের প্রকৃত অর্থ দেওয়া হোক। আর যারা সমাজকে কুলষিত করছে তাদের এ থেকে বঞ্চিত করা হোক। অভাবে অনেকে ভিডিও করে জানি। তারা তাদের শালীনতা বজায় রেখে ভিডিও করুক, সম্মানের সাথে কাজ করুক। এইটুকুই আমার চাওয়া।
আমার ব্লগের প্রতিটা লেখা গুলো সকলকে পড়তে অনুরোধ করছি। খুবই বাস্তব সম্মত লেখা আমি লিখি। সমাজে যা দেখি, যা অনুভব করি সে টুকুই লিখি। নিজের ভাবনা চিন্তা দিয়েই সাজানো আমার ব্লগ। এটা আমার আর একটা সন্তানের মতো। আপনাদের আশীর্বাদে আমি অনেক দূর ভবিষ্যতে এগিয়ে যাব এটাই আমার লক্ষ্য। আপনারা সকলে আমার পাশে থাকবেন। এইটুকু অনুরোধ আমার রাখবেন সকলে।
রোজকার জীবনের টুকরো টুকরো কোলাজ দিয়েও ব্লগ টা একটু সাজাতে চাই। আমার দৈনন্দিন জীবনের কিছু কিছু অংশ ও এখানে শেয়ার করি। সেই সূত্রেই বলছি আমি এখন বাবার বাড়ি আছি। এক সপ্তাহ ছুটিতে এসেছিলাম। আগামী কাল ই বাড়ি চলে যাবো। তাই মন টা একটু খারাপ। একটা সপ্তাহ মানে অনেক গুলো দিন। এত গুলো দিন এখানে কাটিয়ে গেলে খুব মন খারাপ হয় আমার। যাই হোক কিছু করার নেই। মেয়েদের জীবনটাই এইরকম। গতকাল এখানে বিরিয়ানি করেছিলাম। আমি আমার এক বান্ধবী আমার জেঠ তুতো দিদি সবাই মিলে। এখানে আসলে এই মজা গুলোই ভালো লাগে। তার আগের দিন পাড়ার সব বান্ধবীরা মিলে ফিস্ট করলাম। ওদের ও সব বিয়ে হয়ে গেছে। আমরা সব যুক্তি করে ফোন করে একই সময় বাবার বাড়ি আসি। তাই খুব ভালো কাটে দিন গুলো। আমার ছেলের যেমন সাত বছর বয়স। তাদের ছেলে মেয়ে গুলোরও ছয়, সাত, পাঁচ এইরকম। সবাই তাই ওরাও সমবয়সী। ওরাও বেশ হৈচৈ করে। বেশ কাটে দিন গুলো। এখন সন্ধে বেলা। টিভিতে জি বাংলার পরিনিতা সিরিয়াল হচ্ছে। আমি ব্লগ লিখছি। মা বাপি দেখছে। আমি টিভি দেখি না। আমি ব্লগ লিখছি। কাল সকাল বেলাতেই বাড়ি চলে যাবো। আবার নিজের ঘর, সংসারে ফিরে যাওয়া। কি কঠিন মেয়েদের জীবন। তাই না? বুক টা এখন থেকেই কেমন হচ্ছে। যত বার ই আসি কত আনন্দ নিয়ে আসি। আর কি অপরিসীম কষ্ট বুকে চেপে রেখে ফিরে যাই। আমি মা, বাবার একমাত্ৰ সন্তান। তাদের রেখে যেতেও খুব কষ্ট হয়। কিন্তু কি করবো মেনে নিতে হয়। কি বলবো। অনেক কষ্টে নিজের মনে নিজে লিখি। মানুষ যখন নিজের কথা গুলো কাউকে বলতে পারে না তখন ই কলম হাতে তুলে নেয়। আমিও ঠিক তাই করছি।
আজ সারাদিন ঝিমঝিম করে কম বেশি বৃষ্টি হয়েছে। জানি না কাল কি হবে। বৃষ্টি হলেও ফিরতে হবে। আসলে বাই কে করে যাবো তো তাই ভাবছি। ঠিক আছে। আজ এই পর্যন্ত ই আবার কাল আসবো নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে। আপনারা ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। শুভ রাত্রি।
0 মন্তব্যসমূহ