( সকলের জীবন হোক ফুলের মতো বর্ণময়)
এখন সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই অদ্ভুত বিকৃত মানসিকতা র শিহরণ জনিত সব খবর চোখে পড়ে। যা দেখে, পড়ে আমরা স্তম্ভিত। দেশের কি অবস্থা। আমরা ছোট থেকে যা শুনিনি তাই হচ্ছে গোটা দেশ জুড়ে। এখন ছোট, বড় কোন মানুষই নিরাপদ নয়। সচরাচর শোনা যেত পুরুষরা সমস্ত পাপ কাজের সাথে জড়িত। এখন দেখছি নারী রাও এই হিংস্র কাজে পিছিয়ে নেই। নারী যদি নিজের সন্মান রক্ষার্থে কারো প্রাণ নেয় কিংবা কাউকে আঘাত দেয় তাতে আমার কিছু বলার নেই। আইন যতই থাকুক, পরিস্থিতি অনুযায়ী কাজ করা উচিত বলে আমি মনে করি।
যেমন ধরুন আমি বেশ কিছুদিন আগে একটা প্রতিবেদন এ পড়েছি একজন বছর চল্লিশের মহিলা রাতে অফিস ফেরত বাড়ি ফিরছিলেন। ওনাকে লিফট দেওয়ার নাম করে গাড়িতে তুলে তিন জন লোক মিলে ধর্ষণ করে। ওই মহিলা নিজের সন্মান রক্ষার্থে এবং নিজের সম্মানের বদলা স্বরূপ একজন ধর্ষণ কারীর পুরুষ অঙ্গ কেটে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ওই জানোয়ার টিকে নাকি বাঁচানো যায় নি। এক্ষেত্রে অনেকে মেয়েটির বিরুদ্ধে আইনত ধারা দিতে চেয়েছেন। কেন তাকে মহিলাটি এমন করেছেন... দেশে আইন বলেও একটা কথা আছে... অমুক.. তুসুক। আমি এটা ব্যক্তিগত ভাবে মানি না। ধর্ষিত মেয়েটা আদেও শেষ পর্যন্ত বিচার পাবে কি না তার ঠিক নেই। অনেক কাঠ খোর পুরিয়েও ধৃত রা ছাড়া পেয়ে যায়। জামিন পেয়ে যায়। তার থেকে মেয়েটা নিজে বদলা নিয়েছে বেশ করেছে। আপনারা এবার বলবেন হয়তো এইরকম হলে তো দেশে অরাজকতার সৃষ্টি হবে। হলে হোক। তবু যেন রাক্ষস রুপি নর পিশাচ রা বুঝে যায় বদলা নিতে মেয়েরাও জানে।
আবার মেয়েদের কুকর্মের ও তো শেষ নেই দেখছি। এই তো দুই তিন দিন ধরে দেখছি মুন্নি সৌনক- সাহেব ত্রিকোণ প্রেমের পরিণতি। গল্পটা তো সত্যি। অনেকেই জানেন। আমি শুধু নাম পরিবর্তন করে লিখছি। আবার অনেকেই হয়তো জানেন না। আমি যে টুকু বুঝলাম সেটাই আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। মুন্নার সাথে প্রেম করেই বিয়ে হয় সৌনক এর। মুন্নি আর সৌনক এর বাড়ী তিন কিলোমিটার ডিফারেন্স। সৌনক ছোট বেলা থেকেই মুন্নি দের বাড়ি যেত। মুন্নিএর ঠাকুর দা ছিলেন নামকরা জ্যোতিষ। তার কাছেই দরকারে সৌনক এর মা কিংবা ঠাকুমা যেতেন। তার সাথেই সৌনক যেত মুন্নি দের বাড়ি। মুন্নির রূপের ঝলক এ প্রথম থেকেই সৌনক ছিল মোহিত। দুজনের মধ্যে মাত্র তেরো চোদ্দ বছর বয়স থেকেই প্রেম শুরু হয়। তাদের ভালোবাসার কথা জানতে পেরে সৌনক এর বাড়ী থেকে প্রথমেই আপত্তি জানায়। এর পর সৌনক উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে নেভি র পড়াশোনা করতে বিদেশে চলে যায়। চাকরিও পায় বিদেশে। তখন ও তাদের প্রেম ছিল। দু বাড়ি থেকে তা জানত না। এর পর সৌনক বাড়ি এসে মুন্নিকে কে নিয়ে পালায়। যেহেতু সৌনক দের বাড়ি থেকে মুন্নিকে কে মেনে নেয় নি। কিন্তুতাদের খোঁজ করে আবার মুন্নিকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর পর ও তিন বার মোট সৌনক মুন্নি কে নিয়ে পালিয়ে যায়। এবং মুন্নিকে কে বিয়ে করে। একবার তাহলে ভাবুন তো একটা ছেলে কতটা ভালোবাসলে বিদেশ থেকে ছুটে আসে প্রেমিকার জন্য। এইরকম আমাদের আশেপাশের অনেক ছেলে আছে যারা বাইরে পড়তে গিয়ে ছোটবেলার ভালোবাসাকে প্রত্যাখ্যান করে বিদেশে মেয়েকে ভালোবেসে বিয়ে করেছে। কিন্তু সৌনক তো তেমন ছেলে নয়। ওকে দেখতেও যথেষ্ট সুন্দর। ছবিতে দেখাচ্ছে। তার সাথে ব্রাইট ফিউচার। পেশায় উনি ছিলেন মার্চেন্ট নেভি অফিসার। মুন্নি র ভাগ্য অনেক ভালো ছিল এমন একটা ছেলে ওকে মন থেকে ভালোবেসে ছিল। মুন্নি কে বিয়ে করার কিছু দিন পর সৌনক আবার চাকরি জয়েন করতে লন্ডন চলে যায়। তখন মুন্নি শশুর বাড়িতে নানা ছোট খাটো বিষয় নিয়ে ঝগড়া অশান্তি করতো। শেষ পর্যন্ত সৌনক মুন্নিরর মুখ চেয়ে , তাকে ভালোবেসে মা বাবার সাথে আলাদা থেকে মুন্নিকে কে ভাড়া বাড়ি নিয়ে যায়। সেখানে বউ এর সাথে ছুটি কাটিয়ে বউ কে ভাড়া বাড়ি তে রেখেই আবার কাজে জয়েন করে। এই ভাবেই সৌনক মুন্নির এর সংসার চলছিল। সৌনক পাগলের মতো ভালো বাসত মুন্নি কে। তার জন্য সে তার মা বাবা কে ছেড়ে ছিল। বিয়ের প্রথম প্রথম দিকে নাকি মুন্নির কথায় সৌনক চাকরিও ছেড়ে দেয়। কিন্তু তাদের বৈবাহিক জীবনে ঘর আলো করে আসে একটি ছোট্ট রাজকন্যা। তাই সংসার চালানোর জন্য সৌনক এর টাকার দরকার। সে আবার চাকরির জন্য লন্ডন পারি দেয়। এবং কাজে জয়েন করে। মুন্নি থেকে যায় দেশেই ভাড়া বাড়িতে। এখানে সাথে শশুর শাশুড়ি নেই। ভালো মন্দ বলার কেউ নেই। এখান থেকেই মুন্নির অপরাধ এর হাতে খড়ি শুরু হয়। যা সৌনক এর জীবন টাকে ছাড় খার করে দেয়। মুন্নি সারাদিনের কাজের ফাঁকে অবসরে ফেসবুক, হ্যাটস আয়াপে অনেক একটিভ থাকতো। তার কলেজ লাইফ, স্কুল লাইফের র অনেক বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ শুরু হয়। হোয়াটস আপ এ তাদের একটা বন্ধুদের গ্রপ তৈরি হয়। সেখানেই মুন্নি আবার তার ছোটবেলার বন্ধু সাহেব এর খোঁজ পায়। গ্রূপে চাট থেকে পার্সোনালি তারা নাম্বার নিয়ে কথা বলা শুরু করে । দেখা করা, সিনেমা দেখতে যাওয়া বাজার যাওয়া আরো অনেক কিছু। দুজনের মধ্য আবার প্রেম শুরু হয়। মানে মুন্নি পরকীয়া য় জড়িয়ে পড়ে। মুন্নি ভাড়া বাড়িতেও সাহেব নিয়ে আসতে শুরু করে। এই কথা লন্ডনে সৌনকের কানে যায়। সে বার বার মুন্নিকে শুধরে যেতে বলে। কিন্তু মুন্নি র তখন জীবনে অন্য ভালোবাসার জোয়ার। দু চোখে তখন অন্যরকম নেশা। সে সৌনক এর কথা তো শনেই না। উল্টে তার প্রতি রাগ এর সৃষ্টি হয়। সে তখন সাহেব কে পাওয়ার জন্য সৌনক কে পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেলতে ও প্রস্তুত। সৌনক শেষ পর্যন্ত যখন দেখলো মুন্নিকে বুঝিয়ে শোধরানো যাবে না। ও তখন ডিভোর্স এর কথাও চিন্তা করেছিল। কিন্তু সৌনক এর পরিবার এতে আবার বাধা দিয়েছিল। বলেছিল তোদের একটা ফুটফুটে কন্যা সন্তান আছে। তার ভবিষ্যৎ টা তাহলে নষ্ট হয়ে যাবে। যে মুন্নি অশান্তি করে সৌনকের থেকে ওর পরিবার কে আলাদা করতে চেয়েছিল তার জন্যই ওদের পরিবার আবার মুন্নির সাপোর্টে ছিল। ভেবেছিল অন্তত মেয়ের কথা ভেবে মুন্নি শুধরে যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয় নি। মুন্নির এই পরকীয়া র লীলায় চিরতরে হারিয়ে যায় সৌনক। একটা পরিবার নিঃশেষ হয়ে যায়। মা তার সন্তানকে হারায়। পরকীয়া সম্পর্ক কখনোই সুখের বার্তা আনে না। মাঝখান থেকে শেষ হয়ে যায় অনেক গুলো জীবন। এর পরের কাহিনী আরো মর্মান্তিক। বিস্তারিত বর্ণনায় আসছি।
এইরকম দোটানার মধ্যে যখন মুন্নি সৌনক এর সম্পর্ক এইসময় ই মুন্নির পাঁচ বছরের মেয়ের জন্মদিন চলে আসে। আর সৌনক ও মেয়েকে জন্মদিনের সারপ্রাইজ দেবে বলে চলে আসে লন্ডন থেকে। ঠিক এই সুযোগ টাই কাজে লাগায় মুন্নি ও সাহেব। জন্মদিন ভালবভাবেই সেলিব্রেট করে সৌনক ও মুন্নি। মুন্নির পিশাচি মনের কথা সৌনক ঘোনাক্ষরেও টের পায় না। তবে সৌনক মুন্নিকে খুব একটা বিশ্বাস আর করতো না। কারণ এর আগে মুন্নি একবার সৌনক কে মেরে ফেলার প্ল্যান করে। তাই মুন্নি এবার বেশ ভেবে চিন্তে ফাঁদ পারে। সৌনক দেশে এসে মা বাবার সাথে দেখা করতে যায়। তার মা লাউ এর কোফতা বানিয়ে দেয়। সৌনক বাড়ি নিয়ে আসে। সৌনক কে ওই খাবারের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয় মুন্নি। সৌনক আসার কিছু দিন আগেই মুন্নি ছক কোষে শরীর ভালো না থাকার অজুহাতে ডাক্তার কে দিয়ে ঘুমের ওষুধ লিখিয়ে নিয়েছিল। সেই ওষুধ বেশ কয়েকটা খাবারে মিশিয়ে দেয়। সেটা খেয়ে সৌনক অচৈতন্য হয়ে পড়ে। মুন্নি সাহেব কে ওই রাতে ডেকে আনে। মুন্নি আগে থেকেই মুরগি কাটার নাম করে ছুরি কিনে রেখেছিল। সাহেব ও মুন্নি মিলে সৌরভ কে পনেরো টুকরো করে। আপনারা ভাবতে পারছেন কি নৃশংস হত্যা। একজন বউ কি করে পারলো তার স্বামীকে এই ভাবে হত্যা করতে । উফফ!! আমার লিখতেও হাত কাঁপছে। শুধু এখানেই ক্ষান্ত হয় নি তারা। এরপর ড্রামে ভোরে সিমেন্ট দিয়ে ড্রাম টা সিল করে দিয়ে সাহেব এর সাথে বেড়াতে চল যায়। মেয়েকে তার বাপের বাড়ি রেখে। কি ভয়ানক দৃশ্য। কি করে মানুষ পারে? এইরকম ঘটনা কোনোদিন আগে ঘটে নি। সত্যি সৌনক এর কি দোষ ছিল বলতে পারেন ? একজন কে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবেসে ছিল এই ছিল তার অপরাধ? শুধু কি তাই তাকে খুন করে সৌনক এর টাকাতেই তারা ঘুরেছে। সেই তথ্যই পুলিশ দিয়েছে।
আজকের রোজকার দিনের কি টুকি টাকি শেয়ার করবো বলুন তো লিখতে লিখতে হাত কাঁপছে। আজ কের ব্লগ আমি এই পর্যন্ত ই লিখলাম। ফিরবো আগামী কাল। সকলে সুস্থ থাকুন । ভালো থাকুন।
0 মন্তব্যসমূহ