- প্লিজ, ইন্দ্র এইরকম করো না।
- উমম ! এই সময় বাধা দিও না উর্মি।
উর্মি অনেক চেষ্টা করলো নিজেকে ইন্দ্র এর কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিতে । কিন্তু পারলো আর কই
আসতে আসতে উর্মিও নিজেকে সপে দিল ইন্দ্রের কাছে।
ইন্দ্রের উষ্ণ নিশ্বাস টা যখন উর্মির বুকে এসে পড়ছিল, উর্মির ও শরীরে একটা উত্তাজনার সৃষ্টি হচ্ছিল। উর্মি নিজেকে বার বার বোঝানোর চেষ্টা করছিল বিয়ের আগে এইরকম কিছু করা উচিত নয়। কিন্তু ও ইন্দ্রের কাছে সর্বোপরি নিজের যৌবনের কাছে ও হার মানলো।
ইন্দ্র যখন ওর ঠোঁটে ঠোঁট স্পর্শ করল একটা নোনা জলে আবেগ চোখের পাশ দিয়ে গড়িয়ে পড়েছিল। তির তির করে কাঁপছিল ওর ওষ্ঠ যুগল। চোখ আবেশে বুজে আসছিল।
আর ইন্দ্র যখন উর্মিকে ওর বুকে জড়িয়ে ধরলো ওই মুহুর্ত টুকুতে উর্মি উন্মাদ হয়ে গিয়েছিল। পাগলের মতো উর্মিও জড়িয়ে ধরেছিল ইন্দ্র কে। গলায়, ঘাড়ে চুম্বন এ চুম্বনে উর্মিকে প্রেমে, ভালোবাসায় নেশাগ্রস্ত করে দিয়েছিল ইন্দ্র। এই কুড়ি বছর বয়সে এই প্রথম দুজন দুজনের এত কাছাকাছি এলো ওরা। ভালোবাসায় ভালোবাসায় দুটি হৃদয় থেকে দুটি শরীর একাকার হয়ে মিশে যেতে চাইলো। ইন্দ্র একটানে চুরিদারের ওড়নাটা উর্মির বুকের কাছে থেকে সরিয়ে দিল। সুউচ্চ বক্ষ যুগলের ঘাচ টা সঙ্গে সঙ্গে ইন্দ্রর দৃষ্টি আকর্ষণ করলো। উর্মির সেইদিকে লক্ষ্য পড়তেই ও লজ্জায় সঙ্গে সঙ্গে ওড়না টা মেঝে থেকে কুড়োতে নিচু হতেই সেই ঘাচ আরো সুস্পষ্ট হয়ে ধরা দিল ইন্দ্রের কাছে। ইন্দ্র সজোরে হাত দিয়ে টেনে উর্মিকে আবার নিজের আয়ত্তের মধ্যে নিয়ে এল। উর্মির আর ওড়নাটা নেওয়া হলো না।
- কি হচ্ছে কি ইন্দ্র? তুমি এই জন্য বুঝি আমায় বাড়িতে ডেকেছিলে? আগে জানলে ....
- আগে জানলে কি? কি করতে বলো উর্মি...
- আগে জানলে আমি আসতাম না।
- তুমি আমায় ভালোবাসো না উর্মি?
ইন্দ্রের চোখে চোখ রেখে উর্মি বললো, বাসি তো তোমায় খুব ভালোবাসি।
- তাহলে ক্ষতি কি?
- ক্ষতি মানে?
- দুজন দুজনকে ভালোবাসি। আমাদের মনের যখন মিল আছে , শরীর এর মিলন হলে কি হবে?
ইন্দ্রের ঠোঁটে হাত দিয়ে উর্মি বলে এ হয় না ইন্দ্র। আমরা এখন অবিবাহিত।
- বিশ্বাস থাকলেই খুব হয়।
- তবুও
- তুমি কি আমায় এখনো বিশ্বাস করো না উর্মি?
- খুব করি। খুব বিশ্বাস করি। ভালোবাসি।
-আর কোনো কথা নয় উর্মি
এবার দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট দিয়ে গভীর চুম্বনে লিপ্ত হয়েছিল।
মাঝে কেটে গিয়েছিল কিছুটা সময়।
বিছানায় শুয়ে উর্মি অর্ধনগ্ন অবস্থায় ইন্দ্রের বুকে মাথা রাখলো। ইন্দ্রের শার্ট খোলা বুকে নিজের মাথা রেখে উর্মি একটু শান্তি খুজছিল। একটা পরম তৃপ্তি পাচ্ছিল। ইন্দ্র ক্লান্ত হয়ে শুয়েছিল। তখন ও উদ্দাম শারীরিক মিলনের শেষ রেশ টা দুজনের মধ্যেয়েই বহমান। উর্মির খোলা চুলে বিলি কেটে দিচ্ছিল ইন্দ্র।
- ইন্দ্র !
- হমম ! বলো
- কি সব হয়ে গেল ক্ষনিকের ভুলে
- ভুল! ভুল তো কিছু না। আমরা তো দুজন দুজনকে ভালোবাসি।
- কিন্তু বিয়ের আগে....
- সেই এক কথা উর্মি । এটা যদি বিয়ের পর হতো তাহলে তো এটা নিয়ে তুমি এত মাথা ঘামাতে না তাই নয় কি ?
- হমম... সে তো একশবার মাথা ঘামাতাম না।
- উর্মি প্লিজ, অন্য ছেলে দের মতো আমায় খারাপ ভেবো না।
উর্মি ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। ওর অর্ধনগ্ন শরীর টা কে তুলে ইন্দ্র উঠে বসলো। উর্মিকে জড়িয়ে ধরে বলল,
- ভালো বাসায় মনের মিল ই বলো আর শরীর এর মিল ই বলো কোনো কিছুই অশালীন নয় উর্মি। ভালোবাসার মানুষ টা যদি তোমায় শ্রদ্ধা করে ভালোবাসে সেখানে শারীরিক মিলন পাপ নয়। হ্যা , আমি মানছি বিয়ের আগে এইসব করা উচিত হয় নি। কিন্তু আমি যে তোমায় ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি। আমি তোমায় কখনো ঠকাব না বিশ্বাস রেখো। এই টুকু বিশ্বাস আমায় করো প্লিজ উর্মি। তুমি ফ্রেশ হয়ে এস। আরো কিছু কথা আছে তোমার সাথে।
উর্মি এতক্ষন নিজের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সচেতন ছিল না। ইন্দ্র বলাতে ও এবার লজ্জা বোধ করলো। ছুটে গিয়ে বাথ রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এলো।
ফ্রেশ হয়ে উর্মি কিচেনে গেল চা করতে। দু কাপ চা করে আনলো ইন্দ্রের কাছে।
চায়ে চুমুক দিয়ে ইন্দ্র বললো, আমি জানি উর্মি তুমি অনাথ। তাই নিজেকে সব সময় গুটিয়ে রাখতে পছন্দ করো। তুমি ভাব আমি হয়তো তোমায় ব্যবহার করতে চাইছি। কিন্তু আজ এই ফাঁকা বাড়িতে কেন তোমায় ডেকেছিলাম তুমি জানো?
- আজ তোমার আমার আমার মায়ের এই তিন জন এর একটা খুশির দিন।
উর্মি অবাক হয়ে বলল খুশির দিন মানে?
উর্মির মনে পড়ে গেল, ও ইন্দ্রের বাড়ি ঢোকার সময় দেখেছিল ইন্দ্রের মা কোথায় বেরছেন।
উর্মি জিজ্ঞাসা করেছিল মাসিমা কোথায় যাচ্ছেন।
উনি বললেন - একটু বোস। আজ শুভ দিন। একটু পুজো দিয়ে আসি। এখুনি চলে আসব। পালিয়ে যাস নি যেন। প্রসাদ খেয়ে যাবি।
উর্মির মুখ টা খুশিতে জ্বল জ্বল করে উঠলো , ইন্দ্রের হাত ধরে ঝাঁকিয়ে বললো কি খুশির খবর বলো না।
- ওহ! উর্মি চা টা এখুনি পরে যেত।
- ওহ ! সরি ! প্লিজ বলো কি খুশির খবর?
- আমি বলছি
ইন্দ্রের মায়ের গলায় উর্মি ও ইন্দ্র দুজনেই চমকে উঠলো।
উর্মি ইন্দ্রের মায়ের কাছে এসে দাঁড়াল।
- আগে দুজনে প্রসাদ নে।
উর্মি প্রসাদ টা খেয়ে মাসিমার মুখের দিকে চাইলেন। দেখলো ইন্দ্রের মায়ের চোখে জল।
- মাসিমা আপনি কাঁদছেন কেন? কি হয়েছে? আপনার কি কোনো কষ্ট হচ্ছে?
- না রে মা... যে আনন্দের অশ্রু। আমার বাপ মরা দুঃখিনী ছেলে টা যে আজ পুলিশে চাকরি পেয়েছে। তুই এবার তোর যোগ্য স্বামী পেলি রে মা।
উর্মিরও চোখ দিয়ে জল পড়তে থাকলো।
ইন্দ্র আর উর্মি দুজনেই মা কে প্রণাম করলেন।
আর গর্ভধারিণী মা কে সাক্ষহী রেখেই ঠাকুরের সিঁদুরে ইন্দ্র রাঙিয়ে দিল উর্মির সিঁথি। এই ভাবেই ভালোবাসা পেল পরিণতি।
সমাপ্ত
0 মন্তব্যসমূহ