তুলসী (ইংরেজি: holy basil, বা tulasī) (বৈজ্ঞানিক নাম: Ocimum Sanctum) একটি ঔষধিগাছ। তুলসী অর্থ যার তুলনা নেই। তুলসী গাছ লামিয়াসি পরিবারের অন্তর্গত একটি সুগন্ধী উদ্ভিদ। হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে এটি একটি পবিত্র উদ্ভিদ হিসাবে সমাদৃত। ব্রহ্মকৈবর্তপুরাণে তুলসীকে 'সীতাস্বরূপা', স্কন্দপুরাণে 'লক্ষীস্বরূপা', চর্কসংহিতায় 'বিষ্ণুপ্রিয়া', ঋকবেদে 'কল্যাণী' বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
তুলসী একটি ঘন শাখা প্রশাখা বিশিষ্ট ২/৩ ফুট উঁচু একটি চিরহরিৎ গুল্ম। এর মূল কাণ্ড কাষ্ঠল, পাতা ২-৪ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। পাতার কিনারা খাঁজকাটা, শাখাপ্রশাখার অগ্রভাগ হতে ৫টি পুষ্পদণ্ড বের হয় ও প্রতিটি পুষ্পদণ্ডের চারদিকে ছাতার আকৃতির মত ১০-২০ টি স্তরে ফুল থাকে। প্রতিটি স্তরে ৬টি করে ছোট ফুল ফোটে। এর পাতা, ফুল ও ফলের একটি ঝাঁঝালো গন্ধ আছে।
ভারত (Bharat - India ) ও বাংলাদেশের (Bangladesh ) প্রায় সর্বত্র দেখা যায়। হিন্দুবাড়িতে বেশি দেখা যায়, পূজায় ব্যবহার হয়। ভারতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। জুলাই, আগস্ট বা নভেম্বর, ডিসেম্বর মাসে এতে মঞ্জরী দেখা দেয়। সমতলভূমি থেকে শুরু করে হিমালয়ের পাদদেশে প্রায় ৬০০০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত এদের জন্মাতে দেখা যায়।
তুলসী গাছের নানা ঔষধি ব্যবহার রয়েছে। সর্দি, কাশি, ঠাণ্ডা লাগা ইত্যাদি নানা সমস্যায় তুলসী ব্যবহার করা হয়। এ গাছের রস কৃমি ও বায়ুনাশক। ঔষধ হিসাবে এই গাছের ব্যবহার্য অংশ হলো এর রস, পাতা এবং বীজ। ভারতে যে চার প্রকার তুলসী গাছ বেশি দেখা যায় সেগুলি হলো: বাবুই তুলসী, রামতুলসী, কৃষ্ণ-তুলসী, ও শ্বেত তুলসী।
তুলসী পাতার ব্যবহারে মানুষের কী কী উপকার হতে পারে, জানেন? বাড়িতে কেন রাখবেন তুলসী গাছ। দেখে নিন -
তুলসী পাতার ব্যবহার (Use of basil leaves)
তুলসী পাতা ব্যবহার করা খুব সহজ এবং আপনি নানা রকম ভাবে এই তুলসী পাতা ব্যবহার করতে পারেন। আসুন দেখে নেওয়া যাক কিভাবে:
I ) স্বাস্থ্যের জন্য তুলসীর উপকারিতা : (The health benefits of basil)
প্রথমে আমরা দেখবো স্বাস্থ্যের জন্যে কিভাবে এই তুলসী পাতার উপকারিতা আপনি পেয়ে থাকেন।
(১) মানসিক চাপ কমাতে (To reduce stress) :
বেশিরভাগ দেশে তুলসীকে মানসিক চাপ মুক্ত করার একটি অসাধারণ ঔষধি হিসেবে ধরা হয়। এছাড়া এই পাতায় রয়েছে এন্টি ইনফ্লেমেটরি ও রোগ প্রতিরোধ করার উপাদান যা সারাদিনের ক্লান্তি ও চাপ নিমেষের মধ্যে দূর করতে পারে (This leaf contains anti-inflammatory and disease prevention ingredients that can relieve fatigue and stress in the blink of an eye.)। তুলসী শরীরের কর্টিসোল মাত্রা কমিয়ে আনতে পারে ও অতিরিক্ত উত্তেজনা ও চাপ থেকে মুক্তি দেয় (Basil can lower cortisol levels in the body and relieve excess tension and stress)। স্বাভাবিকভাবেই মানসিক চাপ কমলে আপনি যেকোনো বিষয়ে নিখুঁতভাবে লক্ষ্য রেখে কাজ করতে পারবেন। শরীরে নানারকমের রাসায়নিক চাপ থেকেও তুলসী পাতা উপকারিতা প্রদান করে । তুলসী পাতার দ্বারা শরীরের অন্তর্নিহিত শক্তি জেগে ওঠে ও ধীরে ধীরে চাপ কমে আসে ।
(২) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাবাড়াতে (To increase immunity) :
বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে তুলসী পাতায় রয়েছে অসাধারণ রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা যেমন এস্থেমা, ফুসফুসের সমস্যা, ব্রঙ্কাইটিস, ইত্যাদি (Various scientific experiments have shown that basil leaves have remarkable ability to prevent diseases such as asthma, lung problems, bronchitis, etc.)। ঠাণ্ডা লাগলে বা সর্দি কাশি হলে বুকে কফ বসে গেলে তুলসী পাতার দ্বারা তা তরল করে খুব সহজে শরীর থেকে দূর করা যায় (If you have a cold or cough, if you have a cough in the chest, it can be easily removed from the body by diluting it with basil leaves.)। এমনকি, জ্বরের সময়ও তুলসী পাতা খুব উপকারী (Even, basil leaves are very beneficial during fever)। বর্ষাকালে এই তুলসী পাতা ও এলাচ ভালো করে জলে ফুটিয়ে সেই জল পান করলে খুব সহজেই নানারকমের রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিভিন্ন সার্জারির পর বা কোনো ক্ষতস্থানে তুলসী পাতা বেটে লাগালে তা বেশ তাড়াতড়ি শুকিয়ে ওঠে।
(৩) ওজন কমাতে ব্যবহার (Used to lose weight):
তুলসী পাতার দ্বারা রক্তে সুগারের মাত্রা ও কোলেস্টরল দুটোই রোধ করা যায় যার ফলে খুব সহজেই আপনি ওজন বৃদ্ধির হাত থেকে মুক্তি পেতে পারেন (Basil leaves can control both blood sugar levels and cholesterol so you can easily get rid of weight gain.)। তার ওপর কর্টিসোল মাত্রা কমার ফলে যখন আপনার মানসিক চাপ দূর হয়, তখন ওজন কমানো আরো সহজ হয়ে যায়। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে তুলসী দিয়ে তৈরী ২৫০ মিলিগ্রামের একটি ক্যাপসুল প্রতিদিন খাওয়ার ফলে ওবেসিটি ও লিপিড প্রোফাইল মারাত্মক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়
তুলসী দিয়ে দাঁতের জন্যে নানারকমের টুথপেস্ট ও মাউথ ওয়াশ তৈরী করা যায় কারণ এতে রয়েছে এন্টি ব্যাক্টিরিয়াল উপাদান । এছাড়াও, এতে রয়েছে এন্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান যা দাঁতের যেকোনো সমস্যা, মাড়ির সমস্যা ও মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে ।
চোখে খুব সহজেই নানারকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন চুলকানি, লাল হয়ে যাওয়া, আঞ্জনি, জল বা পিচুটি কাটা, ইত্যাদি। তুলসীতে থাকা এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদানগুলি চোখের এই যাবতীয় সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এমনকি, ছানির সমস্যা বা দৃষ্টিশক্তির সমস্যা দূর করতেও তুলসী পাতা খুব কার্যকরী।
মাথা ব্যাথা কমাতে বহু বছর ধরে কার্যকরী ভূমিকা নিয়ে আসছে তুলসী পাতা। নানারকম ভাবে তুলসী পাতার রস বা গুঁড়ো হারবাল চায় মিশিয়ে প্রতিদিন দুবার করে পান করলে মাথাব্যথা নিমেষে কমে যায়
বর্তমানে হার্টের সমস্যা ভীষণভাবে বেড়ে গেছে যা মৃত্যুরও বড় কারণ। হার্টের রোগ জন্ম দেয় হাইপারটেনশন, উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টরলের। তুলসী পাতার দ্বারা রক্তের জমাট বাধার সমস্যা দূর করা যায় ও হার্ট এটাক রোধ করা যায়। হার্টের অন্যান্য সমস্যাও সহজে রোধ করতে পারে তুলসী পাতা । কোলেস্টরল ও ফ্যাট কমাতে তুলসী পাতা খুব উপকারী ।
তবে একটা বিষয় মনে রাখবেন, এই সমস্ত সমস্যার ক্ষেত্রেই প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। (But remember one thing, consult a doctor if necessary in all these problems.)
গলা ব্যথা কমাতে তুলসীর জুড়ি মেলা ভার। শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমাতেও তুলসী পাতা বেশ উপকারী । একটি তুলসী পাতা দিয়ে ফুটিয়ে রোজ গার্গেল করলে গলা ব্যথা নিমেষে সেরে যায়।
ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করতে তুলসী পাতা দারুণ উপকারী। তুলসী পাতায় রয়েছে রেডিওপ্রটেকটিভ উপাদান যা টিউমারের কোষগুলিকে মেরে ফেলে। তুলসী পাতায় থাকা ফাইটোকেমিক্যাল যেমন রোসমারিনিক এসিড, মাইরেটিনাল, লিউটিউলিন এবং এপিজেনিন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করতে অসামান্যভাবে কার্যকরী । অগ্নাশয়ে যে টিউমার কোষ দেখা দেয় তা দূর করতেও তুলসী পাতা দারুণ উপকারী । ব্রেস্ট ক্যান্সার রোধ করতেও তুলসী পাতা দারুণ উপকারী ।
তবে একটা বিষয় মনে রাখবেন, এই সমস্ত সমস্যার ক্ষেত্রেই প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। (But remember one thing, consult a doctor if necessary in all these problems.)
টাইপ ২ ডায়বেটিসে ভোগা মানুষদের জন্যে তুলসী পাতা ইন্সুলিন উৎপাদনের কাজ করে। রক্তে সুগারের মাত্রা কমাতে প্রতিদিন খাওয়ার আগে তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যেস করুন। তুলসী একটি এন্টি ডায়বেটিক ওষধির কাজ করে । তুলসীতে থাকা স্যাপোনিন, ত্রিতারপিনিন ও ফ্ল্যাবোনয়েড ডায়বেটিস রোধ করতে দারুণ কার্যকরী।
(১১) সর্দি কাশি কমাতে (To reduce cold and cough) :
ঠাণ্ডা লেগে সর্দি ও কাশি হলে তুলসী পাতা একটি ওষুধের কাজ করে। বুকে কফ বসে গেলে সকালবেলায় রোজ এক পাত্র জলে তুলসী পাতা, আদা ও চা পাতা ভালো করে ফুটিয়ে তাতে মধু ও লেবু মিশিয়ে পান করুন। খুব শীঘ্রই আরাম পাবেন।
তুলসীতে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট ও এন্টি ব্যাক্টিরিয়াল উপাদান শরীরের ভেতর থেকে নানারকমের বিষক্রিয়া পদার্থ বের করে আনতে সাহায্য করে। এর ফলে ডিহাইড্রেশন কমে যায় ও কিডনির কার্যকারিতা সচল অবস্থায় থাকে। এর ফলে কিডনি স্টোন রোধ করা যায়।
(১৩) পেটের স্বাস্থ্য রক্ষাতে (Protects stomach health) :
পেটের জন্য তুলসী পাতার মত কোনো ওষুধ নেই। পেট ব্যাথা, অম্বল, গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি সবকিছুর বিরুধ্যে তুলসী পাতা দারুণ কার্যকরী। পেটে আলসারের বিরুধ্যেও তুলসী পাতার নানা ভূমিকা প্রমাণিত হয়েছে (১৭)। পেটে ব্যথা হলে ২০ মিলিলিটার জলে তুলসী পাতা ভালো করে ফুটিয়ে তা ১০ মিলিলিটার কমিয়ে এনে পান করুন। এতে পেট ব্যথা ও হাইপার এসিডিটি খুব সহজে কমে যায়।
বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে তুলসী পাতায় রয়েছে হেপাটোপ্রটেকটিভ উপাদান যা লিভার নষ্ট হওয়াকে খুব কার্যকরী রূপে রোধ করতে পারে । লিভারের বিষক্রিয়াকরণ রোধ করতে তুলসী পাতা বেশ উপকারী কারণ এতে রয়েছে সাইটোক্রোম পি ৪৫০। তবে লিভারের সমস্যা থাকলে ডাক্তারের সাথে একবার কথা বলে তবেই তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যেস করুন।
তবে একটা বিষয় মনে রাখবেন, এই সমস্ত সমস্যার ক্ষেত্রেই প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। (But remember one thing, consult a doctor if necessary in all these problems.)
(১৫) ফোলাভাব দূরকরতে :
বাতের ব্যথা থেকে শুরু করে হাড় বা জয়েন্টের যন্ত্রনা যেকোনো সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় তুলসী পাতা। এছাড়া শরীরে ফোলাভাব দূর করতে তুলসী পাতায় থাকা ইউক্যালিপ্টাল বেশ কার্যকরী । পেইন কিলার হিসেবেও তুলসী পাতা দারুণ ভূমিকা নিয়ে থাকে।
(১৬) রক্ত নালী সুরক্ষিত রাখতে (To protect the blood vessels) :
তুলসী এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকার ফলে মাংস পেশিতে রক্ত নালী খুব সচল ও সুরক্ষিত ভাবে রক্ত বয়ে নিয়ে যেতে পারে। এর ফলে শরীরের মাংস পেশিতে ব্যাথা হয় না। এমনকি রক্তে যাতে কোনো রকম জমাট না বাধে তার জন্যেও তুলসী দারুন কাজ করে।
II ) ত্বকের জন্য তুলসীর উপকারিতা: (The benefits of basil for the skin)
তুলসী পাতায় রয়েছে এন্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান যা ত্বকের নানা রকমের সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। আসুন দেখে নেওয়া যাক কিভাবে:
(১) ব্রণ: (Use on Acne / Pimples)
তুলসী পাতা রক্তের নানারকমের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে তা বিশুদ্ধ রাখতে সাহায্য করে কারণ এতে রয়েছে এন্টি ব্যাক্টিরিয়াল ও এন্টি ফাঙ্গাল উপাদান।
# কিভাবে ব্যবহার করবেন (How to use)?
তুলসী পাতার একটি পেস্ট বানিয়ে তা চন্দন বা গোলাপ জলের সাথে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিটের জন্যে রেখে দিন। তারপর সেটি জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া তুলসী পাতা দিয়ে চা তৈরী করে পান করলেও সমানভাবে ব্রণর বিরুদ্ধে কার্যকরী ফলাফল পাওয়া যায়।
এই প্রক্রিয়ার দ্বারা ব্ল্যাকহেডস, ব্রণর কালো ছোপ, দাগ এবং ব্রণ সবকিছু কমিয়ে আনা যায়। এই সত্যটি নানারকমের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে।
(২) ত্বকের সংক্রমণ: (Use on Skin Infection)
তুলসীতে রয়েছে এন্টি বায়োটিক উপাদান যা ত্বকের নানারকমের সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে। এর সাহায্যে ত্বকে বি বা ই কোলাই-এর মত ব্যাকটিরিয়া বা আর্থ্রাসিস সহজে মিটে যায়।
# কিভাবে ব্যবহার করবেন (How to use)?
২৫০ গ্রাম তুলসী পাতা জলে ভালো করে ফুটিয়ে তা তিল তেলের সাথে মিশিয়ে মুখে লাগালে তা ত্বকের সংক্রমণের বিরুদ্ধে দারুণ কার্যকরী ভূমিকা নেয়। এছাড়া আরেকটি উপায় হল, তুলসী পাতা বেটে কয়েক ফোটা লেবুর রসের সাথে মিশিয়ে সেটি ত্বকে লাগানো। এর ফলেও সংক্রমণ অনায়াসে কমে আসে।
তুলসী পাতায় থাকা এন্টি মাইক্রোবিয়াল ও এন্টি ফাঙ্গাল উপাদান ত্বকের সংক্রমণের বিরুদ্ধে কার্যকরী ভূমিকা নিয়ে লড়াই করে। এর ফলে নানারকমের আয়ুর্বেদিক ওষুধ তুলসী পাতা দিয়ে তৈরী হয়ে থাকে।
(৩) এক্সিমা এবং শ্বেতী: (Use On Eczema & Vitiligo)
প্রতিদিন তুলসী পাতা খেলে শ্বেতী রোগের মত সমস্যা অনায়াসে দূরে চলে যায়। শুধু তাই নয়, এর দ্বারা এক্সিমার মত রোগও বেশ ভালোভাবে সেরে ওঠে। নানা রকমের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে তুলসী পাতায় থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট এক্সিমার বিরুদ্ধে অসাধারণ ভাবে লড়াই করে । তবে ত্বকে তুলসী পাতা লাগানোর আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।
III ) চুলের জন্য তুলসীর উপকারিতা (The benefits of basil for hair):
স্বাস্থ্য ও ত্বক ছাড়াও তুলসী পাতার উপকারিতা চুলের ক্ষেত্রেও দারুণভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তুলসী পাতা চুলের গোড়া মজবুত করে ও চুলের নানারকমের সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করে। দেখে নেওয়া যাক কিভাবে:
(১) চুল পড়া বন্ধ করে: (Use To Prevents Hair Loss)
চুলের গোড়া মজবুত করে চুল পড়ার মত সমস্যা দূর করে তুলসী পাতা। এর প্রধান কারণ হল তুলসী পাতায় থাকা এন্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান।
# কিভাবে ব্যবহার করবেন (How to use)?
কয়েক ফোটা নারকেল তেলে খানিকটা তুলসী পাতা বাটা মিশিয়ে মাথার স্ক্যাল্পে লাগান। ৩০ মিনিট রেখে চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে চুলের গোড়া মজবুত হবে, স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে ও চুল পড়ার সমস্যা ধীরে ধীরে চলে যাবে (২৪)।
তুলসী পাতার এই গুণাগুণ থাকার ফলে এটিকে হারবাল ও আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে চুলের ওযুধ বলে গণ্য করা হয়।
(২) খুশকি দূর করে: (Use to Eliminates dandruff)
তুলসী পাতায় রয়েছে এমন কিছু বিশেষ উপাদান যা চুলের চার রকমের সমস্যার বিরুদ্ধে কাজ করে যার ফলে চুলে খুশকি হতে পারে। চুলে খুশকির সমস্যা হলে অবশ্যই তুলসী পাতা ব্যবহার করুন।
# কিভাবে ব্যবহার করবেন (How to use)?
আপনার প্রতিদিনের চুলের তেলের সাথে একটু তুলসী পাতার রস মিশিয়ে সেটি ভালো করে মাথার স্ক্যাল্পে লাগান। এর ফলে স্ক্যাল্পের শুষ্কতা দূর হয় ও খুশকি হওয়া রোধ করা যায়। এমনকি, মাথায় চুলকুনি হলেও তা কমে যায়।
চুলের খুশকি দূর করে, চুলকে নতুন করে উজ্জ্বলতা প্রদান করে ও রুক্ষভাব দূর করতে সাহায্য করে তুলসী পাতা ।
(৩) পাকা চুলের সমস্যা দূর করে: (Use To Immature Greying of Hair)
পাকা চুলের সমস্যা দূর করতেও দারুণ উপযোগী এই তুলসী পাতা।
# কিভাবে ব্যবহার করবেন (How to use)?
কয়েকটি তুলসী পাতা এক পাত্র জলে ভিজিয়ে সারারাত রেখে দিন। তারপর সেটি বেটে তার মধ্যে আমলকির গুঁড়ো মিশিয়ে সেটি চুলে ভালো করে গোড়া থেকে লাগিয়ে দিন। সকালে উঠে ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
এই প্রক্রিয়াটির দ্বারা খুব সহজেই পাকা চুলের সমস্যা দূর হবে। তাই নানা রকমের চুলের তেল ও শ্যাম্পুতে তুলসী পাতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তুলসীর ক্ষতিকর দিক (Know about Side Effects / Harmful side of Tulsi)
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। (This report is for informational purposes only and does not constitute a drug or treatment. Consult your doctor for detailed information.)
0 মন্তব্যসমূহ