স্বপ্ন গুলো যখন চুরমার হয়ে যায় তখন নিজেকে কি মনে হয় জানো তো তিথি?
- প্লিজ অরিন, আমি আর তোমার ন্যাকা ন্যাকা কথায় গোলতে চাই না।
- কি বললে? আমি ন্যাকা! আজ আমায়
তুমি ন্যাকা বলছো?
- হ্যা হ্যা বলছি। তাই বলছি। ২৬ বছরের একটা ছেলে থুড়ি একটা পুরুষ মানুষ যখন এখনো কোনো চাকরি জোটাতে না পারে তাকে আর ন্যাকা না বলে থাকা যায়...
তিথির বলা কথা গুলো অরিন এর বুকে তীরের মতো সিধছিলো। গলা বুজে আসছিল।
ও কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিল না। শুধু করুণ দৃষ্টিতে তিথির দিকে তাকিয়ে ছিল।
তিথি এতক্ষন ঘুরেই দাঁড়িয়ে ছিল। অরিন এর চোখে চোখ পড়তেই ও অপ্রস্তুত এর মত নিজের অবিন্যস্ত চুল গুলো দিয়ে মুখ ঢেকে চোখের জল টুকু আড়াল করার চেষ্টা করলো।
বিকেলের শেষ সূর্যাস্ত তখন পশ্চিম গগনে প্রায় ঢলে পড়েছে।
- আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে অরিন - নাক টেনে রুমাল দিয়ে চোখ মুছে তিথি বললো, এবার আমায় উঠতে হবে।
- সন্ধ্যার শান্ত নদীর দিকে চেয়ে অন্যমনস্ক ভাবে অরিন বললো আর একটু থেকে গেলে হতো না?
- খানিক টা রাগ নিয়েই তিথি বললো ...না
- তিথি!
- হাত ছাড়ো অরিন
- যদি না ছাড়ি?
- অরিন প্লিজ এত গুলো বছর অনেক ...অনেক নাটক করেছ। আর নয়। আর আমি নিতে পারছি না।
হাত টা নিমিষের মধ্যেয়েই তিথির আয়তায় চলে এলো।
সেই বিশ্বাস, ভালোবাসার হাত টা ছেড়ে অরিন অপলক দৃষ্টিতে তিথির দিকে চেয়ে রইলো।
তিথি ওকে কিছু আর না বলে গঙ্গা বক্ষে নিজের চোখ দুটি মিশিয়ে দিল।
কিছুক্ষন দুজনেই নিরব হয়ে বসে রইলো।
বসন্তের একটা ফুরফুরে বাতাস ওদের এলো মেলো করে দিচ্ছিলো বারবার।
তিথি মাঝে মাঝে ওড়নাটা ঠিক করে নিচ্ছিল। এলোমেলো চুল গুলো এলোপাথাড়ি হওয়ায় আরো অগোছালো হয়ে যাচ্ছিল। তিথি আনমনেই আঙুল দিয়ে কানের পাশে গুঁজে নিচ্ছিল।
এমন দিন গেছে এই এলোমেলো চুল গুলোই অরিন কত সোহাগে গুছিয়ে দিয়েছে। এলিয়ে দিয়েছে তিথির পিঠে। চোখে চোখ রেখে কত না বলা কথা পড়ে নিয়েছে দুজন দুজনার।
চলবে ....
ছোটগল্প
0 মন্তব্যসমূহ