(আমাদের আম গাছে বৌল এসে গেছে। ছাদ থেকে তোলা ছবি )
শুভ সকাল বন্ধুরা। আজ মহা শিবরাত্রি। তাই সকলকে জানাই মহাশিবরাত্রির শুভেচ্ছা। এখন বাজে বেলা এগারোটা। আমি এখন একটু ফ্রি সময় পেলাম। তাই একটু লিখতে বসলাম। আগামীকাল আমার ছেলের Evs exam আছে। তাই আগে ওকে পড়িয়ে নিলাম। আমি সকাল ৯ টা থেকে পড়াতে বসেছিলাম। এই মিনিট দশেক হলো ছেড়েছি। আমি প্রতি বছর সন্ধে বেলা তেই শিবের মাথায় জল ঢালি। কিন্তু এবছর ছেলের পরীক্ষা থাকার জন্য দুপুর বেলা জল ঢালতে যাবো। কারণ সন্ধেয় বেলায় ভিড় টা একটু বেশি হয়। বাড়ি ফিরতে যদি দেরি হয় ছেলেকে আর পড়াতে বসতে পারবো না। তাই ওর কথা চিন্তা করে দুপুর এই জল ঢালবো। ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠেছি। ঘর ঝাট, মোছা করে বাসী কাজ সেরে স্নান করে বাড়ির ঠাকুরকে পুজো দিলাম। তখন বাজে সকাল সাত টা। তারপর শশুর মশাই ডাক্তার দেখাতে যাবে বললেন। ওনার জন্য আলুর তরকারি করে আট টার মধ্যে আলুর তরকারি আর মুড়ি দিলাম। আর আমার বর শশুর মশাই কে নিয়ে যাবেন ডাক্তার দেখাতে। তাই বরকে দুধ কর্ণফ্লেক্স খেতে দিলাম। ও মুড়ি খাবে না বললো। আর ছেলেও ঘুম থেকে উঠে পড়েছিল। ওকেও দিয়ে দিলাম দুধ কর্ণফ্লেক স। তারপর ওরা বেরিয়ে যাওয়ার পর ছেলেকে পড়াতে বসালাম। ও লিখতে পারে সব। কিন্তু একটা অধটা বানান ভুল লেখে। তাই পুরো সিলেবাস টার যত বানান ছিল লিখতে দিয়েছিলাম। ও এখন ওয়ান এ পরে। ওর আজকের বানান লেখার হাতের লেখা টা র ছবি দিলাম।
ওকে পরানো হয়ে গেছে। ও এখন আঁকছে নিজের মতো। আমি বললাম আজ শিব রাত্রি। তাই ও শিব লিঙ্গ আঁকছে। ওকে কখনো শিবলিঙ্গ আঁকা শেখাই নি। ফোন ও কম দেখে। ফোনেও দেখে নি। ও নিজে থেকেই আঁকছে। সেই ছবি ও দেব।
দৈনন্দিন জীবনে আমাদের খুঁটিনাটি কাজের শেষ থাকে না। কাজের শেষ ও নেই শুরুও নেই। ঘুম থেকে চোখ খোলা মাত্রই কাজ আর কাজ। আর আমরা সারাদিনে কাজের মাঝেই নিজের প্রিয় মানুষ গুলোর সাথে একটু একটু সময় কাটাতে পছন্দ করি। কেউ কেউ।অফিস যাওয়া আসার পথে গাড়ির নিত্য যাত্রী দের সাথে। কেউ অফিস কলিগ দের সাথে। কেউ বা পরিবারের লোকে দের সাথে কিংবা পাড়া প্রতিবেশী সঙ্গে। আমরা কম বেশি সবাই কথা বলতে বেশ পছন্দ করি। একে অন্যের কাছে মনের কথা সুখের কথা দুঃখের কথা শেয়ার করতে পারলে মন ভালো থাকে। আর এখনকার ব্যস্ত জীবনে ওই টুকুই তো আনন্দ।
আবার অনেকের এমন অন্তরঙ্গ বন্ধু থেকে দিন শেষে তার কাছে সব কথা সব ঘটনা উজাড় না করা পর্যন্ত শান্তি হয় না। কিন্তু ঠিক এই খান টা তেই আমরা বড্ড বেশি ভুল করে ফেলি। আসলে কি বলুন তো যে যতই আপন হোক, সকলকে সব কথা শেয়ার করা উচিত নয়। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যেয়েই কিছু কথা, কিছু মুহূর্ত, কিছু ঘটনা গোপন রাখতে হয়। সে গুলো একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত। আপনি ভাবলেন অতীতের কোনো ঘটনা, কোনো মুহূর্ত একদম কাছের মানুষ টার কাছে শেয়ার করা যেতে ই পারে। কিন্তু দেখা গেল পরবর্তী কালে সেই মানুষ টাই আপনার সাথে ঘটে যাওয়া সেই ঘটনাগুলো জেনে আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করছে। আপনাকে নানাভাবে অস্হির করে তুলছে। তখন অপনার কি মনে হবে? কি মরতেই যে বলতে গিয়েছিলাম। একেই বলে নিজের পায়ে নিজে কুরুল মারা। তাছাড়া আপনার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তারাই আপনাকে ঠকাবে না তার কি গ্যারেন্টি আছে। তাই সবাইকে সব কথা বলতে নেই। না হলে নিজেরই ক্ষতি হয়।
অনেকে আবার এমন ও আছে যারা আপনার কথা তে আরো রং চড়িয়ে তিল কে তাল করে লোকের কাছে বলে বেড়াবে। আপনাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করবে। আড়ালে আপনার সম্পর্কে নিন্দে মন্দ করবে। সুতরাং কি দরকার পরের কাছে নিজের কাহানি তুলে হাসা, কাঁদার । কোনো দরকার নেই।
( এটাও ছাদ থেকে তোলা আমাদের উঠোন এর ছবি। সরষে ঝাড়া হচ্ছে। সোর্সের গাদা থেকে)
যখন দেখবেন কাউকে ভরসা করে আপনি নিজের খুব ব্যক্তিগত কিছু একটা শেয়ার করলেন কিন্তু পরক্ষন এ যখন জানতে পারবেন সে গুলো পাঁচ কান হয়ে গেছে। তখন নিজেকে কতটা অসহায় লাগে বলুন তো? নিজের মানুষ বিশ্বাসঘাতকতা করলে এর চেয়ে বড় আঘাত আর কোনো কিছুতে হতে পারে না।
তাছাড়া সহজ সরল ভাবে নিজের সবটুকু উজাড় করে বলে দিলে লোকে তাকে ব্যক্তিত্বহীন মনে করে। ভাবে এত খুব সরল সাদাসিধে। আর বোকা মানুষের তো জানেন নি এই দুনিয়ায় হাল কি হচ্ছে। কিন্তু সরল মানুষ টা তো তাকে বিশ্বাস করে সব কথা বললো। সে তার দাম দেয় কই।
তাই বলছি সবাইকে বলছি কাউকে ই বিশ্বাস করে সব কথা একদম বলবে না। নিজের গভীরে রেখে নিজেই সেই সমস্যা থেকে বেরোনোর রাস্তা খুঁজবে। নিজের দুর্দিনে সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রাখবেন। তিনি ঠিক রাস্তা বের করে দেবেন। আপনি যদি কারো ক্ষতি না চান, না করেন আপনাকেও কেউ ক্ষতি করতে পারবে না।
আবার অন্যদিক থেকেও এটা বলবো কেউ যদি বিশ্বাস করে আপনাকে কিছু বলে তার সন্মান দেবেন। সে গুলো অন্য কাউকে বলবে না । আর খারাপ পরিস্থিতি র কিছু শেয়ার করলে তাকে যথা সাধ্য হেল্প করবেন।
আমিও আসলে কারো ব্যক্তিগত জীবনে বেশি প্রবেশ করি না। নিজের কাজ, ছেলের পড়াশোনা, অবসরে লেখালিখি, বই পড়া, রূপচর্চা নিয়েই জীবন কেটে যায়। এই বেশ ভালো আছি। সুখে আছি। কারো সাথে কোনো মতবিরোধ নেই। মনোমালিন্য নেই। যেমন আছি ভালো আছি। আপনারাও ভালো থাকুন। নিজেকে ভালো রাখার উপায় নিজেই বের করে নিন। দেখুন জীবন খুব সুন্দর। মুহূর্তে রা কি রঙীন।
0 মন্তব্যসমূহ