আজ 28 th june 2025
বর্ষা এসেছে, মেঘের আড়ালে ছোঁয়া মাটি থেকে ভেসে আসে মাটির রস ঘ্রাণ, বাতাসে ভেসে বেড়ায় মন-ভোলানো আর্দ্রতা। তবে মুনসুনের এই রোমান্টিক মুহূর্তগুলো অনেক সময় আমাদের মনকে বিষণ্ণ করে তুলতে পারে—হাল্কা জ্বর, মাথাব্যথা, আর অনেকে আবার সিটফলের মতো বিষণ্ণতায় ভুগতে পারে। তাই বর্ষার এই দিনগুলোতে নিজেকে ভাল রাখা খুবই জরুরি। চলুন জেনে নিই ৭টি সহজ এবং প্রাকৃতিক উপায় যেগুলো আপনাকে বর্ষার মৌসুমে স্বস্তি দেবে:
১. আর্দ্রতার বিরুদ্ধে সঠিক পারিপার্শ্বিকতা
বর্ষাকালে ঘরের বাতাস আর্দ্র হয়ে যায়, যা ফাঙ্গাসের বৃদ্ধি এবং শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি করতে পারে।
হিউমিডিটি কন্ট্রোলার ব্যবহার করুন: ঘরে ধুলো-আবর্জনা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।
ঘরবাতি লাগান: দিনে অন্তত ৩০ মিনিট সূর্যরশ্মি দেওয়ার চেষ্টা করুন, যাতে ঘরের আর্দ্রতা কমে এবং ভেন্টিলেশন ঠিক থাকে।
২. হালকা ব্যায়াম ও ইয়োগা
একটুও অলসতা বর্ষায় বিরাজ করুক না—শরীরচর্চা জীবনে রাখলে মন ভালো থাকবে।
সুর্যনমস্কার: প্রতিদিন সকালের সূর্য ওঠার পর ৫–৭ বারের সুর্যনমস্কার করুন।
ডায়াফ্রাগম্যাটিক ব্রীথিং: গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন মনকে স্থির করে, মানসিক চাপ কমায়।
৩. সুষম খাদ্যাভ্যাস
বর্ষায় শরীর দূষিত উপাদান অপসারণে বেশি শক্তি ব্যয় করে। তাই আয়রন, ভিটামিন–সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার রাখুন।
গ্রীন টি কিংবা আদা–লেবুর চা: শীতলতা ও জমে থাকা শ্লেষ্মা দূর করে, মনকে সতেজ রাখে।
ফ্লেব্রোন ভরপুর ফল: আমলা, আঙ্গুর, হলুদ-চিড় ফল, কিংবা ডেথফ্রুট জাতীয় ফল আপনি খাবেন।
৪. প্রাকৃতিক হোমমেড রিলাক্সিং টোনিক
বর্ষায় নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস থেকে দূরে থাকতে ইমিউনিটি বুস্ট করতে পারে নিম্নলিখিত সহজ রেসিপি—
গরম আদা–মধু লেবুর টনিক: ১ চা চামচ আদার রস, ১ চা চামচ মধু, ১ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে দিনে দুইবার পান করুন।
তুলসী পাতা ও কালোজিরার কাশিপাতা: Tulsi–নিম–গোটা পাতা ফুটিয়ে সেই পানীয়টি সকাল-বিকেলে পান করলে শরীর বিশ্রাম পায়।
৫. ডিজিটাল ডিটক্স
মেঘমালার দিনে স্ক্রিনের নীল আলো চোখ ও মস্তিষ্ককে ক্লান্ত করে।
এক ঘণ্টার রুল: প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা ফোন, টিভি, ল্যাপটপ থেকে দূরে থাকুন।
বই পড়া বা সৃজনশীল লেখা: আপনার প্রিয় বাংলা উপন্যাস অথবা কবিতা পড়ুন; আলো কম হলেও মন খুব শান্ত থাকে।
৬. সৃজনশীল হবি এবং মাইন্ডফুলনেস
বর্ষায় ভিজে রাস্তার রোদ-ভরা গন্ধ, সেই অনুভূতি ক্যানভাসে আঁকা বা নোটবুকে লিখে রাখুন।
ডায়েরি লেখা: প্রতিদিন সকালে বা রাতে বর্ষার অনুভূতি, স্বপ্ন, কিংবা দিনটিতে মনের অবস্থা লিখুন।
মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন: ১০ মিনিট চোখ বন্ধ করে বর্ষার শব্দ ও গন্ধের দিকে একাগ্র করুন—মনে শান্তি আসবে।
৭. সামাজিক সংযোগ ও সমর্থন
কঠিন মনোবাস্তবতায় বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সাথে কথা বলুন—কোনো গোপন চাপ তো নেই?
ভার্চুয়াল কফি গেট–টুগেদার: মেসেঞ্জারে ভিডিও কল করে সকালের চা বা বিকেলের হালকা নাশতা—মনে উজ্জীবন যোগায়।
অনলাইন সাপোর্ট গ্রুপ: মানসিক চাপ কমাতে ক্যামফ্রিয়েন্ড, থেরাপি বা ম্যাসেঞ্জমেণ্ট গ্রুপের সাহায্য নিন।
উপসংহার
বর্ষাকালের আর্দ্রতা, বিষণ্ণতা আর ফাঙ্গাস—এই সবই আমাদের শরীর ও মনের ওপর চাপ ফেলে। তাই উপরোক্ত সিম্পল সেলফ কেয়ার টিপসগুলো মেনে চললে বর্ষার অনুভূতিতে বর্ষণ হবে শুধু রোমান্স আর রিফ্রেশমেন্ট, বিষণ্ণতা নয়। এই মৌসুমে নিজের জন্য একটু সময় বের করুন, হালকা ব্যায়াম করুন, স্বাস্থ্যকর খাবার খান, আর প্রযুক্তি থেকে বিরতি নিয়ে প্রাকৃতিক ও সামাজিক সংযোগের আনন্দ উপভোগ করুন।
# বর্ষাকাল,
#মন ভালো রাখুন
# সেলফ কেয়ার
#বর্ষা
# ডিজিটাল ডিটক্স,
#হোমমেড টনিক
# মাইন্ডফুলনেস
0 মন্তব্যসমূহ