( আমার ছবি)
"আমি এক ফেরিওয়ালা ভাই...
স্বপ্ন ফেরি করে বেড়াই।"
এই গানটা নিশ্চই অনেকেই শুনেছেন? বেশ সুন্দর গানটি। আমাদের মন ছুঁয়ে যায়। কিন্তু আমি আজ একটা অভিনব ফেরিওয়ালা র গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতে এলাম। খুবই বাস্তব একটি ঘটনা। বর্তমান নিউজ পেপার এ পড়লাম। আমার মন ছুঁয়ে গেল। আপনাদের কাছে না শেয়ার করে পারলামনা।
এমন একটা কণ্ঠস্বরে পথ চলতি আগন্তুক মানুষ টার হাঁটা রূদ্ধ হয়ে গেল। আচ্ছা ঠিকই শুনছি তো? নিজের কানটা কে বিশ্বাস করানোর অভিপ্রায়ে পিছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখেন সত্যি ই একজন ভদ্রলোক হাঁকতে হাঁকতে যাচ্ছেন - " প্রেশার, সুগার, মাপবেন নাকি? " স্বভাবত ই এ হেন আশ্চর্য জনক কণ্ঠস্বরে থমকে দাঁড়ালেন ।
দেখলেন পরনে হলুদ শার্ট, কালো প্যান্ট, পালিশ করা জুতো এক হাতে স্টেথোস্কোপ , ও অন্য কাঁধ এ কালো ব্যাগ নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন হাঁকতে হাঁকতে।
উনি শিয়ালদহ ফুটপাত চত্তরে একটি চায়ের দোকানে চা খেলেন। মাপাবেন প্রেশার? বলে আবার বেরিয়ে হাঁটতে শুরু করলেন।
উনি অবশেষে বুঝতে পারলেন ভদ্রলোক প্রেশার, সুগার মাপেন। কিন্তু এই ভাবে ঘুরে ঘুরে প্রেশার সুগার মাপা? মানে প্রেশার সুগার এর ফেরিওয়ালা!
নাম পার্থ রায়। হাবড়া নিবাসী। গত দশ বছর ধরে এইভাবেই শিয়ালদহ চত্ত্বরে সুগার, প্রেশার মেপে জীবিকা নির্বাহ করছেন। প্রেশার মেপে দিলে নেন দশ টাকা, স্ট্রিপ ব্যবহার করে সুগার মাপলে নেন ৩০ টাকা। দৈনিক বেলা ১২ টা থেকে যন্ত্র ভর্তি ব্যাগ নিয়ে পথ চলতি, দোকান দার দের সুস্থ রাখার তাগিদে ঘুরে চলেন পার্থ বাবু। দোকান দার রা পথ চলতি মানুষ রা প্রেশার, সুগার চেক ওকরেন তাঁর কাছ থেকে। পার্থ বাবু বিগত ১০ বছর ধরে এইখানে এই কাজ করে চলেছেন। সেই সুবাধে শিয়ালদহ চত্বরে অনেকে ই পার্থ বাবু কে খুব ভালো ভাবে চেনেন। একজন দোকানদার বললেন, সকাল থেকে দোকান এ থাকি, বাড়ি যেতে সেই রাত তখন আর ডাক্তার দোকান ওতো খোলা থাকে না। তাই দিনের বেলায় পার্থ বাবু কে দিযেই চেক করিয়ে নিই। দুই দিন ছাড়াই প্রেশার চেক করিয়ে নিই। অনেকে আবার পার্থ বাবুর কাছে শরীর ও চেক করে নেন।
পার্থ বাবুর কাছ থেকে জানা যায় তিনি দশ বছর ধরে এই কাজ করছেন। তিনি জেনারেল ডিউটি এসিস্ট্যান্ট অর্থাৎ ( জিডিএ) কোর্স কমপ্লিট করেন। একটি দোকান এও কাজ পেয়েছিলেন। কিন্তু ঠিকঠাক টাকা পেতেন না । তাই এইভাবে রোজগারের পথ বেছে নিয়েছেন। ওনার পরিবারে আছেন ওনার মা, বোন, স্ত্রী, ও দুই সন্তান। পেটের দায়ে এইভাবে ঘুরে ঘুরে তিনি এই কাজ করেন বিকাল অবধি তাতে ১০০ থেকে ১৫০ মতো রোজগার হয় দিনে। তারপর বাকি সময় টা বাড়ি বাড়ি ফিজিওথেরাপি করেন। ওনার বয়স ৪২ বছর।
কুর্নিশ জানাই আমি এনাকে। উনি পথচলতি অগণিত মানুষের ভগবান। এখন কার দিনে প্রেশার সুগারের রুগী অনেক। কিন্তু এইসব রোগ নিয়েই মানুষ কে বাইরে বেরোতে হয়। তাদের জন্য আপনি দেবদূত। অনেক দূরে থেকেও পার্থবাবু আপনার মত মানুষকে আমি প্রণাম জানাই। আপনার এই মহৎ কর্মের কথা আমার এই স্মৃতির পাতায় না লিখে থাকতে পারলাম না। আপনি ভালো থাকবেন স্যার। ভালো আপনাকে থাকতেই হবে অগণিত মানুষ দের জন্য।সর্বশক্তিমান ভগবান আপনার মঙ্গল করুন।
আপনাদের কাছে এই মানুষ টার কথা শেয়ার করে খুব ভালো লাগলো। সত্যিই পৃথিবীতে এইরকম মানুষদের খুব দরকার। আমি পেপার পড়তে পড়তে এইরকম একটা ঘটনা চোখে পড়ল তাই শেয়ার করে দিলাম।
( তথ্যসূত্র : বর্তমান নিউজ পেপার ১১মার্চ)
আমি এখন ব্লগটা লিখছি দুপুর বেলায়। এখন আর্য্য ঘুমোচ্ছে। পাশে আমার মা ও । বাবার বাড়িতে টাইম টাও ভালো পাই তাই মনের আনন্দে ব্লগ করছি। আমার ব্লগ ভালো লাগলে অবশ্যই সাবস্ক্রাইব করে দেবেন। আপনাদের একটা সাবস্ক্রিপশন আমায় আরো ব্লগ লিখতে সাহায্য করবে।
আমার নিয়ে কিছু কথা :
খুবই সাধারণ গৃহবধূ আমি। এই মুহূর্তে আমার নিজস্ব পরিচয় দেওয়ার মতো আর কিছু নেই। শুধু এইটুকু পরিচয় দিতে পারি আমার নাম তনুশ্রী দাস।তবে আমার খুব ইচ্ছা নিজেকে একজন সফল ব্লগার হিসাবে দেখা। কি জানি আমার স্বপ্ন সত্যি হবে কিনা । আমার মনের আনাচে কানাচে যে গল্প, যে অনুভূতি, চাওয়া পাওয়া জেগে ওঠে তা আপনাদের ভালো লাগবে কিনা । যদি ভালো লাগে তা আমার ভগবানের অশেষ কৃপার ফল।
আমি আমার জীবনের খুঁটিনাটি যা কিছু সব শেয়ার করতে চাই। কিন্তু আমার অভাব আছে সব কিছুর। যেমন ধরুন ভালো ফোন ক্যামেরা ভালো জিনিস পত্র যেগুলো দেখতে অনেক আকর্ষণীয় লাগবে দেখতে দর্শক দের। আমি সার্চ করে দেখেছি সফল ব্লগার রা খুব সুন্দর করে ডেকোরেট করে ছবি দেয়। তাদের ওয়াশিং মেশিন, এসি, ভ্যাকুম ক্লিনার, টাইলস বসানো মেঝে, ঝা চকচকে বাড়ি সব আছে। যাতে করে তারা খুব সুন্দর করে প্রেজেন্টেশন করে। কিন্তু আমি যে খুব সাধারণ । সাধারণ ঘরের মেয়ে সাধারণ ঘরের বউ। এত কিছুই তো নেই। আমার যেমন থালা বাসন তাতেই খাই সেই ছবি ই দিচ্ছি। বিশ্বাস করুন আমার মধ্যে কোনো আর্টিফিশিয়াল কিছু নেই। আমি যেটা আমি সেটাই আপনাদের কাছে তুলে ধরি। আমার বিশ্বাস আমি ঠিক একদিন সফল ব্লগার হবো । এইভাবেই হবো। শুধু আপনাদের আশীর্বাদ ভালোবাসা যেন আমার সাথে থাকে।
আমি এখানে একটু বেশি সময় পাচ্ছি তাই লিখছি। শশুর বাড়ী গেলে এত টাইম পাবই না। খুবই ব্যস্ত জীবন । সবাইরই শশুর বাড়িটা খুব ব্যস্ততা তেই কাটে। বাবার বাড়ি এলে যেন মুক্ত পাখি। আমি খুব কথা বলছি এখন তাই না? এখন আমার অনেক অনেক সময় খুব কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে আপনাদের সাথে। জানেন তো ছোট বেলা থেকেই খুব লিখতে ভালোবাসি। তখন তো আর এইসব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এত হয় নি। ডায়েরি তে লিখতাম। প্রতিদিনের ঘটনা লিখতাম । সুখ দুঃখ লিখতাম। যখন দুঃখের কথা গুল লিখতাম চোখের জল ফোটা ফোটা পরে লেখা গুলো আবার কালিতে লেপ্টে যেত। প্রেমের কথা লিখতাম।ভালো লাগার কথা লিখতাম। ভালোবাসার কথা লিখতাম। আরো অনেক কিছু । আমরা ছিলাম খুবই গরিব। না পাওয়ার কথা লিখতাম। সব কিছু আমাদের পেতে নেই সেসব কথা লিখতাম। যে মাস্টার ফ্রিতে পড়াতো লজ্জায় কুঁকড়ে থাকতাম। লাজুক এ ছিলাম। বার বার সেই স্যারের কাছে কৃতজ্ঞ থাকার কথা লিখতাম। সেই ঘের ওয়ালা লাল চুড়িদার টার কথা লিখতাম যেটা আমার খুব পছন্দের। কিন্তু বাবার কিনে দেওয়ার সমর্থ ছিল না। লিখে লিখে মনের চাহিদা মেটাতাম। আজ ও মেটাই মনের চাহিদা। এখানে লিখে।
কথা বলতে খুব ভালোবাসি তো আমার শশুর বাড়ী তে কথা বলার লোক খুব কম। তাছাড়া বোকা আমি ছোট থেকেই বুদ্ধি খুব কম। লোক আমার সাথে মিশে সহজেই আমার থেকে কথা বের করে নিয়ে আমায় ফাঁসিয়ে দেয়। তার থেকে আমার এই ডায়েরি বা ব্লগ ই শ্রেয়। নেই কোনো চালাকি। শুধু মন খুলে বলো। এই ভাবেই আমি সুখী। বেশ সময়টা কাটছে আমার।
এত কিছু লিখলে এবার বোরিং হয়ে যাবেন আপনারা। আজ তবে আসি। হ্যা, যাওয়ার আগে আর একটা তাজ্জব খাবারের ছবি দিলাম। এটাও আমার ফেবারিট । ফুলুরির ঝাল।
( ফুলুরির ঝাল )
আপনারা এই ডিশ টা খেয়েছেন? খুব ভালো একটা রেসিপি। ভাতের সাথে খুব ভালো লাগে। আজ আমার ও একটা ছবি দিলাম। ভালো থাকবেন সকলে। নিজের মনে নিজে প্রাণ খুলে আপনাদের কাছে লিখি নিজের কথা টাইপিং করতে গিয়ে কোথাও বানান ভুল হলে ক্ষমা করে দেবেন প্লিজ।
0 মন্তব্যসমূহ