পহেলা বৈশাখ
নববর্ষ হলো নব জীবনের প্রতীক। অতীতের ভুল ত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ সমৃদ্ধির কামনায় উদযাপিত হয় বাংলা নববর্ষ।
অনেকেই নববর্ষকে হাজার বছরের সংস্কৃতি মনে করেন।
পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশ , ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গ সহ ত্রিপুরায় মহাসমারোহে পালিত হয়। এটি একটি সার্বজনীন লোক উৎসব হিসাবে পরিচিত।
অতীতে বাংলা নববর্ষ ছিল কৃষি নির্ভর ও অর্থনীতি নির্ভর। জমিদারদের খাজনা আদায় থেকে দোকানিদের হালখাতা সব ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক হিসাব নিকষ ছিল এর প্রধান উদেশ্য।
নববর্ষের দিন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি ছুটি থাকে।
১৯৭২সালে (১৩৭৯) বাংলাদেশে জাতীয় পাবর্ণ হিসাবে ঘোষিত হয়।
অন্যদিকে ভারতবর্ষে মোঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে খাজনা আদায় হত। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের উপর নির্ভর তাই কৃষিফলনের সাথে তার কোনো মিল ছিল না। ফলে অসময়ে কৃষকদের খাজনা দিতে বাধ্য হতে হত। এর ফলে কৃষক দের অবস্থা হয়ে উঠত শোচনীয়। তাই সম্রাট আকবর নতুন বাংলা সনের প্রবতন করেন। আকবরের সিংহাসন আরোহনের সময় থেকেই এই বাঙলা সালের শুরু হয়।কৃষিকাজের সুবিধার জন্যই আকবর এই বাংলা পঞ্জিকার সূচনা করেন। তৎকালিন চিন্তাবিদ ফতে হুল্লাহ সিরাজ এই নিয়ম টি প্রবতন করেন। নতুন সন টি প্রথমে ফসলি সন নামে পরিচিত ছিল। পরে বঙ্গাব্দ নামে পরিচিত হয়।
পহেলা বৈশাখের আগের দিন অর্থাৎ চৈত্র মাসেই তালুকদার, কৃষক রা সব খাজনা মিটিয়ে দিত। আর পরদিন অর্থাৎ পয়লা বৈশাখ এর দিন জমিদার মালিক ভূস্বামীরা প্রজাদের মিষ্টি মুখ করাতেন। এবং ঐ দিন অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করতেন। সেই থেকে আজও এই রীতি চলে আসছে। এই দিন দোকানি ব্যবসায়ীদের আনন্দ ও ব্যস্ততার দিন। এই দিন গণেশ, লক্ষহীর পূজা করা হয়। লাল কাপড়ে মোড়া হাল খাতা তৈরি হয়।ইলিশ আর পান্তা খাওয়ার রেওয়াজ আছে এইদিনে। নতুন বস্ত্রও পরিধান করা হয়।
0 মন্তব্যসমূহ