দুঃখ, কষ্ট, হাসি, আনন্দ এই সব মিলেমিশে ই তো আমাদের জীবন। কিন্তু মন ভালো না থাকলে কিছুই ভালো লাগে না। কোনো কাজ করতে ইচ্ছে করে না। অকারণে মেজাজ বিগড়ে থাকে। সামনে থাকা প্রিয় মানুষটির সাথেও ইচ্ছাকৃতভাবে খারাপ ব্যবহার করে ফেলি। ফলে ব্যক্তিগত জীবনেও নানা সমস্যা র সৃষ্টি হয়। এই মন খারাপ নানা কারণে হতে পারে, নিত্যদিনের এক ঘেয়েমি কাজ থেকে, অনেক দিন বাইরে কোথাও ঘুরতে না বেরোনোর জন্য, কিংবা মানসিক অবসাদ থেকেও মন খারাপ হতে পারে। আবার কোনো কারণ ছাড়াই অকারণেও মন খারাপ হতে পারে।
তবে এই মন ভালো করার ও বেশ কিছু উপায় আছে। এই গুলি অবলম্বন করলে আপনিও মানসিক দিক থেকে প্রশান্তি লাভ করবেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক আজকের টিপস।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান :
বিজ্ঞান বলছে , শারীরিক ও মানসিক উভয় দিক থেকেই সুস্থ থাকতে গেলে পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। সারাদিনে অন্তত পক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুম খুব প্রয়োজন। ঘুম ঠিক ভাবে হলে শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে সুস্থ থাকা যায়। ফলে মন ও থাকে ফুরফুরে।
নিয়মিত শরীর চর্চা করা :
নিয়মিত শরীর চর্চা করলে রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, পেটের গোলমাল ঠিক থাকে, হজম এর সমস্যা কমে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। মানসিক প্রশান্তি বিরাজ করে। তাছাড়া মন ভালো রাখতে মেডিটেশন বা ধ্যান করতে পারেন। এটি মনের ওপর ব্যাপক ভাবে প্রভাব বিস্তার করে। মন ভালো রাখার জন্য নিয়মিত শ্বাস এর ব্যায়াম গুলি করবেন।
সকালের রোদ গায়ে লাগান :
সকাল সকাল এক কাপ চা নিয়ে ব্যালকনি তে কিংবা বাগানে চলে আসুন। সকালে পাখির কলতানে, সকালের মিষ্টি রোদে বসে চা খাওয়ার মজাটাই আলাদা। মন , মেজাজ ফুরফুরে হয়ে যায়। সারাদিনে কাজের এনার্জি পাওয়া যায়। এছাড়া সকাল এ সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ভালো গান শুনুন :
গান মানুষ এর মন কে ভালো করে দেয়। আমরা আনন্দে ও যেমন গান শুনি। দুঃখের সময় ও গান আমাদের সঙ্গী। তাই মন ভালো রাখতে চাইলে ভালো ভালো গান শুনতে পারেন।
নিজেকে ব্যস্ত রাখা : মন খারাপ থাকলে একলা চুপচাপ বসে থাকলে আরো বেশি বিষণ্ণতা চেপে বসবে। আরো বেশি অবসাদ আপনাকে ঘিরে ধরবে। তার থেকে নিজেকে ব্যস্ত রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। এই সময় আপনার ভালো লাগার কাজ গুলো করুন। কেউ হয়তো রান্না করতে ভালো বসেন ইউনিক কিছু রান্না করে প্রিয়জনকে খাওয়ান। তার পরিতৃপ্ত হাসি দেখে আপনার মন ভালো হয়ে যাবে।
কিংবা কেউ যদি হাতের কাজ করতে ভালো বসেন যেমন সেলাই, জুয়েলারি র কাজ এইসব ও করতে পারেন। নিজের পছন্দের কাজ করলে মন ভালো হয়েযায়। আর সেটা যদি বানানো হয়ে থাকে প্রিয়জনের উদ্যেশ্যে , তাহলে তো মন প্রাণ কাজেই ডুব দেবে। মন খারাপ কখন গায়েব হয়ে যাবে।
ছবির অ্যালবাম এ চোখ রাখতে পারেন :
হটাৎ কোনো কারণে মন খারাপ? বাড়িতে একা আছেন? কারো সাথে টাইম কাটানোর মতো কেউ নেই? এইদিকে মন বিষণ্ণতা য় পরিপূর্ণ। উপায় আছে। আলমারি খুলে পুরোনো অ্যালবাম বের করুন। দেখবেন ছবি গুলো দেখতে দেখতে আপনি পৌঁছে গেছেন অতীতের সুখের স্মৃতিতে মন আপনিই ভালো হয়ে যাবে।
মোবাইল এ কথা বলুন : মেসেজ নয়। কল করে পুরোনো বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় দের সাথে কথা বলুন। তাদের খোঁজ খবর নিন। মন ভালো রাখার এটি আরো একটি উপায়।
ডায়েরি লিখুন : লেখার চেয়ে ভালো জিনিস আর কি হতে পারে বলুন। যে কথা গুলো আপনি কাউকে বলতে পারেন না তা ডায়রিতে লিখুন। মন হালকা লাগবে। তাছাড়া মজার মজার স্মৃতি লিখুন।
শরীর চর্চা করুন : হালকা মিউজিক সিস্টেম চালিয়ে জুমবা প্রাকটিস করতে পারেন। কিংবা নাচ ও। এই গুলিই হলো মন ভালো রাখার ওষুধ।
কাছে পিঠে ঘুরে আসুন :
কাছাকাছি কোনো পার্ক , কিংবা দর্শনীয় স্থান থাকলে ঘুরে আসতে পারেন। প্রকৃতির মাঝে নিজের কয়েকটি সেলফি নিতে পারেন। মনটা পুরো গ্রীন হয়ে যাবে।
ভালো সিনেমা , শিক্ষণীয় কিছু ভিডিও দেখুন :
ভালো সিনেমাও দেখা যেতে পারে। ইউটিউব বা গুগল থেকে শিক্ষণীয় কিছু শিখতে পারেন। বই পড়তে ভালোবাসলে সুন্দর সুন্দর গল্প ও পড়তে পারেন। জানেন তো বই এর চেয়ে ভালো বন্ধু আর কেউ নেই। এতে ই মন থাকবে সতেজ।
রূপচর্চা করতে পারেন :
অনেকেই এই ব্যাপারটা প্রচন্ড ভালোবাসে। নিজেকে পরিপাটি করে রাখাও একটা শখ। রূপচর্চা মানে ই ফর্সা হওয়া নয়। নিজের সেলফ কেয়ার। অনেকে ই এটা করতে খুব পছন্দ করে। অবসরে, ঘরোয়া উপাদান দিয়ে নিজের স্কিন ও হেয়ার এর চর্চা করুন। ভালো থাকবেন।
পোস্টটি ভালো লাগলে একটি লাইক দেওয়ার অনুরোধ রইলো।
0 মন্তব্যসমূহ