মোবাইল এর প্রতি শিশুর আসক্তি যেভাবে কমাবেন ( How to reduce the child's addiction to mobile

 মোবাইল এর প্রতি শিশুর আসক্তি যে ভাবে কমাবেন।




এখন বাচ্ছা থেকে বুড়ো সকলেই স্মার্টফোন এর ভক্ত। ট্রেনে, বাসে সর্বত্র যে দিকেই চোখ যায় লোক জন মোবাইল ঘাটছে। খুব কম সংখ্যক মানুষ বই কিংবা খবরের কাগজ পড়ছেন। বেশিরভাগই অনলাইনেই সব কিছু পড়ছেন। আর এখনকার কর্মব্যস্ততার জীবনে মা বাবা দুজনেই খুব ব্যস্ত। তাই তারা সন্তানদের শান্ত রাখার জন্য, কিংবা খাওয়ার সময় মোবাইল ফোন হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন। এরফলে ছোট্ট খুদেরা মোবাইলে কার্টুন দেখতে দেখতেই খাচ্ছে। কিন্তু আস্তে আস্তে তারা যত বড় হচ্ছে ততই আরো বেশি করে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি মা, বাবার ও চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়ছে। কিন্তু কিছু পদ্ধতি মেনে চললেই বাচ্ছাদের এর কুপ্রভাব থেকে মুক্ত করা সম্ভব।


টাইম দেওয়া : 

শিশুর মোবাইল এর প্রতি আসক্তি কমাতে গেলে অবশ্যই তাকে সময় দিতে হবে। সারাদিনের কিছুটা সময় শিশুর জন্য রাখতে হবে। তার সাথে খেলা, তাকে পার্কে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া , তাকে গল্প বলা এই সব এর মধ্যে আপনার শিশুকে ব্যস্ত রাখবেন। দেখবেন আপনা থেকেই মোবাইল এর প্রতি শিশুর আসক্তি দূর হয়ে গেছে।



সৌজন্য: Getty Images




তাছাড়া পড়াশোনা ছাড়াও বিভিন্ন হাতের কাজ ক্রিয়েটিভিটি তে উৎসাহ দিতে পারেন। বাচ্ছার যে দিকে আগ্রহ সেটা গান হতে পারে, হতে পারে নাচ তাতে বাচ্চার সাথে আপনিও অংশগ্রহণ করুন। দেখবেন বাচ্চা র মোবাইল এর প্রতি আসক্তি কমে যাবে।


একটা নিৰ্দিষ্ট টাইম পর্যন্ত মোবাইল ব্যবহার করতে দিন : 


মোবাইল এর স্কিন টাইমিং দিয়ে রাখুন। যাতে একটা সময়ের পর আপনা থেকেই ফোন অফ হয়ে যায়। তাছাড়া আপনি যা কর বেন বাচ্চাও তাই শিখবে। বাচ্চারা কিন্তু বড় দের খুব অনুশরণ করে। সুতরাং আপনি যদি মোবাইল দেখেন সবসময় বাচ্চার সামনে স্বাভাবিক ভাবেই সেও তাই করতে চাইবে। সুতরাং চেষ্টা করুন তাদের আড়ালে মোবাইল ব্যবহার করতে।


শিশুর হাতে রঙিন হোক প্রতিটি পাতা : 

শিশুকে অবসরে আঁকতে দিন।

Car drawing for kids

(আমার ছেলের আঁকা)



আঁকার ফলে তাদের মানসিক বিকাশ ঘটে। কল্পনা শক্তি বাড়ে।


Boat drawing for kids

( অবসরে আমার ছেলের আঁকা ছবি )



তাদের মনে যা ইচ্ছা হয় সেটাই আঁকতে দিন। এতে তাদের আঁকার হাত এর দক্ষতা বাড়বে।


Easy flower drawing for kids


আর মোবাইল এর প্রতি নেশা কেটে যাবে। আমার ছেলেও অবসরে আঁকে। খুব ভালোবাসে আঁকতে।


হাতের লেখা প্রাকটিস করান :


এখন ছোট্ট শিশুদের ও পড়ার চাপ থাকে অনেক। তাই বিভিন্ন সাবজেক্ট পড়ার পর আলাদা কোনো সময় থাকে না হাতের লেখাটা প্রাকটিস করার। কিন্তু এটা খুবই দরকার। তাই আমি এই জন্য অবসর টাইম টাকে কাজে লাগাই। আমি ওকে বই দেখে হাতের লেখা প্রাকটিস করতে বলে ঘরের কাজ করি। ও কিন্তু বাধ্য ছেলের মতো লেখে। এগুলো ও করতে খুব ভালোবাসে। এই টাইম গুলো আমি এইসব কিছুতে ব্যস্ত রাখি। তাই মোবাইল এর বায়না একদম ই করে না। এই টিপস টাও আপনারা কাজে লাগাতে পারেন।


ছোট ছোট কাজে অংশগ্রহণ করতে দিন : 

আমিও একজন শিশুর মা। আমিও আমার ছেলেকে দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোট কাজ গুলি করতে বলি আমার ৬ বছরের ছেলেকে। এর ফলে তাকে কাজে মাধ্যমে ব্যস্ত রাখা যায়। আর ও খুব উৎসাহের সাথে কাজ গুলো করে। এখানে কাজ বলতে সবাই শিশুশ্রম বলে বসবেন না। আমি টুকিটাকি কাজের কথা বলছি। যেমন ধরুন আমি সবজি কাটছি কিন্তু হাতের সামনে বেগুন কিংবা টমেটো টা নেই।



সৌজন্য: Getty Images


ওকে আনতে বললে ঠিক নিয়ে আসে একটা একটা করে। এটা ও ছোট থেকেই করে। আর এর মাধ্যমেই ও বিভিন্ন সবজির নাম, তাদের রং শিখেছে। তারপর ধরুন পড়ার বই এর তাক টা নিজে থেকে গোছায়। আমি না বললেও ও করে। এই ভাবেই ওর অবসর সময় কাটে। মোবাইল এর দরকার পড়ে না।


গাছের পরিচর্চা করুন ছোট্ট খুদে কে সঙ্গে নিয়ে : 


সৌজন্য: Getty Images/iStockphoto


আমরা যারা কম বেশি শখে গাছ লাগাই প্রতিদিনই প্রায় জল দিতে হয়। এইসময় আপনার খুদেকেও এই কাজে অংশগ্রহণ নিতে উৎসাহিত করুন। বাচ্ছারা গাছে জল দিতে খুব ভালোবাসে। এই ভাবেই তাদের গাছের সাথেও বন্ধুত্ব হয়ে যায়।


সতর্ক থাকুন : 


: এখন  বেশিরভাগ পড়াশোনাই অনলাইনএ হয়। তার জন্য মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার তো দরকারই। কিন্তু আপনি নজরে রাখবেন সন্তান যেন আপত্তিকর কোনো ওয়েবসাইট না ওপেন করে। এবং সেই সমস্ত ওয়েবসাইট গুলি বন্ধ করে দেবেন। প্রযুক্তি র যেমন ভালো দিক আছে, তেমন খারাপ দিক ও আছে। আমাদের উচিত ভালো ও খারাপ এর পার্থক্য টা তাদের বুঝিয়ে দেওয়ার।


এই কয়েকটি টিপস মেনে চলুন দেখবেন আপনার বাড়ির ছোট সদস্য রা আর মোবাইল এর প্রতি আগ্রহ দেখাবে না।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ