সব সময় ট্রেন্ডিং এ গা ভাসিয়ে দিলেও চলে না। এতে নিজস্ব সত্ত্বাটা যায় হারিয়ে। ( life style blog / daily blog)

 

Flower

( আমার বাবার বাড়ির সজনে গাছের ফুল )


আজ ১২ মার্চ। আমি বিগত দুই দিন হল বাবার বাড়ি এসেছি। আমার বাবার বাড়ি সিঙ্গুর। গত দুই দিন মা বাবার আদর যত্ন খেতে এত টাই ব্যস্ত ছিলাম যে ডেলি ব্লগ দেওয়া সম্ভব হয় নি। আজ দুপুরে খেয়ে দেয়ে আপনাদের সাথে গল্প করতে বসলাম। বলা যেতে পারে আমার জীবনের সাথে ঘটা ঘটনা গুলি শেয়ার করতে বসলাম। তবে এই দু দিন যে একদম ই ব্লগ দিই নি তা নয়। দিয়েছি সেই গুলি আমার ব্লগ টি খুললে দেখতে পাবেন। ও গুলো ট্রেন্ডিং ব্লগ। মানে এই কয়েকদিন এর মধ্যে যে গুলি বেশি করে গুগল এ সার্চ হবে তা নিয়ে লিখেছি। আমি জানি একটা ব্লগ লিখতে গেলে ট্রেন্ডিং টপিক নিয়ে লিখলে ভিউ ভালো হয়। কারণ মানুষ তো ওগুলোই বেশি দেখে। কিন্তু সত্যি বলছি আমি আমার মতো করে চলতে বেশি পছন্দ করি। ব্লগ টা আমার কাছে  অনেকটা একটা ডায়েরির মত। আমার সারাদিনের ভালো লাগা খারাপ লাগা সুখ দুঃখ এগুলো ব্লগে লিখে ভাসিয়ে দিতে চাই। ভেসে যাক দূর দুরান্তে।  আমার মতো অচেনা অজানা এক গ্রামের বধূর জীবনের গল্প পড়ুক কেউ দেশে বসে কেউ বা বিদেশে। আমি লেখায় সাবলীল তাই তো এই ভাবে মনে কথা ব্যক্ত করতে ইচ্ছে হয় আপনাদের সাথে। 


তাহলে বলবেন দুই দিন গুগল ট্রেন্ডিং সার্চ এর টপিক নিয়ে লিখলাম কেন? লিখলাম এই কারণে যাতে আমার ব্লগ টায় একটু ভিউ হয়। যার মাধ্যমে দর্শক রা আমার ব্লগ টার হদিশ পায়। এই এত বড় পৃথিবীর এক কোণে তো আমি বসে আছি বলুন না? কে পাবে আমার খোঁজ আমার ব্লগের টাইটেল দিয়ে কখনো কি সার্চ হবে ? কখনোই নয়। তবুও নিজের চাওয়া পাওয়া টাকে ছাড়তে চাই না। তাই তো এই ভাবে বাঁচি। নিজের সাথে। নিজের ব্লগের মাধ্যমে নিজের অন্তরের কথা গুলো তুলে ধরে।


জানেন তো এই দুই দিন বাবার বাড়ি এসেছি। জানি হাতে এখন সময় পাব । এই ব্লগিং এর ব্যাপারে অনেক সার্চ করে পড়লাম।  কিন্তু আমার মতো এইরকম ভাবে জীবন ধারা তুলে ধরার মতো কোনো ব্লগ চোখে পড়লো না। ফরেন কয়েকটা ব্লগ অবশ্য পেয়েছি। কিন্তু তাও হাতে গোনা। অবশ্যই তারা খুবই পপুলার দেখলাম । তারা যে ছবি পোস্ট করে সেগুলো ও কি সুন্দর । পরিষ্কার। কিন্তু আমার তো ওতো দামি ফোন ও নেই। আর ওতো নিত্য নতুন জিনিস ও আমরা ব্যবহার করি না যে আপনাদের সামনে সুন্দর ভাবে প্রেজেন্টেশন করবো। গ্রামে থাকি এখানে যে থালা, বাসন আসবাবপত্র ব্যবহার করি সেই সব ছবি হয়তো একটু বেমানান লাগতে পারে। তবে আমার মধ্যে আমার ছবির মধ্যে কোনো আর্টিফিশিয়াল কিছু পাবে না। যেমন দৃশ্য তেমনটাই তুলে ধরবো।


গুগল ট্রেন্ডিং সার্চ এর টপিক নিয়ে লিখতে পারলাম এই দুই দিন দুটো কারণে।

এক, আমি বাবার বাড়ি আছি। তাই অনেকটা টাইম পাচ্ছি সেই কারণে রিসার্চ করে লিখছি। 

দুই, ছেলের পরীক্ষা শেষ আপনারা জানেন ই তাই। 

বাড়ী ফিরে আর ট্রেন্ডিং টপিক নিয়ে লেখা যাবে কি না জানি না। কিন্তু যেটা আমার আত্মা চায় সেটা নিয়ে লেখাই ভালো হবে আমি তাই এইরকম ই থাকবো। দেখি ই না, চিরাচরিত পথের উল্টো দিকে হেঁটে জীবনে কি পাই। সাথে তো আপনারা আছেন ই। কি তাই তো ? 


আজ বাবার বাড়িতে দুপুরে হয়েছিল আমার পছন্দের সব খাবার। আমি ই ঠিক করে দিয়েছিলাম পদ গুলি। এই গুলি আমার শশুর বাড়ী র লোকজন খুব একটা পছন্দ করেন না। তাই ওখানে আর হয় না।

Today bengali thali


( আমার আজকের থালা। আমি ছোট থালাতেই ভাত খেতে পছন্দ করি এতে ভাত অল্প নিলেও প্লেট ফুল দেখায় তাই। এটা আমায় ডায়েট করতে সাহায্য করে)



তাই বাবার বাড়ি আসলেই এই গুলো করতে বলি। আজ কের রান্না সরু লম্বা করে কাটা আলু , সাথে করলা ভাজা। বিউলির ডাল, বড়ির ঝাল। আমার খুব পছন্দের খাবার। সাথে ডিম সিদ্ধ টা ছিল। ডিম টা শশুর বাড়ি তেও হয়। ওটা ছাড়া বাকি রান্না গুলোর কথা বলছিলাম। 

Biulir dal

( বিউলির ডাল আমার খুব পছন্দের ডাল। আবার মায়ের হাতের তৈরি লাজবাব।)


Borir jhal
বড়ির ঝাল


Korola alu vaja

( করলা আলু ভাজা) 

Egg boiled



আমার কাকার মেয়ে খুব ছোট। আর্য্যর থেকে ৮ মাসের মাত্র বড়। ওর সাথে আমার ছেলে খুব খেলতে ভালোবাসে । আজ ওর খেলনার ঝুলি থেকে একটা মেয়ে বেলার খেলনা দেখে অনেক স্মৃতিরা ভিড় করে এল। মনে পড়ে গেল মেয়ে বেলার কথা। খেলনা টা দেখেই ছবি তোলার লোভ সামলাতে পারলাম না। তাই আপনাদের সাথেও শেয়ার করলাম।

Baby doll


( ছবিটা সামান্য কিন্তু স্মৃতিগুলো পাহাড় সমান। ) 


কি সুন্দর তাই না? পুতুলের ছোট ছোট দুটো পা বালিশ আর একটা ছোট্ট মাথার বালিশ। ওকে জিজ্ঞাসা করলাম কে করে দিয়েছে বালিশ গুলো? বললো মা। মানে আমার ছোট কাকিমা। আমরাও ছোট বেলায় এইরকম পুতুলের বালিশ জামা কাপড় রাখতাম। পুতুলের জন্য খেলনা বাটি নিয়ে রান্না করতাম। মেলা তলায় গিয়ে খেলনা বাটির সঞ্জাম দেখলেই কেনার বায়না করতাম। কত যে কিনতাম আর কত যে ভাঙতাম তার শেষ নেই। মায়ের রান্না করা আনাজের খোসা গুলো দিয়ে রান্না করতাম। কত স্মৃতি যা কোনো দিনও ভোলার নয়। আর যা কোনো দিনও ফিরেও পাব না। ইটের গুঁড়ো দিয়ে মসলা করতাম। 


অনেক কিছুই মনে পড়ে, জীবনে কি পেয়েছি আর কি পাই নি হিসাব করলে ভাবি কিছুই তো পাই নি। না একটা ভালো চাকরি, না নিজের পায়ে দাড়ানো কিছুই নয়। মা, বাবা অনেক আশা করেছিল। কোনো কিছুই সফল হয় নি। আমার জীবনে সফলতার গল্প খুব কম। হেরে যাওয়ার গল্প আছে বিস্তর। তবে কোথাও থেমে থাকি নি। শেষ করে দিই নি নিজেকে। কারণ আমার নিজেরও একটা সত্ত্বা আছে। আমার নিজস্ব গণ্ডিতেও আমি নিজের মত করে বাঁচতে পারি। আমি আমার  বাঁচার রসদ টা জানি। নিজেকে ব্যস্ত রাখতে জানি। তাই তো স্রোতের উল্টো পথে হাঁটবার সাহস আমার আছে। নাই থাক ট্রেন্ডিং কোনো টপিক, আমি আমার আলোকেই একদিন ঠিক পৌঁছে যাব আপনাদের দোয়ারে দোয়ারে। একদিন ঠিক আপনারা আপন করে নেবেন আমায় সেই বিশ্বাস রাখি। লিখতে লিখতে কেন জানি না চোখে জল এসে গেল। মোবাইল এর লেখা গুলো ক্রমশ আবছা হয়ে যাচ্ছে। পাশে মা শুয়ে আছে, আমার চোখের জল দেখলে মনে কষ্ট পাবে। যাই বোঝাই না কেন। মায়ের মন তো।


আজ এই পর্যন্ত ই। আবার কাল আসবো নতুন ব্লগ নিয়ে। বাবার বাড়ি আছি বলে স্পোকেন ইংলিশ টা ঠিক প্রাকটিস করা হচ্ছে না। তাই দেওয়া হচ্ছে না। সময় নিয়ে পড়ে দেব। এগুলো তো আমি ইউটিউব থেকে শিখে তবে দিই তাই জন্য। আজ আসি। বাই।


 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ