হ্যাপি এন্ডিং ( অন্তিম পর্ব)
অনিশ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল তা ঠিকই...
কিন্তু মনে মনে ভাবল খুবই রহস্যময় ব্যাপারটা। কিন্তু নিশাকে তার মনে জন্মানো সন্দেহ গুলোর কথা বলল না। কথার প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে সে আবার বলল
---আমাদের কোচিং সেন্টারের কি খবর রে? বাচ্চারা কেমন পড়াশোনা করছে? আমি তো এই সপ্তাহটা বাবার সাথে এনজিওর কাজে একটু ব্যস্ত ছিলাম তাই যাওয়া হয়নি।
মুখে আলগা হাসির রেশ টেনে নিশা বললো" ওই চলছে... একাই কোনোমতে সামলাচ্ছি। ভাবছি ওদের জন্য আঁকার , নাচের ,গানের ,আবৃত্তির ক্লাসের ব্যবস্থা করব। এতকিছু কি করে সম্ভব হবে তা আমি জানি না। আসলে বাচ্চা গুলোর আগ্রহ দেখে আমারও মনে সাধ জাগে ওদের জন্য আরো কিছু করি। আমি অবশ্য ভরতনাট্যম শিখেছি। সবগুলো ইয়ার ই কমপ্লিট করেছি। কিন্তু সময় দিয়ে উঠতে পারব কি এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন? আর আঁকা, আবৃত্তি , গান এসব প্রশিক্ষণ এর জন্য উপযুক্ত শিক্ষক, শিক্ষিকারও যে দরকার তাতো আর অস্বীকার করা যায় না।
নিশার বক্তব্যে সহমত পোষণ করে অনিশ বলল-- উদ্দেশ্য টা তো ভালোই ।
অলীক অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ চিন্তাধারার কথা ভেবে নিশা বলে কিন্তু মুখে বলা যতটা সহজ কাজটা করা তত টাই কঠিন ।সেইসব শিক্ষক-শিক্ষিকাকে মাইনে দেওয়া এতকিছু...
নিশার কথা পুরোপুরি শেষ হওয়ার আগেই অনিশ তাকে আশ্বাস দিয়ে বলে , চিন্তা করিস না। সে সব ব্যবস্থা আমি করে দেবো।
তুই একটা কলেজ স্টুডেন্ট । তুই কোথা থেকে পাবি এত গুলো টাকা?
--- আগের সপ্তাহে কোচিং সেন্টারে পড়াতে গিয়ে ওখানকার কিছু ভিডিও তুলেছিলাম তোর মনে আছে?
নিশা একটু উপরের দিকে তাকিয়ে একটু ভেবে চোখ নাচিয়ে বলল
হ্যা, দেখলাম তো চারপাশ টা ঘুরে ঘুরে ভিডিও করছিলিস। বাচ্চাদের পড়া থেকে শুরু করে তাদের একসঙ্গে খেলাধুলার সুন্দর মুহূর্তগুলো, মাঠের ধান ,বড় পুকুর, খামার এসব পর্যন্তও তুলেছিস।
--- হ্যাঁ, সে যাই হোক... ফিরে এসে ওখানকার ভিডিওগুলো বাবাকে দেখিয়ে ছিলাম। প্রত্যন্ত গ্রামে ছেলেমেয়েগুলোর পড়াশোনার এত আগ্রহ থেকে বাবা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাথে কথা বলেছিলেন। তারা আমাদের কিছু অনুদান দেবে বলেছেন। আর কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকাও পাঠাবেন। এমনকি বাবা তোকে দেখতেও চেয়েছে। তোর সাথে আলাপ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। যাবি আমাদের বাড়ি? সামনেই বেশি দূর নয়। নিশা অনিশকে খুবই বিশ্বাস করে। হাতে থাকা ঘড়ি টায় টাইম টা দেখে নিয়ে বলল ---আচ্ছা চল... কিন্তু আন্টি মানে তোর মা কিছু মনে করবেন না তো?
--- আরে ধুর.... মা ই তো আমায় আইডিয়াটা দিল বাবাকে ভিডিওটা দেখাতে।বললো, বাবাদেখে খুশি হবেন। দেখবি নিশ্চয়ই তোদের কোন না কোন ভাবে সাহায্য করবে।
নিশা খুশি হয়ে টিফিন বাক্স টা ব্যাগের ভেতর ঢুকিয়ে বেঞ্চ ছেড়ে উঠল। সাথে সাথে অনিশ ও।
ক্লাস রুম থেকে বেরিয়ে কলেজের গেট পেরিয়ে নিশা চেপে বসল অনিশের বাইকে। নিশা আর অনিশের এই বন্ধুত্বটা কলেজের অনেকেই অন্য দৃষ্টিতে দেখে। তবে সকলেই চায় তাদের বন্ধুত্বটা প্রেমের দিকে প্রবাহিত হোক। হয়তো অনিশ আর নিশারও তাই ইচ্ছা। কিন্তু কেউ এখনও পর্যন্ত কাউকে বলতে পারেনি।
নিশা এই প্রথম অনিশের বাইকে চাপল। বন্ধুত্বের খাতিরে একটু-আধটু তারা একে অপরকে স্পর্শ করেছে ঠিকই । কিন্তু শরীরে তেমন কোনো শিহরণ জাগে নি আগে। কিন্তু আজ হঠাৎ বাইকের পিছনে বসে অনিশের কাধটা স্পর্শ করতেই মনের মধ্যে অদ্ভুত এক উন্মাদনা শুরু হলো নিশার। সঙ্গে সঙ্গে সে কাঁধ থেকে হাতটা নামিয়ে নিল।
--- আরে! তুই পাগল নাকি! কাধ থেকে হটাৎ হাত টা সরিয়ে নিলি যে? এখুনি একটা বিপদ ঘটে গেলে অমনি আমার নামে দোষ হবে। ভাল করে ধর আমায়। না হলে পড়ে যাবি।
মনের সংকোচ কাটিয়ে সে আবার অনিশের কাঁধ ছুলো। আজ তার মনে বারে বারে অদ্ভুত অনুভূতির সৃষ্টি হচ্ছে। নিশা মনে মনে ভাবল তবে কি নিজের অজান্তেই আমি অনিশকে মন দিয়ে বসলাম...কি জানি... তবে তো আমি মরেছি । আমার মত মেয়েকে অনিশ হয়তো একজন ভালো বন্ধু ভাবতে পারে কিন্তু কখনই সহধর্মিনী হিসাবে গ্রহণ করবেনা । অজানা একটা আতঙ্কে তার মনটা বিষণ্ণ হয়ে রইল।
--- কিরে নামবি তো! বাড়ি এসে গেছি... বাইক দাঁড় করিয়ে দিয়েছি। তোকে কি নিমন্ত্রণ করে নামাতে হবে নাকি? কোন রাজ্যে হারিয়ে গিয়েছিস বলতো?
অনিশের কথায় মনের ভাবনা থেকে বাস্তবে ফিরে আসে নিশা। খানিকটা লজ্জা পেয়ে সে বাইক থেকে নেমে দাঁড়ালো।
বাড়ির গেট খুলে অনিশ বাইক টা তাদের লাগোয়া বাগানের এক পাশে রাখল। তারপর অনিশকে অনুসরণ করে নিশা এগিয়ে চলল।
কলিং বেল টিপতেই ভিতর থেকে অনিশের মা সীমা দেবী দরজা খুললেন। যতই হোক প্রথমবার নিশা অনিশের বাড়ি এসেছে। তাই একটা জড়তা ভাব ওকে যেন আষ্টে পৃষ্টে আঁকড়ে ধরেছে। নিশা এগিয়ে গিয়ে সীমা দেবী কে প্রণাম করলো।
সীমা দেবী হাসিমুখে বললেন
---তুমি এসেছ আমি খুব খুশি হয়েছি। অনিশের মুখে তোমার নাম অনেকবার শুনেছি। তোমার মহৎ উদ্যোগের কথাও। সত্যিই ভাবা যায়না প্রত্যন্ত গ্রামে জন্মেও কত প্রতিকূলতা সাথে লড়াই করে নিজের পড়াশোনা চালাচ্ছ সেই সঙ্গে সময় বার করে গরীব ছেলে মেয়েদের পাশে দাঁড়িয়েছ। সত্যিই খুব প্রশংসনীয়।
--- মা, তুমি আমাদের ঘরে ঢুকতে দেবে? নাকি এখানেই ওর প্রশংসার ঝুলি খুলে বসবে?
---এই রে! সত্যিই আমারই ভুল। ঘরে এসো নিশা। আর আমি কি বাইরে থাকবো?
অনিশের কথায় নিশা মুচকি হাসলো।
---হ্যাঁ, তুই বরঞ্চ বাইরেই থাক... সভ্যতা, ভদ্রতা তো কিছুই শিখিস নি...
--- যা বাবা! আমি আবার কী অভদ্রতা করলাম?
--- কি করলাম মানে! নিশা প্রথমে এসেই আমায় প্রণাম করলো, আর তুই ?
---ওহঃ আচ্ছা, এই ব্যাপার! অনিশ তার মাকে একটা লম্বা প্রণাম ঠুকে হাসতে হাসতে ঘরে প্রবেশ করল ।
তোরা বসে গল্প কর। রোদ থেকে এলি। আমি আগে একটু শরবত করে দি। তারপর কিছু খাবার দেব।
-- না আন্টি, আপনাকে অত ব্যস্ত হতে হবে না । আমি বেশিক্ষণ থাকবো না। তাছাড়া লাঞ্চ টাইমে কলেজ থেকে খেয়ে বেরিয়েছি।
নিশা আর অনিশের হাতে শরবত এর গ্লাস ধরিয়ে দিয়ে তাদের পাশে এসে বসল সীমা দেবী। এক চুমুক দিয়ে ভ্রু কুঁচকে বললেন
---আচ্ছা নিশা , তোমার মুখটা আমার খুব চেনা চেনা লাগছে। আমার মনে হচ্ছে এর আগেও তোমায় কোথাও দেখেছি।
--- আরে আমিতো তোমায় অনেক বার ফোনে তোমায় ওর ফটো দেখিয়েছি। -
--- না না! এই দেখা... সেই দেখা নয়।
---তাহলে হয়তো কোন সিনেমায় খলনায়িকার চরিত্রে দেখেছো হয়তো।
ইয়ার্কি করে তার মাকে বললো অনিশ।
--এই এমন মারব না!
--- সীমা কার সাথে গল্পে মোজেছ গো? ডাইনিং রুম থেকে এতো হাসাহাসির শব্দ পাচ্ছি। অনিশ বুঝি আজ তাড়াতাড়ি কলেজ থেকে এসে পড়েছে? ঘর থেকে অনিশের বাবা প্রভাকর বাবু বলে উঠলেন।
---শুধু ঘর থেকে হাঁক দিলেই হবে... বাইরে বেরিয়ে দেখো কে এসেছে! তোমার...
সীমা দেবীকে পুরো কথাটা বলতে না দিয়েই অনিশ চোখের ইশারায় তার মা কে একটু শাসন করে বাবার উদ্দেশ্যে বলল ---বাবা নিশাকে নিয়ে এসেছি।
প্রভাকর বাবু ঘর থেকে বেরিয়ে নিশার কাজের তারিফ করলেন। এবং তার এই কর্মকান্ডের সাথে তিনিও যুক্ত হতে চান সেকথাও তাকে জানালেন। নিশার এটা ভেবে ভালো লাগল যে , এবার গ্রামের ছেলে মেয়েগুলো আর্থিক দিক থেকে ভালো ভাবে সাপোর্ট পাবে । প্রভাকর বাবু ইচ্ছা প্রকাশ করলেন আগামীকালই নিশাদের বাড়ি যাবেন এবং তাদের কোচিং সেন্টার টাও নিজের চোখে দেখে আসবেন। সীমাদেবী ও যেতে আগ্রহী প্রকাশ করলেন।
নিশা খুশি হয়ে বলল অবশ্যই আসবেন। আমার মা আপনাদের দেখে খুব খুশি হবে। আজ চলি। না হলে এই ট্রেনটা না পেলে বাড়ি ফিরতে দেরি হয়ে যাবে। পরদিনই অনিশ তার বাবা-মাকে নিয়ে নিশা দের গ্রামে গেল। সে তার মাকে আগে থেকেই বলে রেখেছিল। তাই তিনি তাদের খাওয়া-দাওয়ার বন্দোবস্ত করে রেখেছিলেন। প্রভাকর বাবু আগে কোচিং সেন্টারের বাচ্চাদের সাথে কিছুটা সময় কাটিয়ে নিশাদের বাড়ি এলেন।
প্রতিমা দেবী ঘরের জানালা দিয়েই তাদের বাড়ির দিকে আসতে দেখে বাইরে বেরিয়ে এলেন। কিন্তু তাদের সামনাসামনি দেখে মাথায় ঘোমটা ঢেকে তিনি মুখ লুকোলেন। প্রতিমা দেবীর এইরূপ আচরণে তারা খুব অবাক হলেন। এমনকি নিশাও। অনিশ আর নিশা একে অপরের দিকে চেয়ে রইলো। ততক্ষণে প্রতিমা দেবী ছুটে গিয়ে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে ভিতর থেকে ছিটকিনি দিয়েছে।
---তুমি এমন করছ কেন মা? ওনারা এসেছেন দেখে তুমি ঘর বন্ধ করে ঢুকে পড়লে কেন? তুমি ওনাদের সাথে এমন ব্যবহার কেন করছো?
প্রভাকর বাবু ও সীমা দেবী হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইল উঠোনে।
--- সীমা আমায় ক্ষমা করে দে তোরা। আমি এই মুখ দেখাতে চাইনা তোদের।কাঁদতে কাঁদতে ভেতর থেকে বললেন প্রতিমা দেবী।
প্রতিমা দেবীর গলার স্বর টা শুনেই সীমা ফিরে গেল চব্বিশ বছর আগের ঘটনায়। সীমা ও প্রভাকর এর সাথে একসাথেই কলেজে পড়তো প্রতিমা।
-- প্রতিমা তুই কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলিস? বিশ্বাস কর, আমরা তোকে অনেক খুজেছি। তোর কোন খবরই পাই নি। সে দিনের ওই মর্মান্তিক ঘটনার পর আমরা তোর খোঁজ করেছিলাম। কিছুদিন পর তোর বাড়িতেও গিয়েছিলাম । কিন্তু তারাও তোর কোনো সন্ধান দিতে পারেনি। তুই তো কোন অপরাধ করিসনি। তুই কেন মুখ লুকোবি? কতদিন পর তোকে দেখবো। প্লিজ বাইরে বেরিয়ে আয়। প্রতিমা দেবী ও সীমা দেবীর কথোপকথনে অনিশ ও নিশা হা হয়ে যায়।
প্রভাকর বাবু তাদের বলেন আমাদের সাথে প্রতিমাও একই কলেজে পড়তো। ও তো আমাদের খুব ভালো বন্ধু ছিল।
-- না, সীমা আমি এই মুখ তোদের কখনো আর দেখাবো না। আমিতো সবকিছু ছেড়ে, চেনা জায়গা ছেড়ে ,অচেনা জায়গায় আমার মেয়েকে নিয়ে সুখে আছি।
---প্লিজ, প্রতিমা একবার বেরিয়ে আয়। কতদিন তোকে দেখিনি। রিকোয়েস্ট করছি প্লিজ।
প্রভাকর বাবুর অনুরোধে প্রতিমা দেবী দরজা খুলে সীমা দেবীকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকলো।
সীমা দেবী তাকে আশ্বস্ত করে বলেন সব বুঝতে পারছি প্রতিমা। তোকে আর কিছু বলতে হবেনা । আমি এসেছি তোর মেয়েকে আমার পুত্রবধূ করে নিয়ে যেতে।
--- না না , তা হয় না। আমার মেয়ে যে অবৈধ সন্তান। ওর কোনো পিতৃপরিচয় নেই।
নিশা হতাশ হয়ে তার মাকে বলল তবে যে তুমি বলেছিলে আমার বাবা মারা গেছে। সে মৃত। কাদঁতে কাঁদতে প্রতিমা দেবী ভেঙে পড়লেন এবং বললেন মিথ্যে বলেছিলাম। সব গল্প কথা বলেছিলাম। আমার বাড়ি থেকে কেউই চাইত না আমি কলেজে গিয়ে পড়াশোনা করি। আমার সৎ মা তো আমায় তড়িঘড়ি পাত্রস্থ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল। কিন্তু আমি জোর করেই কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। টিউশন করেই নিজের পড়াশোনা চালাতাম। একদিন রোজকার মতো কলেজ থেকে ফিরে টিউশন পড়িয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। শীতকালের রাত। রাস্তাঘাট ছিল শুনশান। একটা অজানা আতঙ্কে গাও ছমছম করছিল । একটু কাঁপা কাঁপা স্বরে প্রতিমা দেবী আবার বলতে থাকে আমি দ্রুত বাড়ির দিকে পা বাড়াচ্ছিলাম। কিন্তু হঠাৎই কিছু দুষ্কৃতীদের কবলে পড়ে আমি ধর্ষিত হই সে রাতে। কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে সেই মর্মান্তিক ঘটনার কথা কাউকে বলতে পারিনি । কিন্তু কয়েকমাস পরেই আমি বুঝতে পারি আমি অন্তঃসত্ত্বা। আমার এই রকম অবস্থার কথা জানতে পাড়লে পাড়ার লোকেরা আমাদের পরিবারের নামে দুর্নাম ছড়াবে, সেই ভয়ে আমি একদিন সব ছাড়লাম । কিন্তু অবৈধ গর্ভস্থ সন্তানটিকে ছাড়তে চাই নি। বাড়ি থেকে, চেনা শহর থেকে অনেক দূরে এসে তোকে জন্ম দিয়েছি। মানুষ করেছি নিজের হাতে। তুই আমার একমাত্র অবলম্বন । নিশা আমায় ভুল বুঝে নিজে কষ্ট পাস না। আমিই তোর বাবা আমিই তোর মা । সবটুকু স্নেহ, ভালোবাসা দিয়েই তোকে এতদিন আগলে রেখেছি। সবকিছু শুনে নিশা তার মাকে বলে তোমায় ভুল বুঝব কেন মা? তুমি তো আমায় পৃথিবীর আলো দেখিয়েছ। আমি তোমায় একটুও ভুল বুঝি নি মা। তুমি তো আমায় গর্ভেই নষ্ট করে দাও নি। কিংবা আমার জন্মের পর আমায় ডাস্টবিনে ফেলে রেখেও আসনি । তুমি তো আমার গর্ব মা ।আমি তোমায় একটুও ভুল বুঝিনি ।আমি এতদিন যেমন তোমার কাছে ছিলাম তেমনই তোমার স্নেহের ছায়ায় থাকবো সারা জীবন। তোমাকে এভাবেই আগলে বেঁচে থাকতে চাই ।
--- তা তো বললে তো হবে না নিশা মা... তাহলে যে আমার অনিশ টা বড় একা হয়ে যাবে।
প্রভাকর বাবুর কথায় অনিশ ও নিশা দুজনেই লজ্জায় মাথা নোয়ালো।
প্রতিমা দেবী নিশাকে আদেশ দিলেন--- নিশা ! শ্বশুরমশাই, শাশুড়ি মাকে প্রণাম কর । আর ওনাদের ঘরে নিয়ে যা।
চোখের জল মুছে প্রতিমা দেবী মিষ্টি আনতে রান্না ঘরের দিকে পা বাড়ালো।
সমাপ্ত
( বন্ধুরা হ্যাপি এন্ডিং গল্পটা কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না। )
ছবি : সংগৃহীত
0 মন্তব্যসমূহ