নীল ষষ্ঠী পুজোর সময় , প্রচলিত ব্রতকথা, ও ব্রতের ফল সম্পর্কে আলোচনা
নীল ষষ্ঠী ব্রতের সময় বা কাল :
চৈত্র মাসের সংক্রান্তির দিন এই ব্রত করতে হয়।
ব্রতের দ্রব্য:
বেলপাতা, বেল, ডাব, শসা, আতপ চাল, ফল। সংক্রান্তির দিন সারাদিন উপোস করে সন্ধে বেলা শিবের মাথায় ডাবের জল ঢেলে শিবকে প্রনাম করে জল খেতে হয়।
নীল ষষ্ঠীর প্রচলিত কাহিনী:
এক গ্রামে এক বামুন বামুনি বাস করতো। তাদের ছেলে পুলে হলেও বাঁচত না। তারা দুজনে পরামর্শ করে একদিন তীর্থের উদ্যেশে বেরিয়ে পড়লো। অতঃপর তারা যখন সরযূ নদীর তীরে এসে পৌঁছাল বামুন তখন বামুনিকে বললো -" চল এই জলে ডুবেই আমাদের জীবন শেষ করি, বংশ রক্ষার জন্য যখন একটি ছেলেও রইলো না , তখন বেঁচে থেকে আর ফল কি? " এইরূপ বলে তারা নদীতে নামতে থাকলো। এমন সময় মা ষষ্ঠী এক বুড়ির রূপ ধরে এসে বললেন, " ওগো বাচারা তোমরা আর বেশি দূর যেও না , আরো দূরে গেলে ডুবে মারা যাবে। " তাঁকে দেখতে পেয়ে বামুন আর বামুনি তাদের দুঃখের কথা বললেন। সব শুনে তিনি বললেন, দোষ তো তোমাদেরই। সদজ্জাত শিশুর কান্না শুনে অহংকারে মত্ত হয়ে তোমরা সর্বদা বলতে, আপদ গেলে বাঁচি। কখনো বলেছ কি? মা ষষ্ঠীর দান বেঁচে থাক, সুস্থ থাক। তাই আজ তোমাদের এই দুর্গতি। এক কথা শুনে বামুনি অবাক হয়ে বুড়ির চরণ আগলে বলেন, কে তুমি? প্রত্যুত্তরে উত্তর এলো আমি মা ষষ্ঠী। তিনি আদেশ দিলেন চৈত্র মাসে সন্ন্যাস করতে ও শিব পূজা করতে। সংক্রান্তির আগের দিন উপোস থেকে নিলাবতীর পুজো করে নীল কন্ঠ শিবের ঘরে বাতি জেলে দিতে। তারপর যেন তাকে প্রনাম করে তারপর জল খায়। একে বলে নীল ষষ্ঠী।
বামুন আর বামুনি নীলের দিন ভক্তি ভোরে পূজা করলেন। নীল ষষ্ঠী ব্রত করলেন। কিছুদিন পরেই মা ষষ্ঠীর দয়ায় বামুনি র ছেলে হয়। মা ষষ্ঠীর কথা মতো সেই ছেলের কোনো অনিষ্ট হলো না। বামুনির এই ব্রত চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল। এবং সকলে এই ব্রত পালন করতে শুরু করলো।
ব্রতের ফলাফল : এই ব্রত করলে সন্তানের অমঙ্গল হয় না।
ছবি : সংগৃহিত
তথ্যসূত্রঃ মেয়েদের ব্রত কথা।
0 মন্তব্যসমূহ