আজ আমার ছেলে রুবেলা ভ্যাকসিন নিতে গেল স্কুলে। সেই অভিজ্ঞতা তোমাদের সাথে ভাগ করে নিলাম।

 

rubella vaccine given at school



আজ 9 জানুয়ারি। সোমবার। আজ আমার ছেলে দের স্কুল থেকে রুবেলা ভ্যাকসিন দিয়েছে। গত 5 ই জানুয়ারি এই রুবেলা ভ্যাকসিন সম্পর্কিত আলোচনার জন্য ছেলেদের স্কুলে সকল পেরেন্টস দের মিটিং এ ডেকে ছিলেন তারা। মিটিং এ স্কুল এর প্রিন্সিপাল ম্যাম ছাড়াও আশা কর্মী, সিস্টার ছিলেন। ওনারা খুব ভালোভাবে বুঝিয়ে বলেছিলেন রুবেলা ভ্যাকসিন টা প্রতিটা বাচ্ছার নেওয়া কতটা জরুরি। নয় মাস বয়স থেকে পনেরো বছর বয়সী সকল বাচ্ছা দেরই এটা নেওয়া আবশ্যক। রাজ্য সরকার 9 জানুয়ারি থেকেই এই মূল্যবান কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছে। 

প্রতিটি স্কুলে, অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্রে, স্বাস্থ্য নিবাসে এই রুবেলা ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গেছে। পেরেন্টস মিটিং এ সিস্টার , ম্যাম রা বারবার বলে দিয়েছিলেন বাচ্ছার মা, বাবা যেন অযথা প্যানিক না হয়। আসলে বাচ্ছারা স্ট্রং ই হয়। সন্তান এর জন্য তো সব মা, বাবা ই খুব চিন্তিত। তাই বাচ্ছাদের ইনজেকশন দেওয়ার সময় ওনারা একটু ভয় পান। তাদের আস্বস্ত করে বলেন, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কিছু হবে না। আর এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। 

আজ সকাল ছয় টায় ঘুম থেকে উঠলাম। আজ ছেলে স্কুল এ কিছু টিফিন নিয়ে যাবে না। কারণ ভ্যাকসিন দেওয়া হয় যাওয়ার আধা ঘন্টা পর বাচ্চা কে যদি পেরেন্টস রা বাড়ি নিয়ে চলে যেতে চায় সেই অনুমতি ম্যাম দিয়েছিলেন মিটিং এই। তাই আমি আর ওর বাবা ওকে বেলা ১১ টা নাগাদ আনতে যাবো । সেজন্য ছেলের জন্য আজ কিছু টিফিন করি নি। আর খুব হালকা খাবার ই ওকে খাইয়ে পাঠাবো। 

আমার ছেলের নাম আর্য্য। ও সবজি খেতে খুব একটা পছন্দ করে না। তবে খাওয়ানোর আমি  কোনো ত্রুটি রাখি না। ভাত এখনো নিজে হাতে  ও খেতে চায় না। আমি ই খাইয়ে দি। ভাত মেখে ভাতের ভিতরে সবজি ঢুকিয়ে খাইয়ে দি। ও অতটা বুঝতে পারে না। আমি জানি আমার মতো অনেক মা রাই এই কাজ টা করে। না করে উপায় ও তো নেই। কিন্তু না। আজ সেইরকম কিছু ওর সাথে করি নি। বেশি চাপাচাপির খাবার ওকে দি ই নি। চাল, মসুর ডাল, মুগের ডাল আর একটা ছোট আলু দিয়ে একটু খিচুড়ি মতো করে দিয়েছিলাম। আলু ছাড়া আর কোনো সবজি ই দিই নি। ও ওটাই খেয়ে স্কুলে বেরিয়ে পড়ল। স্কুল এর গাড়ি আসে সকাল ৯ টা নাগাদ। 

আমরা স্কুলে পৌছালাম ১০: ৪০ নাগাদ। ওখানে পৌঁছে দেখি তখনও ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয় নি। তাই বেশ কিছুক্ষণ বসে থাকতে হলো। আমার ছেলে এল কেজি তে পরে। আগে নার্সারি র বাছা দের দেওয়া হবে তারপর ওদের। সুতরাং অপেক্ষা করা ছাড়া কিছু করার নেই। নার্সারির ছোট্ট ছোট্ট বাচ্ছা গুলোকে যখন ভ্যাকসিন নেওয়ার ঘরে নিয়ে যাচ্ছিল তখন ওরা খুব কান্নাকাটি করছিল। সত্যিই খুব খারাপ লাগছিল। কিন্তু কিছু করার নেই। সরকার তো ভালোর জন্যই এই কর্মসূচি পালন করছে। এই টুকু তো ওদের ভালোর জন্য সহ্য করতেই হবে। ঘন্টা খানেক পর অর্থাৎ 12 টা নাগাদ এল, কেজির ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হলো। তবে আমার ছেলে আর্য্য কান্নাকাটি করে নি। ভ্যাকসিন দেওয়া হয়ে যাওয়ার পর সামান্য একটু কেঁদেছিল। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর প্রতিটা বাছা কে আধা ঘন্টা অবজারভেশন এ রেখে দেওয়া হয়েছিল। 

rubella vaccine given mark



আমরা অর্য্যকে স্কুল থেকে বাইকে করে বাড়ি নিয়ে এলাম। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর ওর কোনো রকম প্রবলেম হয় নি। হাত পা ছুড়ে ভালোই খেলা ধুলা করছে। সুতরাং ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আর হ্যাঁ, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ওরা একটি কার্ড ও দিচ্ছেন।

এই ছিল আজ ছেলের ভ্যাকসিন নেওয়ার অভিজ্ঞতা। যা তোমাদের শেয়ার করলাম। তোমাদের ভালো লাগলে জানিও। আমি তাহলে আমার ডেলি ব্লগ ডাইরি র মতো করে আরো লিখতে উৎসাহী হব। আমার সব পোস্ট গুলি পড়ার অনুরোধ রইলো। আজ এই পর্যন্তই ফিরে আসবো আবার নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে। সকলে ভালো থাকবেন। সকলকে পৌষ পার্বণের আগাম শুভেচ্ছা রইলো।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ