18 মার্চ 2024
সকলকে আর একটা নতুন সকালের শুভেচ্ছা জানিয়ে আবার একটি নতুন ব্লগ একটি নতুন পথ চলার অঙ্গীকার নিয়ে চলে এলাম আপনাদের সাথে কিছুক্ষন সময় কাটাতে। নতুন দিন মানেই তো নতুন করে এগিয়ে চলা, নতুন কিছু শেখা, নতুন কিছু ভালো লাগার মুহূর্ত গুলোকে জীবনের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রাখা। খারাপ মুহূর্ত গুলোর সাথে মোকাবিলা করে নিজেকে এগিয়ে চলা। এইভাবেই সুখ, দুঃখ সব অনুভূতি গুলোকেই সঙ্গী করে আমাদের এগিয়ে যেতে হয়। কোনো একটা সকাল, কোনো একটা দিন যেমন আমাদের কাঁদায় তেমনি কোনো একটি সকাল হয়ে ওঠে আমাদের আনন্দের কারণ। এরই নাম জীবন। এরই নাম সংসার। আমরা সবাই সংসারে ব্যস্ত। এই জগৎ সংসারে প্রতিটি প্রাণীরই কর্ম আছে। প্রাণীরা সামান্য খাদ্য সংগ্রামের জন্য লড়াই করছে। সদ্য জন্মানো বাচ্চাটা কিভাবে মায়ের দুধ খেতে হবে সেই কাজটাই শেখার আপ্রাণ চেষ্টা করে তার মায়ের বুক জড়িয়ে। আবার আর একটু বড় বাচ্ছাদের শিখতে হয় কি ভাবে কথা বলতে হয়, কিভাবে হাঁটা শিখতে হয় , আর একটু বড় হলে সে পড়াশোনার জগতে পৌঁছে যায়। তখন তার আরো কাজ। নিত্য নতুন বিষয় আয়ত্ত করা , শেখা এই নিয়েই জীবনে একটু একটু করে বড় হতে থাকে সে। আর এইভাবেই সে আরো বৃহত্তর কর্ম জীবনে প্রবেশ করে। বাধা আসবে, বিপত্তি আসবে , পরিস্হিতি অনুকূল থাকবে না সবসময়। তবু আমাদের সব কিছুর সাথে লড়াই করেই এগিয়ে চলতে হবে। আর এই ভাবেই আমরা যে কোনো কিছুতেই সফলতা অর্জন করতে সক্ষম।
কেউ ছেড়ে চলে গেলেই কি জীবন থেকে সব টুকু শেষ হয়ে যায়?
বয়ঃসন্ধি কালেই বলুন কিংবা কোনো কিছু খারাপ পরিস্থিতির চাপে, কিংবা অভাবে অনেকেই আত্মহননের পথ বেছে নেয়। এটা কিন্তু একদমই কাম্য নয়। কারণ আমাদের নিজেদের জীবন টাই একটা গোটা পৃথিবী। অনেক সাধনার ফল আমাদের এই মনুষ্য জীবন। নিজের হাতে এই মূল্যবান সম্পদ টাকে যারা নিজেরাই খুন করে তাদের মতো মূর্খ এই পৃথিবীতে আর কেউ নেই। আপনারা ভাবছেন মুখে বলা খুব সোজা ,যাদের জীবন দিয়ে এই সব কষ্ট গুলো গেছে তারাই বোঝে এর জ্বালা। আমিও কিছু কিছু কষ্টের সম্মুখীন হয়েছি । কেঁদেছি, কষ্ট পেয়েছি, শরীর খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তবু আমি জানেন তো মনের দিক থেকে অনেক স্ট্রং।
আমি ছোট থেকেই অভাব খুব কাছ থেকে দেখেছি । দুটো মারি বিস্কুট খাওয়াও সকালে তখন স্বপ্ন ছিল। প্রাইভেট টিউটর রা কম টাকায় পড়িয়েছেন। দাদা যার জীবিকাই হলো প্রাইভেট টিউশন করা তিনিও প্রথম থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত সায়েন্স গরুপ বিনামূল্যে পড়িয়েছেন। মামারা অনেক অৰ্থিক সাহায্য করেছে ন। অভাবের তাড়নায় অনেক সুপ্ত ইচ্ছা পূরণ হয় নি। যদিও আপনারা বলবেন অর্থ বড় কথা না। ইচ্ছে টাই সব। যদি তাই ই হয় বন্ধুরা আমি আমার ইচ্ছে পূরণ এর রাস্তাটা খুঁজে পায় নি। এখন যেমন সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে দুনিয়াটা হাতের মুঠোয় গুগুল সার্চ করলে বিভিন্ন টপিক নিয়ে পড়াশোনা , কোথায় ভর্তি হতে হবে, কিভাবে হবে সব মিনিটের মধ্যে জেনে যাবো তখন তো অতটা ছিল না। মানে আমায় তেমন কেউ গাইড করার মতো ছিল না। তারপর নিজের ভাগ্যও আমার সাথে পরিহাস করেছে। ইতিহাসে উচ্চ মাধ্যমিক এ কম পেয়েছিলাম । অনার্স করতে পারলাম না নিজের প্রিয় বিষয় নিয়ে। সে এক ব্যর্থতা। অনেক কিছুই জীবনে অপূর্ণ রয়ে গেছে। রয়ে গেছে প্রথম কিশোরী জীবনে বিচ্ছেদের যন্ত্রনা। আরো হতাশা, অবসাদ সবই আমায় ঘিরে ছিল। একটা চাকরি না পাওয়ার যন্ত্রনা সব। অনেক কিছু । এইরকম ঘটনা আমাদের জীবনের প্রায় সকল এর সাথেই হয়। আমারও হয়েছিল।
কোনো এক সময় গেছে খুব করে কেঁদেছি। ভগবান এর কাছে মাথা নত করে বারবার বলতে চেয়েছি কেন আমার সাথেই এইরকম হয়। কেন ঠকে যেতে হয়! কেন প্রতারিত হতে হয়! lকেন আমায় মিছে স্বপ্ন দেখায় কেনই বা আমার ব্যর্থতায় আসে পাশের লোক ব্যঙ্গ করে? অবসাদে অবসাদে নিজের লাইফের অনেক ডিসিশন ভুলভাল নিয়েছি। কিন্তু মরে যেতে চাই নি , বিশ্বাস করুন আমি কোনো দিন ও মরতে চাই নি। কেন জানেন ভগবান বলেও একজন উপরে আছেন। তিনি সব দেখছেন । সব কিছু র বিচার তিনি ঠিকই করবেন। সেই সর্বশক্তি মানই আমায় বাঁচার প্রেরণা দেয়। নতুন করে স্বপ্ন দেখায়। ভেঙে না পড়তে শেখায়।
আমি কর্মে বিশ্বাস ই। আমার হাত আর মস্তিস্ক সব সময়ই চলে। আমি সারাদিন কিছু না কিছু নিয়ে সব সময় ব্যস্ত থাকি। নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত বলতে সংসারের কাজ, ছেলের পড়াশোনা, নিজের লেখালিখি, একটু আধটু সেলাই, টুকিটাকি রূপচর্চা এইসব রান্নাবান্না তো আছেই। এতে আমার টাইম টাও কেটে যায়। আর অন্যের সমালোচনা করার সময় ও থাকে না। আমি শুধু নিজে কিছু রোজগার করতে পারি না। বাদ বাকি আমার সময় গুলো আমি ঠিক কিছু না কিছু তে কাজে লাগাই।
আমার যেখানে বিয়ে হয়েছে এখান থেকে স্টেশন আরো ২০ মিনিট তারপর ট্রেন। সন্ধেয় বেলায় পুরো কম জন লোক যাতায়াত করে। আসা যাওয়ার খুব প্রবলেম। তাই আর চাকরির দিকে ঝুঁকতে চাই না। তাছাড়া ছেলেকে নিজেই পড়াই, নিজের ছেলের পুরো দায়িত্ব আমার। তাই আর সময় কই। একটাবাচ্ছার পিছনে কত সময় দিতে হয় বলুন তো?
তারপর তো চাষে ধান, আলু, তিল, সর্ষে, কাঁচা অনাজ চাষ হয়। তাতেও একটু আধটু সময় দিতে হয়। চাষের কাজ করতে কিষেন লাগে তাদের জল খাবার করা খেতে দেওয়া। অনেক বাড়তি কাজ আছে।
তবে সারাদিনের পর একটু নিজের প্রাণের কথা গুলো উজাড় করে দিতে পারলে শান্তি । তাই তো লিখি। আমার ব্যর্থতার সেইসব দিন গুলোতে আমি প্রচুর লিখেছি। নিজের মনের কথা গুলো যদি এইভাবে লিখে দেন দেখবেন অনেকটা হালকা লাগছে নিজেকে। আমি জানেন তো লিখতে বসলে লেখার সুর তাল সব হারিয়ে ফেলি। মনের সুখে নিজের অনুভূতি গুলো লিখে যাই। আমার মূল বক্তব্য হলো কেউ যদি আপনাকে ছেড়ে চলে যায়, তার জন্য আপনি নিজের জীবনটা শেষ করে দেবেন না। নিজেকে আবার ঘুরে দাঁড়াতে অপনাকেই হবে। আপনাকেই নিজের চোখের জল নিজে মুছতে হবে। কারণ ভুল মানুষটার সুখ দুঃখের ভাগিদার হয়ে ঠকেছেন আপনি। আপনি নিজের কর্মকান্ড এর দ্বারা সমাজের গন্যব্যক্তিদের কাছে যেন ভালোবাসার মানুষ হতে পারেন সে চেষ্টা করবেন। নিজেকে সব সময় কর্মব্যস্ততার মধ্যে ডুবিয়ে রাখাই আসল বুদ্ধিমানের কাজ। জীবন একটাই । তাকে অনুভব করুন। আনন্দে থাকুন। নিজের ইচ্ছে গুলোর দাম দিন। নিজের স্বপ্ন গুলোকে পূরণ করার চেষ্টা করুন। হাসুন, ঘুরতে বেরন, নিজের কিছু শখের জিনিস শেখার থাকলে শিখুন। শেখার তো কোনো বয়স হয় না। আমি এখনো অনেক কিছু শিখি। বর্তমানে আমি স্পোকেন ইংলিশ শিখছি। জানার ইচ্ছে প্রবল থাকলেই বাঁচার ইচ্ছা চরম হয়। জীবনটা আনন্দময় লাগে। লেখালিখি আমার একটা শখ। আমার এতে টাইম দিতে খুব ভালো লাগে। মানে অনেক মানুষ যারা বাড়িতে থাকেন অনেকে এই সময় ভাত ঘুম দেয়। আমি লিখি। নাহলে কারো লেখা পড়ি।
যাক, আজ অনেক কথা শেয়ার করলাম। আপনাদের আমার বকবকানি কেমন লাগছে জানাবেন? আজকের কিছু ছবি শেয়ার করলাম।
আমাদের গাছের ফুল
(এই দোপাটি ফুল দুটো ছোট্ট গাছে আজ হয়েছে। ভীষণ মিষ্টি রং।)
আমাদের গাছের ফুলের কিছু ছবি দিলাম। আর দিলাম আমাদের বাড়ির কিছু ছবি।
(এই আমাদের বাড়ির উঠোন। পেঁয়াজ শুকছে। কাঠ পাতা শুকছে।)
দেখুন বন্ধুরা
উঠোনে সেই পেঁয়াজ গুলো আবার শুকোতে দেওয়া হয়েছে। আমাদের বারান্দা টা কতটা বড় দেখুন।
(বাইরের উঠোন। এই জায়গা একটু ধুলো হয়। কিছু করার নেই। যত বার মোছা হবে একই অবস্থা। পাশেই উঠনটার জন্য। )
কিন্তু আপনারা বলবেন ধুলো । আসলে একটু আগেই মোছা হয়েছে। উঠোনে পেঁয়াজ, কাঠ, পাতা শুকছে। মাঠের ধুলো এইসব এসে আবার ধুলো করে দেয়।
আজ এই পর্যন্ত ই । আবার আসবো নতুন ব্লগ নিয়ে। ভালো থাকুন সকলে।
0 মন্তব্যসমূহ