শাড়ি তেই নারী
(এই অনু গল্পটি কাউকে আঘাত করার জন্য লিখি নি। এখন যে ট্রেন্ড উঠেছে "শাড়ি তেই নারী" তার ওপর ভিত্তি করে রচিত। ভুল , ত্রুটি মার্জনীয়। )
কলেজের ছেলেদের কাছে হৃদয় হরণকারীনি নামে খুবই পরিচিত ঋত্বিকা চৌধুরী । তার এই বাহ্যিক সৌন্দর্য টাকে নিয়ে সে অহংকারী ও বটে। সর্বদাই তাকে চড়া মেকআপ , উত্তেজক স্টাইলিস্ট ড্রেসেই বেশি দেখা যায়। সাধারণ সালোয়ার, কামিজের প্রতি তার কোনো আসক্তি নেই। সেগুলো নাকি তার কাছে ব্যাকডেটেড। কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানে, সরস্বতী পূজায় অন্যান্য মেয়েরা শাড়ি পরে সাবেকিয়ানায় সাজ লেও তার সেসবের কোনো বালাই নেই। উপরন্তু তাদের দেখলেই ঋত্বিকা ও তার কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বান্ধবীরা সেই সকল মেয়েদের উদ্দেশ্যে বিদ্রুপের হাসি ছুড়ে দেয়। স্লিপলেস টাইট টপ পরিহিতা ঋত্বি কার হাসির সাথে সাথে তার সর্ব অঙ্গ আকর্ষণীয়ভাবে দুলে ওঠে। তাতেই কিছু উঠতি বয়সী পড়ুয়ার দল মাতোয়ারা। ইতিমধ্যে কলেজে পা রাখার পর থেকেই একের পর এক প্রপোজাল পেয়ে এসেছে সে। কাউকেই সে তার মনে জায়গা দেয়নি। কিন্তু কলেজের ফার্স্ট বয় রিতেশকে তার হৃদয়ের মণিকোঠায় যত্নে লালন করছে সে। ঋত্বি কা মাঝে মাঝে আশ্চর্য হয়ে যায় রিতেশকে দেখে। কারণ অন্যান্য ছেলেদের মতো রিতেশ কোনদিন তার দিকে ফিরেও তাকায় না। আর ঋত্বি কাও ইগোর বশবর্তী হয়েই তার মনের কথা তাকে জানায় নি।
সামনেই নবীনবরণ। সিনিয়র কলেজ স্টুডেন্টরা প্রত্যেকটি ক্লাসে গিয়ে আসন্ন প্রোগ্রাম সম্পর্কে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ওয়াকিবহাল করে আসছে। ঋত্বি কা দের ক্লাসে রিতেশ ও তার বন্ধুরা প্রবেশ করামাত্রই ঋত্বিকার চোখ, মন , ধ্যান তার অনুকূলে ধাবিত হয়। প্রয়োজনীয় বক্তব্য সেরে ফেলার পর রিতেশ তার দরাজ গলায় বলল" সকল ছাত্র-ছাত্রীদের অনুরোধ রইল নবীন বরণের দিন ছেলেরা পাঞ্জাবি ও মেয়েরা শাড়ি পরে আসবে। আসলে মেয়েদের শাড়িতেই দেখতে বেশি সুন্দর লাগে।"
রিতেশের বলা শেষ কথাগুলিতেই ঋত্বিকা যেন আটকে যায়। কথাগুলো যে বিশেষভাবে তাকেই উদ্দেশ্য করে বলেছে সেটা বুঝতে পেরে তার মনে এক অদ্ভুত উন্মাদনা শুরু হয়। কারণ আজ রিতেশের চোখে সে দেখেছিল তার প্রতি ভালোলাগার প্রলেপ। তাই একবিন্দু সময় নষ্ট না করে নিজের রুচিটা বদলাতে সে তৎপর হয়।
সমাপ্ত
ছবি : সংগৃহীত
0 মন্তব্যসমূহ