নিঃসঙ্গ রাতের যন্ত্রনা/ বিচ্ছেদ মানুষকে কি ভাবায় bengali heart touching quotes/story/love story

 



মানুষ একদিনেই ইচ্ছাকৃত ভাবে মরতে চায় না। ধারালো ছোট্ট ব্লেড টা অকারণে তোমার হাতের নীলাভ শিরার সামনাসামনি এসে হাজির হয় নি। যে নিঃসঙ্গ রাতে ব্লেড টা হাতে নিয়েছ তারও বোধ করি মাস দুই আগে থেকে তোমার রাতগুলো কান্নায়, দুঃস্বপ্নে, নিজের কাছে হার মানতে মানতে শেষ হয়েছে। 


( Bengali heart touching story/ love story/quotes)




(বাংলা গল্প/ বিচ্ছেদের গল্প/ ব্রেকআপ এর গল্প)

বার বার হাত চলে গেছে মোবাইলে ওই নাম্বারটা ডায়াল করতে। কিন্তু না, ও প্রান্ত থেকে কোনো ইতিবাচক শব্দ চয়ন তোমার জন্য আসে নি। এসেছে যান্ত্রিক কিছু সংলাপ -- "আপনার ডায়াল করা নম্বরটি বর্তমানে ব্যস্ত আছে কিংবা নাম্বারটি এখন সুইচ অফ আছে। " তুমি জানো তোমার সেই প্রিয় মানুষটা তোমার সাথে সমস্ত রকম যোগাযোগ ছিন্ন করে দিয়েছে। কিন্তু তুমি তখন ও আশার হাল ছাড়তে চাইছো না। চোখের জল বাধা মানছে না, মন কোনো যুক্তিপূর্ণ কথা শুনতে চাইছে না। শুধু একটাই তো কথা ভাবছো --- এ....টা হতে পারে না। এত ভালোবাসা, এত স্মৃতি, এত গুলো সুন্দর মুহূর্ত এগুলো মিথ্যে হতে পারে না। সব ঠিক হয়ে যাবে। আবার আগের মতো ও ফিরে আসবে। ঠিক আসবেই। দু মাস এভাবেই বিনিদ্র রাত কাটিয়ে , জীবনের কাছে হেরে গিয়ে, ভালোবাসার কাছে দমে গিয়ে ব্লেড টা আজ তোমার সঙ্গ দিয়েছে তোমার ভালোবাসার সমাপ্তি ঘটাতে।





(Heart touching story/quotes)


ঘুমের ওষুধের ট্যাবলেট গুলো  রাতের অন্ধকারে ঠাকুমার ঘর থেকে চুরি করে আনার সময়ও ঠাকুমার ঘুমন্ত মুখ টা দেখে ক্ষনিকের জন্য  পৃথিবীর সমস্ত সুন্দরতম মুহূর্তের কথা মনে পরে গেলেও এক ছুট্টে ট্যাবলেট গুলো নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছো। ফোঁপানোর মতো কান্নাগুলো আর্তনাদে জায়গা করে নিতে চাইল। ট্যাবলেট গুলো তৎক্ষণাৎ পকেটে ভোরে দৌড়ে ওয়াশরুম বন্ধ করে কল চালিয়ে কাঁদতে থাকলে। জল ঝাপটা দিলেও চোখের জল বেরিয়েই আস্তে থাকলো। সেই বিগত দুই মাস ধরে নিজের সাথে যে লড়াই টা লড়ছ তারই পরাজয় স্বরূপ ট্যাবলেট গুলো খেয়ে চির নিদ্রায় ঘুমোতে চাইছো তুমি। কেন বলতো? শুধুই কি ভালোবাসা? না । তুমি অনেক কিছু হারিয়ে আজ পরাজিত বিশ্বাস, সন্মান, যোগ্যতা, সময়, স্মৃতি ভালোবাসা। যা এই পৃথিবীতে সুন্দরতম কিছু শব্দ কিছু আবেগ। এগুলো তোমার জীবন থেকে চলে গেছে তাই।



জানি নিঃশব্দ রাতের শহরে সবাই যখন সুখ নিদ্রায় মগ্ন তুমি তখন একটানা ঘুরন্ত পাখা টার দিকে তাকিয়ে আছো। ভাবছো ওখানেই জীবনটাকে শেষ করে দিতে পারলে বেশ হয়। ও দেখুক আমি কেমন ঘড়ির ঠিক কাটার মতো ঝুলে ওর জীবন থেকে সমস্ত কাঁটা কে উপরে ফেলে দিয়েছি। আমি নিজেকে শেষ করে ওকে মুক্ত করেছি। ও একবার এসে দেখুক। কিন্তু.... কিন্তু ও আদেও দেখবে কি ? কি জানি.... মৃত্যুর পরেও কি আত্মারা আশে পাশে থাকে? তাহলে হয়তো অদৃশ্য হয়ে দেখতে পেতাম আমায় এই অবস্থায় দেখে ওর কেমন অনুভব হচ্ছে। 

ঠিক এই গুলো ভেবেই ওই দুঃসময় এর রাত গুলো কেটে যায়। 


আমি জানি রাতের অন্ধকারে তারা দের মেঘের সাথে লুকোচুরি খেলা দেখতে দেখতে হটাৎ ই পিকলু দের  পাঁচ তলা বিল্ডিং টার দিকে চোখ চলে গেছে। মনে হয়েছে যেন এখুনি ছাদে উঠে নিজের শরীরটাকে তুলোর মতো ছেড়ে দিই নীচে। এত অবিশ্বাস, এত ঘৃণা নিয়ে এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে ইচ্ছে নেই আর। 


আমি জানি ট্রেনটা প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তুমি দৌড়ে গিয়ে নিজেকে এক নিমিষে মুক্তি দিতে চাও। যেখানে যন্ত্রনা, কষ্ট এক লহমায় নিঃশেষ হয়ে যাবে। আর তুমি চিরতরে ঘুমিয়ে যাবে। জীবনের সমস্ত যাতনার অবসান চাও। আসলে কি জানতো, ভালোবাসা যখন আসে তখন আমাদের জীবন টাকে এতটাই রঙীন করে যায় যে, তার চলে যাওয়ার সাথে সাথে আমাদের জীবন চক্রের প্রতিটা মুহূর্ত গুলোকে ফিকে করে দিয়ে যায়। 



 আমি এও জানি, এত কিছু ভাবার আগে তুমি অনেকবার চেয়েছো তাকে আঁকড়ে ধরতে, জড়িয়ে ধরে নিজের ভালোবাসার গভীরতা বোঝাতে, পায়ে ধরে সম্পর্ক টাকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলে, তাকে পাওয়ার জন্য যা কিছু শর্ত মেনে নিতে চেয়েছিলে। নিজের আপনজন দের ছাড়তে পর্যন্ত দ্বিধা কর নি। কিন্তু পার নি। বাস্তবতার কাছে হেরে গেছো। ভালোবাসার কাছে তোমায় হার মানতে হয়েছে। 


আসলে কিছু কিছু মানুষ আমাদের জীবনে ক্ষনিকের জন্য এসে আমাদের জীবনের সুন্দর দিন গুলকে নষ্ট করে দেয়। পরিবার, অপজন, বন্ধু বান্ধব দের থেকে আমাদের যোগাযোগ বিছন্ন করে দেয়। তারপর নিজেদের স্বার্থ ফুরিয়ে গেলে আর ফিরেও তাকায় না সেই দিকে। তোমার মৃত্যুতেও তার কিছু যায় আসে না। আর মৃত্যু টা কোনো সমাধান ও নয়। আমি জানি ওই সময় গুলোতে বেঁচে থাকা খুব কঠিন। কিন্তু হুম, কাজ এটি এমনই একটি জিনিস যা তোমায় খারাপ সময় গুলো ভুলিয়ে দিতে ওষুধ এর মত কাজ দেয়। তুমি কাজে ডুব দাও। যা তোমার ভালো লাগে সেই কাজ নিয়ে মেতে থাকো। তোমার কর্মের সফলতাই তোমায় একদিন সব কিছু ভুলিয়ে তোমার প্রাপ্ত সন্মান ফিরিয়ে দেবে। এই বিশ্বাস নিয়েই সামনের দিকে এগিয়ে চলো।


ছবি : সংগৃহিত

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ