আমাদের বয়সের সাথে সাথে চুলের প্রোটিনের ঘাটতি ঘটে, তাই বয়স কালে চুল পাকে। এটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এখন অল্প বয়সী অনেক নারী, পুরুষদেরই চুল পাকছে। এইজন্য তারা মানসিক হীনমন্যতায় ভুগছেন। এই দিকে চুল কালো করার জন্য বাজার চলতি বিভিন্ন চুলের কালার কিনে চুলে লাগাচ্ছেন। তাতে রাসায়নিক এর পরিমাণ থাকে বেশি। তাতে চুল ব্যাপক হারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সাময়িক ভাবে কালো দেখালেও চুল টা কয়েকটি পরই রুক্ষ , শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে। ডগা ফাটার সম্ভবনা দেখা যাচ্ছে। সর্বোপরি আরো ব্যাপক হারে চুল পাকছে। আসলে চুলের মধ্যে থাকে রং এর বিন্দুর মতো কিছু কোষ। যা পিগমেন্ট সেল নামে পরিচিত। বয়স বাড়ার সাথে সাথে সেই সেল গুলো মারা যায়। তাই চুল পেকে যায়।
তাহলে অল্প বয়সে চুল পাকলে কালার না করে কি কোনো উপকার আছে? অবশ্যই আছে। চলুন আজ দেখে নেওয়া যাক কিভাবে ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায়ে চুল কালো করা যায়।
আমলকি দিয়ে তৈরি করুন তেল (Aamla oil) : আমলকি আমরা সবাই চিনি। আমরা অনেকেই হজমের জন্য আমলকি খেয়ে থাকি। আমলকি বা আমলার স্বাস্থগুন প্রচুর। এটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল। আমলা বা আমলকি বেটে নারকেল তেল এর সাথে মিশিয়ে মাখা যায় তাহলে চুল কালো হবে। আমলকির তৈরি তেল টি মেখে ৩০ থেকে ২ ঘন্টা অবধি অপেক্ষা করতে হবে। তারপর কোনো মৃদু শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। আমলকির তেল ব্যবহার করলে দীর্ঘদিন চুল কালো থাকবে। অকাল পক্কতা রোধ করতে সাহায্য করে আমলকির তৈরি তেল।
নারকেল তেল এর সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন (coconut and lemon oil):
এটি খুবই সোজা একটি উপায়। আর এর কার্যকরী তা অনেক। আপনারা ব্যবহার করলেই বুঝতে পারবেন। লেবুর গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। নারকেল তেল এর সাথে কোয়েকফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে যদি স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করতে পারেন ১০ মিনিট মতো তারপর ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। চুল হবে ঝলমলে রেশমের মতো। চুলে একটা প্রাকৃতিক সাইন দেবে। আর খুশকির সমস্যায় যারা নাজেহাল তারাও খুব ভালো ফল পাবে। চুল কালো ও হবে। চুলের গ্রোথ হবে।
পেঁয়াজ এর রস চুল কালো করতে ও মজবুত করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে( onion juice):
পেঁয়াজ এ থাকা সালফার চুল এর গোড়া মজবুত করে, চুল কে চটজলদি বাড়তে সাহায্য করে। চুলের ভলিউম আনতে সাহায্য করে। চুল কালো ও করে। একটা বড় পেঁয়াজ এর রস ভালো ভাবে চুল ও স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
কেশুত পাতা র রস দিয়ে তৈরি তেল (Bhringraj oil) : কেশরাজ পাতা বা কেশুত পাতা চুলকে কালো করতে সবচেয়ে উপযোগী। একবাটি মতো কেশুত পাতা বেটে ১০০ গ্রাম মতো নারকেল এর সাথে ফুটিয়ে নিন অল্প আঁচে ১০ মিনিট মতো। তারপর চেকে ঠান্ডা করে এই তেল টি নিয়মিত মাখলে চুল কালো থাকবে। সহজেই চুল পাকবে না।
তবে অনেকেই মনে করেন শুধু বাহ্যিক দিক থেকে চুল এর যত্ন নিলেই হবে তা কিন্তু নয়। স্বাস্থ্য সম্মত খাবার খেতে হবে। সারাদিনে ৪ লিটার জল খেতে হবে। ড্রাই ফ্রুটস খেতে হবে। সামুদ্রিক মাছ, পনির, শাক সবজি, টাটকা ফল খেতে হবে।
জবা ফুল এর তৈরি তেল (Hibiscus oil) : জবা ফুল ও চুল পড়া রোধ করে। চুলকে সিল্কি করে। বিশেষ করে চুলকে কালো করে, মজবুত করে। নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। ৪/৫ টি জবা ফুল বেটে ১০০ গ্রাম নারকেল তেল এ ফুটিয়ে ছেঁকে মাখবেন। আশানুরূপ ফল পাবেন।
0 মন্তব্যসমূহ