অকৃতজ্ঞ পর্ব - ৫
ফ্রেশ হয়ে ঊষা আর নিশা নিচে নেমে এলে দেখে রিতা দেবী খাবারের থালা সাজিয়ে বসে আছেন। ভিতরে ভিতরে রাগ থাকা সত্ত্বেও মুখের মধ্যে হাসির প্রলেপ এঁটে রিতা দেবী মিষ্টি করে বললেন, এসো ঊষা এই আসন টায় বসো। বৌমা ঠাকুর ঘর থেকে প্রদীপ টা নীল কে নিয়ে আসতে বলো। আর হ্যা, শাখ টাও নিয়ে আসতে বলবে। তুমি যেন যেও না সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে সেই তিন তলায়। নীল কে বলো আনতে।
হতভম্ব হয়ে ঊষা জিজ্ঞাসা করলো, আন্টি ডাইনিং এ চেয়ার , টেবিল থাকতে নীচে আসনে কেন বসবো?
পাশ থেকে নিশা , ঊষাকে চিমটি কেটে বললো, এটাই সংস্কার । মা তো তোকে এখন আশীর্বাদ করবেন। চুপচাপ বসে যা।
ঊষা ফিসফিস করে নিশার কানের কাছে গলা নিয়ে গিয়ে বলল, উফফ! তোরা পারিস ও দিদি। কি করে যে এই বুড়ি টাকে তুই সহ্য করে আছিস...
নিশা চোখ বড় বড় করে ঊষা কে আলগা শাসন করলো।
ঊষা আর কথা না বাড়িয়ে মেঝেতে পাতা আসনে এসে বসলো।
- মা, এইযে তোমার প্রদীপ, ধান দুর্বারথালা, শাখ।
- এনেছিস নীল। নিয়ে আয়। আমার পাশে রাখ।
- হোয়াট ইস দিস আন্টি? এইগুলো সব কি?
নিশা , ঊষাকে থামানোর জন্য সঙ্গে সঙ্গে বলে, এইগুলো মাথায় দিয়ে বড়ো রা আশীর্বাদ করেন। তুই চুপ করে বোস।
রিতা দেবী ঊষার আচরণে মনে মনে খুবই ক্ষুব্ধ হন। কিন্তু মুখে কিছু বলেন না। তবে তাঁর চোখ- মুখে এই মুহূর্তে বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট।
মিষ্টির থালা টা ঊষার সামনে রেখে ওর মাথায় ধান, দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করলেন রিতা দেবী।
ঊষার এইসব ব্যাপার গুলো খুবই অসহ্যকর লাগছিলো। কিন্তু বাধ্য হয়েই সে বসেছিল। আশীর্বাদ করা হয়ে গেলে নিশা বললো, ঊষা এবার মাকে প্রনাম কর।
- প্রনাম? এখনও প্রণামের যুগে পরে আছিস তুই দিদি? এখন তো সবাইকে জড়িয়ে ধরে ভাব বিনিময় করার যুগ। আমি আন্টিকে একটু জড়িয়ে ধরছি।
- উষা হুমড়ি খেয়ে জড়িয়ে ধরতে গেলে রিতা দেবী ভ্যাবাচ্যাকা হয়ে যায়। ঊষার এইরূপ ব্যবহারে তিনি অপমানিত বোধ করেন। নিশাও লজ্জায় মাথা নিচু করে।
-আন্টি এতগুলো মিষ্টি আমাকে দিয়েছেন? আপনার মাথার ঠিক আছে তো? এখন কেউ এত এত মিষ্টি খায়? তাছাড়া আমি ডায়েট এ আছি।
নীল চারপাশ টা চেয়ে দেখলো আবহাওয়া বেশ গরম। তা ঠান্ডা করার জন্য নিজেই মাঠে নেমে পড়লো।
- নিশা, সব তোমায় খেতে হবে না। তোমার যেটা পছন্দ সেটাই তুমি খাও।
- ওকে, এই একপিস নিলাম। এই বলে ঊষা এক পিস মিষ্টি মুখে দিলো।
রিতা দেবী আর বেশিক্ষন সেখানে দাঁড়ালেন না। সোজা চলে গেলেন নিজের রুমে। মা কে যেতে দেখে নিশা , কোমল সুরে ঊষা কে বলল তুই এইভাবে কেন মায়ের সাথে কথা বলছিস? মা য়ের মনটা কষ্ট পাবে। মা সে কেলের মানুষ। ওনার কথা মতো চললে উনিও ভালো থাকবেন। তোকেও ভীষণ ভালোবাসবে দেখবি। মা একেবারে যাকে বলে মাটির মানুষ। আমাদের খুব ভালোবাসেন। সব সময় আমায় আগলে রাখেন। আমরাও মাকে সবসময় খুশি রাখার চেষ্টা করি। নীল নিশার কথা গুলো শুনে মনে মনে খুব খুশি হলো। কিন্তু ঊষা মুখ বেকিয়ে মোবাইল এ চোখ রাখলো।
কিছুক্ষন পর আবার রিতা দেবী ফিরে এলেন। একটা হাতে প্যাকেট নিয়ে । নীল আর নিশা উৎসুক দৃষ্টিতে তাঁর দিকে চেয়ে আছে। রিতা দেবী পুনরায় মুখে মধ্যে খুশির আমেজ এনে বললেন, ঊষা তোমার জন্য তেমন কিছু কেনা আর হয়ে ওঠে নি। এই শাড়ি টা তোমায় দিলাম। কোনো অনুষ্ঠানে কিংবা পুজোয় পরো খুব ভালো লাগবে তোমায়। শাড়িটা প্যাকেট থেকে খুলে ঊষা কিছু একটা জবাব দিতে যাচ্ছিল। কিন্তু নিশার মুখের দিকে চেয়ে আর কিছু বললো না। নীল , ঊষার মুখ দেখেই বুঝতে পারলো ঊষা এই গিফ্ট পেয়ে মোটেই খুশি হয় নি।
মিনু পিসি সকলের জন্য গরম গরম ফুলকো লুচি, মটন কষা, সাথে মিহিদানা, মিষ্টি নিয়ে এলো।
- জিজু, তোমরা কি পাগল নাকি ? এইসব খেয়েও তোমার ফিগার কি করে এত অট্রাকটিভ আমি জানি না , কিন্তু এইসব তেলের জিনিস খেলে আমার ফিগার টা আর ফিগার থাকবে না। কুমড়ো হয়ে যাবো। ঊষার মেজাজ দেখে মিনু পিসি একটু জোড় সরো হয়ে গেল।নীল , নিশার দিকে তাকিয়ে দেখল নিশার চোখ মুখ থমথম করছে। আসলে নিশা ভেবেছিল ঊষা বরাবর হোস্টেলে থাকে। এইরকম বাড়ির ঘরোয়া খাবার খুব একটা খেতে পায় না। গরম গরম লুচি ভেজে দিলে ও হয়তো খুশি ই হবে। কিন্তু সকাল থেকে ঊষার একটার পর একটা আচরন দেখে নিশার মনে খুব আঘাত লাগলো। নীল পরিস্থিতি টাকে স্বাভাবিক করার জন্য বললো, আচ্ছা ঊষা বলো তুমি জন্মদিনে কি গিফ্ট নিতে চাও আমার থেকে?
ঊষা খেতে খেতে বললো, যা চাইবো তাই দেবে?
-আমার সামর্থ্য এর মধ্যে হলে অবশ্যই দেব। কি চাই বলো?
-কি হলো ভয় পেয়ে গেলে তো? ভাবছো যদি দামি কিছু চেয়ে বসি দিতে পারবে কি না।
তবু নীল জোর গলায় বলল আরে, চেয়েই তো দেখো?
- যদি বলি তোমাকে চাই নীল ?
ঊষার উত্তরে নীল আর নিশা প্রথমটা থতমত খায়। কিছুক্ষন পর নীল হো হো করে হেসে উঠে বলে ঊষা তুমি কিন্তু ভালোই মশকারা করতে শিখেছো। কলেজে পড়ছো উঠতি বয়স। জানি এই সময়টা এইরকম ইয়ার্কি সব ছেলে মেয়েরাই একটু আধটু করে।
ঊষা কাউকে তোয়াক্কা না করেই নীল এর কাছাকাছি এসে নীলের চোখের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে, আমি ঠাট্টা করছি না জিজু । আমি এই নীল কেই চাই। তুমি হবে আমার?
ঊষার এই নিলজ্জ ব্যবহারে নিশা দিশাহীন হয়ে পড়ে। খানিকটা উষ্ণ রাগ নিয়েই ও ঊষা কে বলে, এই জন্মে নীল আমার হয়ে গেছে ঊষা। তুই বরঞ্চ এক কাজ কর নীল এর মতোই অন্য কাউ কে খুঁজে নিস।
ঊষা ভিতরে ভিতরে ফুঁসতে থাকলো। কিন্তু চোখে মুখে কোনো তেজ প্রকাশ করল না।
নিশা আর কথা না বাড়িয়ে, ঊষা কে বলল টেবিলে গিয়ে বোস ঊষা। লাঞ্চ এর জন্য খাবার আনছি। নিশার বিষাদ গ্রস্ত মুখ টার দিকে তাকিয়ে নীলের বড়ো কষ্ট হলো। নীল মনে মনে ভাবলো, বেচারী নিশা , বোন আসবে বলে কত উৎসাহে নিয়ে ঘর সাজিয়েছে, গরমে ঘেমে কষ্ট করে বোনের জন্য রান্নাও করলো অথচ ঊষা আসার পর থেকেই ঊষার বেপরোয়া আচরণে নিশা প্রতিটা পদে পদে আহত হচ্ছে। নীল তরিঘড়ি বাধা দিয়ে বললো, নিশা তুমি এক কাজ করো। তুমি বরঞ্চ মা কে ডেকে নিয়ে এসে ঊষার সাথে খেতে বসো। আজ আমি খাবার পরিবেশন করবো। তারপর আমরা খেয়ে - নিয়ে মুভি দেখতে যাবো। ঊষা তো মুভি দেখতে যাওয়ার খুশিতে আনন্দে লাফিয়ে উঠলো। খাবার টেবিল আজ পঞ্চ ব্যঞ্জনে পরিপূর্ন। প্রত্যেকটা রান্না নিশা খুব যত্ন করে করেছে। পাঁচ রকম ভাজা থেকে শুরু করে চার রকম মাছের পদ, পাতুরি, ভাপা, কাটলেট ওই দিকে চিকেন, মটন সব রকম রান্নাই করেছে। কিন্তু এতসব রান্না দেখে ঊষা চোখ পাকিয়ে বললো, এত সব তেল, ঝাল মশলা যুক্ত রান্না এখন আমায় খেতে হবে? দিদি তুই করেছিস টা কি? তুই এখনো বড্ড সেকেলে থেকে গেলি।
জিজু কোথায় আজ বাইরে গিয়ে আমরা লাঞ্চ করবো। কন্টিনেন্টাল, চাইনিজ ডিস খাওয়া হবে , তা না করে এইসব।আজ সকাল থেকেই যা সব খাবার দেখছি, আমার তো মনে হয় খুব তাড়াতাড়ি এই বাড়ি থেকে আমায় কেটে পড়তে হবে।
- সে কি ঊষা? তুমি বাইরে থাকো। কোনো বছর তোমার দিদি তোমায় আজ কের দিনে নিজে হাতে কিছু রান্না করে খাওয়াতে পারে নি, আজ তুমি আসছ শুনে নিজের এই অবস্থা তেও তোমার জন্য রেঁধেছে। আর তুমি এইরকম বলছো? বাইরের খাবার তো প্রতি বছরই খাচ্ছ। আজ একটু তৃপ্তি করে না হয় ঘরোয়া খাবার ই খেলে। দেখো মন্দ লাগবে না। - রিতা দেবী নম্র ভাবেই কথা গুলো ঊষা কে বলল।
ঊষা একবার দিদির দিকে তাকিয়ে কি মনে হলো ঘাড় নাড়িয়ে অত্যন্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও খাবারে মনোনিবেশ করলো। খেতে খেতেই বেশ ঝাঁজের সাথে নিশা বললো, নীল সন্ধে বেলা ঊষা কে মুভি দেখিয়ে ওকে বাইরে থেকে ডিনার করিয়ে নিয়ে আসবে। ঊষা শুনে বেশ খুশি হলো।
- বউ মা তুমিও তো কতদিন বাইরে বেরোয় নি। তুমি ও যাবে নীল আর ঊষার সাথে।
- তুমি ঠিক বলেছো মা। নিশা তোমাকেও যেতে হবে।
আমার শরীর টা ঠিক নেই মা। ওরা যাক। আমি অন্যদিন যাবো। খাবার থালায় ভাত গুলো নিয়ে কিছুক্ষন আকি বুকি করে নিশা উঠে পড়ল।
নিশার মানসিক অবস্থা টা অনুধাবন করে রিতা দেবীও বেশ ব্যথিত হলো। বিকেল বেলাতেই ঊষা যাবে বলে তৈরি হয়ে নীল কে ডাকতে গেল। নীল তখন ও বিছানায় শুয়ে ছিল। নিশা ওদের রুমের সাথে লাগোয়া ব্যালকনিতে বসে তখন এক মনে বাইরের দিকে উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। রুমে ঢুকেই খালি গায়ে থাকা কেবল মাত্র ট্রাউজার পরিহিত নীল কে দেখে ঊষার হৃদয়ে যৌবনের ঢেউ খেলে গেল। সে হা করে ঘুমন্ত নীলের সুবলিষ্ঠ বহু দুটো র দিকে তাকিয়ে থাকলো। আবেগে, ঊষার চোখ দুটো জড়িয়ে এলো। চওড়া কাঁধ, সরু কোমর, মেদ বিহীন এমন পুরুষালি চেহারা দেখে ঊষা আর নিজেকে স্হির রাখতে পারল না। সামনে গিয়ে কানের কাছে ফিসফিস করে বললো, জিজু...
একটা উষ্ণ বাতাস এর অনুভূতি তে নীল তৎক্ষণাৎ চমকে উঠলো। হঠাৎই চোখ মেলে দেখলো ঊষা ওর মুখের সামনে হাসিহাসি মুখ করে ওর সর্বাঙ্গ শরীরটা এলিয়ে নীল এর দিকে তাকিয়ে আছে। নীল ধরমর করে উঠে বসলো। চোখ দুটো হাতের উলটো পিঠ দিয়ে ভালো করে রোগড়িয়ে তন্দ্রা জড়ানো গলায় বলল , ঊষা তুমি এখানে? মানে কিছু দরকার নাকি? নিশা... নিশা ... কোথায় গেলে তুমি? ঊষা এসেছে রুমে দেখো কি বলবে।
নীল নিশাকে ডাকছে দেখে ঊষার মুখে বিরক্তির ছাপ ফুটে ওঠে স্পষ্ট। নিশা রুমে প্রবেশ করার আগেই ঊষা ঝেরেমেরে উঠে বসে।
নিশা ক্লান্ত হয়ে ব্যালকনিতে আনমনা হয়ে দূরের বাগানের দিকে তাকিয়ে ছিল। ফুল গুলো ব্যালকনি থেকে দেখা গেলেও নিশা ঠিক সেদিকে চেয়ে ছিল না। ফুল গুলোর একটা আবছা অবয়ব তার চোখের সামনে ভেসে উঠলেও তার মন ছিল উদাসীন। নীলের গলার আওয়াজে সে ভাবের রাজ্য থেকে মুহূর্তের মধ্যেয়েই বেরিয়ে এলো। নীল ওকে কি জন্য ডাকছে সেটা না বুঝেই ধীরে ধীরে রুমে ফিরে এলো।
রুমের মধ্যে ঊষা কে দেখে কৌতূহলী দৃষ্টিতে সে ঊষা কে বলল, কিরে তুই কি এখনই রেডি হয়ে গেছিস?
- হ্যা তো। জিজু তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও। মুভি দেখাতে নিয়ে যাবে তো? দেরি হয়ে যাচ্ছে তো।
ঘুম জড়ানো চোখেই ঊষার উগ্র সাজ - পোশাক দেখে নীল ভাবলো - এই রে , এই ড্রেস পরে ঊষাকে আমার সাথে বেরোতে দেখলে মা এর মেজাজ তো সপ্তমে চড়বে।
নিশা সাবধানে ঊষার সামনে এসে ওর চিবুক টা আলগা ভাবে আঙুলের সাহায্যে একটু ওপরের দিকে তুলে ঊষার চোখে চোখ রেখে বললো, তোকে তো এত সুন্দর দেখতে ঊষা। পুরো মায়ের মুখ টা বসানো তোকে দেখলেই যেন মনে হয় আমার মা সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তোর মতোই টানা টানা ছিল মায়ের চোখ দুটো। তোর মতোই সরু , টিকলো নাক, পাতলা ঠোঁট , তোর মতোই গায়ের রং ছিল ফর্সা ধবধবে। স্নান সেরে লাল পাড় সাদা শাড়ি পরে যখন ফুল তুলতেন, মালা গাঁথতেন, ঠাকুর পুজোর জন্য চন্দন ঘষতেন কি অপরূপ লাগতো ওই রূপ দেখতে। তখন আমি তো ছোট ছিলাম গালে হাত দিয়ে চুপটি করে মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। আর মা বলতেন আমার মেয়েটা বড্ড বেশি শান্ত। কি সুন্দর চুপ করে বসে থাকে, আমি যেখানেই যাই আমার পিছু পিছু যায়। কিন্তু কাজের কোনো ব্যাঘাত করে না। জানিস তো মায়ের চুলটাও তোর মত হালকা কোঁকড়ানো ছিল। কিন্তু কোমর অবধি লম্বা ছিল। চওড়া করে সিঁথি ভর্তি সিঁদুর পরে, কপালে বড় লাল টিপ পড়তেন। সাক্ষাৎ দেবী দুর্গার মতো লাগতো। তুই ও তো আজ কে একটা শাড়ি পড়তে পারিস ঊষা। এই একটু আগে আমার শাশুড়ি মা যে শাড়ি টা দিলেন ওটাই তো পরতে পারিস। তোকে খুব মিষ্টি দেখাবে।
- ওহ... তুই এই কথাটা বলার জন্যই এতোক্ষন মায়ের নামে ভালো ভালো কথা বলছিলিস? তুই যতই যাই বোঝাস ওই সব শাড়ী টারী পরা আমার দ্বারা সম্ভব নয়।
মায়ের কথা বলতে বলতে নিশার সত্যিই দু চোখের জল সিক্ত হয়ে গিয়েছিল। অপরদিকে ঊষার মনে কোনো দুঃখ ই প্রকাশ পেল না। নিশা নাক টেনে বললো, আচ্ছা ঠিক আছে তোর যা মন চায়। তাই পরে যা।
ঊষা কে শাড়ী টা পরাতে ব্যর্থ হয়ে নিশা এক ঝলক নীল এর দিকে তাকালো। নীল ও নিশার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে রেডি হতে গেল।
যাওয়ার সময় নীল অনেকবার নিশাকে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলো। ঊষার আড়ালে নিশাকে চুপিসারে বললো তুমি না গেলে কিন্তু আমি যাব না। কিন্তু নিশা মাথার দিব্বি দিয়ে বললো, তোমায় যেতেই হবে নীল। আমার শরীর টা খুব একটা ভালো নেই। সকাল থেকে আজ একটু ধকল গেছে। আমি অন্যদিন যাবো। কিন্তু নিশা মন থেকে চাইছিল ঊষা একবার ওদের সাথে যাওয়ার কথা বলুক। কিন্তু সেইরকম কিছুই হলো না দেখে নিশা নিজের অভিমান টুকু নিজের মধ্যেই চেপে রাখলো।
চলবে...
ছবি : সংগৃহিত
1 মন্তব্যসমূহ
Vlo hochhe
উত্তরমুছুন