চলচ্চিত্র জগতে মৃণাল সেনের কৃতিত্ব

Mrinal Sen filmmaker, মৃণাল সেন চলচ্চিত্র পরিচালক

বাংলাদেশ এর ফরিদপুর শহরে জন্মলাভ করেন প্রখ্যাত বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক মৃণাল সেন। চিত্র নাট্যকার ও লেখক হিসাবেও তিনি যথেষ্ট খ্যাতিমান। তাঁর শৈশব কাল অতিবাহিত হয় ফরিদপুর এই ।সেখানেই তিনি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি উচ্চ তোর শিক্ষা লাভের জন্য কলকাতায় আসেন। স্কটিশ চার্চ কলেজে পদার্থ বিদ্যা বিভাগে ভর্তি হন। সেইসময় থেকেই তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সাংস্কৃতিক শাখার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন। চল্লিশ দশকে ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশন এর সাথে যুক্ত হন। তিনি কিছুদিন সাংবাদিকতা,ওষুধ বিপণন কারী  হিসাবেও কাজ করেন।পরে চলচ্চিত্রে র শব্দ কলাকুশলী হিসাবে যোগ দেন।

তাঁর প্রথম পরিচালিত ছবি 'রাত ভোর' মুক্তি পায় ১৯৫৫ সালে। এই ছবিটি সফলতার মুখ দেখতে পায় নি।তাঁর পরবর্তী ছবি 'নীল আকাশের নীচে' রিলিজ হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে তার পরিচিতি বাড়তে থাকে।তিনি আন্তর্জাতিক পরিচিতি লাভ করেন তার তৃতীয় ছবি '২২শে শ্রাবণ'  থেকে। বিখ্যাত অভিনেতা উৎপল দত্ত তাঁর পরিচালিত ছবি 'ভুবন সোম' এ অভিনয় করেন। এবং এটাই ছিল তাঁর পরিচালিত চলচ্চিত্র  জীবনের সম্ভবত শ্রেষ্ঠ ছবি। মধ্যবিত্ত সমাজের মূল্যবোধকে তিনি স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরেছিলেন 'দিন প্রতিদিন', খারিজ এই দুটি ছবির মাধ্যমে। ১৯৮৩সালে কাল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার পেয়েছিলেন 'খারিজ'এর জন্য। তাঁর সমগ্র জীবনে তিনি ২৭ টি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি,১৪টি শর্ট ফ্লিম,৫টি তথ্যচিত্র উপহার দিয়েছেন।ফ্লিম সোসাইটির সক্রিয় কর্মীও ছিলেন তিনি।বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার হিসেবে তিনি রূপোর ভালুক পান তার 'আকালের সন্ধানে' ছবির জন্য। তাঁর অসাধারন কৃতিত্বের পরিচয় মেলে 'মহাপৃথিবী'(১৮৯২), আমার ভুবন(১৯১৪), পুনশ্চ(১৯৬১), অবশেষে(১৯৬৩), প্রতিনিধি(১৯৬৪), কাঁচ কাটা হিরে(১৯৬৫), জোরা দীঘির চৌধুরী পরিবার(১৯৬৬), মৃগয়া(১৯৬৬), কান্দাহার(১৯৮৩), পরশুরাম(১৯৭৮) এই সকল চলচ্চিত্র সৃষ্টির মাধ্যমে।

বাংলা ভাষা ছাড়াও তেলেগু,উড়িয়ে,হিন্দি ছবিতেও তাঁর ছিল অগাধ বিচরণ। কালিন্দী চরণ পানিগ্রাহী গল্প অবলম্বনে তৈরি করেন মাটির মনীষ(১৯৬৬)। এটি ওড়িয়া ভাষায় নির্মিত হয়। হিন্দি ভাষায় নির্মিত ছবি 'ভুবন সোম'। ১৯৭৭সালে প্রেমচন্দ্রের গল্প অবলম্বনে তেলেগু ভাষায় তৈরি করেন 'ওকা উরি কথা'। হিন্দি, ফরাসি, ইংরেজি তিনটি ভাষাতেই মুক্তি প্রাপ্ত হয়েছিল (১৯৮৫)সালে জেনেসিস
১৯৮১ সালে ভারত সরকার দ্বারা পদ্ম ভূষন পুরস্কার পান। দাদা সাহেব ফালকে পান ২০০৫এ।ফরাসি সরকার তাঁকে কম্যান্ডার অফ দি অর্ডার অফ আর্টস এন্ড লেটার্স সন্মান দেন। তিনি রাজ্যসভার সংসদ ও নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে ৩০ শে ডিসেম্বর তিনি পরলোকগমন করেন।

ছবি : সংগৃহীত

তথ্য সূত্র : বাংলা  পিডিয়া,
উইকিপিডিয়া

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ