রথযাত্রা: স্মৃতির আবেগে মোড়ানো এক বিকেল

 


রথযাত্রা: স্মৃতির আবেগে মোড়ানো এক বিকেল

গরমের ছুটির শেষে যখন বর্ষা পা ফেলে গ্রামবাংলার মাটিতে, তখনই যেন মনের মধ্যে বেজে ওঠে এক পুরনো সুর—রথযাত্রা আসছে! ছোটবেলায় রথ মানেই ছিল একরাশ আনন্দ, এক বিকেলের হুল্লোড়, আর এক গোপন প্রতীক্ষা।

বাড়ির পাশে মণ্ডপে গড়ছে কাঠের রথ। বাঁশে, কাঠে, কাপড়ে মিলেমিশে এক বিশাল সৌন্দর্যের সৃষ্টি। দুপুরবেলা স্কুল ছুটি থাকত — আর আমরা দল বেঁধে ছুটে যেতাম রথ দেখতে। তখন তো জানতাম না জগন্নাথ কে, সুভদ্রা বা বলরাম কারা — শুধু জানতাম, এ দিনটায় ঠাকুর ঘর ছেড়ে বের হন আমাদের মাঝখানে আসতে।


রথের হাটের গল্প

রথের হাট ছিল আমাদের কাছে স্বর্গ! কাঠের বাঁশি, রঙিন ফু দোলা, মাটির হাতির পুতুল, জিলিপি আর চনাচুরের গন্ধে ম-ম করত গোটা মাঠ। হাত পেতে পয়সা চাইতাম—“মা দাও না, ওই বাঁশিটা কিনব।” বিকেলে রথ টানতে গিয়েও মনটা থাকত হাটে ফিরে গিয়ে আরেকবার চুড়ি কেনার আশায়।

 রথ টানার অনুভব

রশি টানার সময় মনে হত, আমি যেন জগন্নাথকে নিজের হাতে টেনে নিচ্ছি! মাটিতে ধুলো, গায়ে ঘাম, তবুও একটা অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করত মনে। জগন্নাথের চোখদুটো যেন চেয়ে থাকত আমাদের দিকেই—“এসো, টানো আমায়, আমি তোমাদেরই তো।”

#রথযাত্রা#রথেরবিকেল

আর এখন?

এখন আর সেই মাঠ নেই, নেই হাট। বাঁশিও বাজে না। রথের দিনটা এখন ফেসবুক পোস্ট, ইনস্টাগ্রাম রিল আর ইউটিউব লাইভে বন্দি। তবু রথ এলেই মনটা উড়ে যায় ছোট্ট আমিটাতে — যে কিনা একটা রঙিন ফু দোলা নিয়ে ঘুরে বেড়াত মাঠের কোণায়, আর ভাবত—আজ জগন্নাথ শুধুই আমার।


#রথেরমেলা

#জয়জগন্নাথ


রথ যাত্রা কখনও শুধুই উৎসব নয়, ওটা একবার শৈশব ছুঁয়ে ফিরে আসা।"



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ